বিশ্বকাপ দল চূড়ান্তের সিরিজ
এমনিতে সিরিজটির গুরুত্ব তেমন একটা থাকত না। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ বেশ কয়েকজন বিশ্রামে। নিউজিল্যান্ডও তাদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বেশিরভাগ খেলোয়াড় আনেনি বাংলাদেশে। তবু সিরিজটির গুরুত্ব বাড়ছে কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কারণে।
বিশ্বকাপ শুরুর আর দিন পনেরো বাকি থাকতেও যে তিনটি দল স্কোয়াড জানায়নি, বাংলাদেশ তার একটি। কোন ১৫ জনকে নিয়ে ভারতে যাবে সেটা নিয়েই তো কত দ্বিধা। অবশ্য বেশিরভাগ জায়গা চূড়ান্তই, কিছু জায়গায় আছে প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার মিশনও তিন ম্যাচের এই সিরিজ।
আইসিসি এবার সুযোগ দেওয়ায় বিশ্বকাপের দল দিতে দেরি করছে বাংলাদেশ। ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দল দেওয়ার সময়সীমা আছে, তবে ২৭ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়বেন সাকিব আল হাসানরা, তার আগে নিশ্চিতভাবেই জানা যাবে স্কোয়াড। তাতে বড় ভূমিকা রাখবে এই সিরিজ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের প্রথম ওয়ানডে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অবশ্য বলছে ঠিক সময়ে হয়ত খেলা শুরু নাও হতে পারে। মৌসুমি বায়ুর কারণে হতে পারে ঝড়ো বৃষ্টি।
খেলা হওয়া কয়েকজনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মধ্যে শুরুতেই আসবে দুই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও তামিম ইকবালের নাম। দুইজনের প্রেক্ষাপট অবশ্য ভিন্ন। মাহমুদউল্লাহ আছেন দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ে। এই সিরিজে কিছু একটা করতে পারলে বিশ্বকাপের টিকেট পেয়ে যেতে পারে। সেজন্য খেলা হতে হবে।
নেতৃত্ব ছেড়ে দীর্ঘ দিন পর ফেরা তামিম ইকবালের পরীক্ষা ভিন্ন। তাকে দেখাতে হবে তিনি আছেন শতভাগ ফিট, খেলতে পারছেন সাবলীল ছন্দে। ফিট থাকলেই তিনি থাকবেন বিশ্বকাপে।
ফেরার লড়াইয়ে আছেন আরেক অভিজ্ঞ সৌম্য সরকার। মূলত অন্যদের ব্যর্থতায় ফের জাতীয় দলে আসা সৌম্য অনেকদিন ধরেই ছন্দহীন, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছিলেন মলিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে এখনো তার অনেক কিছু দেওয়ার আছে সেটার একটা প্রমাণ তাকে দিতে হবে।
এছাড়াও তৃতীয় ওপেনার কে হবেন? জাকির হাসান, তানজিদ হাসান, এনামুল হক বিজয়দের নিজেদের দাবিটাও জানানোর মিশন। পঞ্চম পেসার হিসেবে কে বিশ্বকাপে যাবেন খালেদ আহমেদ নাকি তানজিম হাসান সাকিব এই প্রশ্নের সুরাহাও করতে চায় বাংলাদেশ দল।
এই সিরিজের অধিনায়ক লিটন দাস আছেন ছন্দহীন, বিশ্বকাপের আগে তার ছন্দ ফিরে পাওয়ার ব্যাপারও থাকছে।
নিউজিল্যান্ডের অবশ্য এত হ্যাপা নেই। তারা দল ঘোষণা করেছে ১১ তারিখ। ৬ ক্রিকেটার ছাড়া বিশ্বকাপ দলের আর কেউ আসেননি বাংলাদেশে। মূলত ব্যাটাররাই অনুপস্থিত। লকি ফার্গুসন জানান ব্যাকআপ খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখে প্রস্তুত রাখার সুযোগ পাবেন তারা।
বিশ্বকাপকে ঘিরে সমস্ত ফোকাস থাকতে জেতা-হারার ব্যাপার যে আড়ালে, তা নয়। লিটন যেমন জানালেন, দেশের হয়ে প্রতিটি ম্যাচ জেতাই একটা গর্বের ব্যাপার। সেই জায়গা থেকে নিজেদের তাড়না দেবেন তারা। ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশে ওয়ানডে জিততে না পারা কিউইরা চাইছে এই পরিসংখ্যান বদলাতে। সব মিলিয়ে কিছুটা কম উত্তাপে, অনেকটা হিসাব নিকাশের লড়াই দেখা যেতে পারে বাইশ গজে।
Comments