এশিয়া কাপ ২০২৩

সাকিব বললেন, 'বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভয়ঙ্কর একটি দল হবে'

ছবি: এএফপি

১১ বছর পর এশিয়া কাপে ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। এবার ফাইনালে উঠতে না পারলেও রোমাঞ্চকর জয় দিয়ে আসরটি শেষ করল তারা। এমন ফল কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করল সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হতে থাকা টাইগারদের মনে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কথাতেও মিলল সেটার প্রমাণ। ম্যাচশেষে তিনি বললেন, সবাই ফিট থাকলে আগামী বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে একটি ভয়ঙ্কর দল হিসেবে দেখা যাবে।

শুক্রবার কলম্বোতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। তাদের ছুঁড়ে দেওয়া ২৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুবমান গিলের সেঞ্চুরির পরও ভারত গুটিয়ে যায় ২৫৯ রানে। ১ বল বাকি থাকতে লাল-সবুজদের জয়ে সামনে থেকে ভূমিকা রাখেন সাকিব। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। ব্যাট হাতে তিনি খেলেন ৮৫ বলে ৮০ রানের ইনিংস। মারেন ৬ চার ও ৩ ছক্কা। বল হাতে ১০ ওভারে দুটি মেডেনসহ ৪৩ রানে পান ১ উইকেট।

সাকিবের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে ফিফটির দেখা পান তাওহিদ হৃদয়। বোলিংয়ে অভিষিক্ত ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব কাড়েন নজর। শুরুতেই ২ উইকেট তুলে বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করেন তিনি। শেষদিকে অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান শিকার করেন ৩ উইকেট। তবে আলাদা করে বলতে হয় নাসুম আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসানের কথা। মূলত বাঁহাতি স্পিনার হলেও নাসুম আটে নেমে ৪৫ বলে ৪৪ রান করেন। শেখ মেহেদী নয়ে নেমে ২৩ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এই দুজনের প্রচেষ্টায় লড়াইয়ের পুঁজি পায় টাইগাররা। স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। গিলেরটিসহ ৫০ রানে নেন ২ উইকেট।

ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাকিব জানান, বিশ্বকাপের জন্য সঠিক সমন্বয়ের দল রয়েছে বাংলাদেশের। এখন প্রত্যাশা কেবল সবার ফিট থাকার, 'আমি মনে করি, আমাদের খুব ভালো একটি দল আছে। এশিয়া কাপে চলাকালে অনেক চোট সমস্যা দেখা গেছে। অনেক খেলোয়াড় দলে ঢুকেছে, আবার বেরিয়ে গেছে যা আমাদের মোটেও সাহায্য করেনি। তবে আশা করছি, যদি সবাই পুরো ফিট থাকে, তাহলে বিশ্বকাপে আমরা ভয়ঙ্কর একটি দল হব।'

ভারতের বিপক্ষে চার স্পিনার ও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজানোর পরিকল্পনা প্রসঙ্গে দেশসেরা ক্রিকেটারের ভাষ্য, 'আমরা তাদেরকে সুযোগ দিতে চেয়েছি যারা খুব বেশি খেলেনি। আমরা দেখতে চেয়েছিলাম যে কোন কম্বিনেশনটা সঠিক হয় আমাদের জন্য। গত কয়েকটি ম্যাচ দেখার পর মনে হয়েছে যে স্পিনাররা এই উইকেটে বড় একটি ভূমিকা রাখবে। তাই একাদশে বেশি স্পিনার নেওয়া হয়। সৌভাগ্যক্রমে সেটা কাজে দিয়েছে।'

নিজের ইনিংস নিয়ে সাকিবের কণ্ঠে শোনা যায় তৃপ্তি, 'আমি এই এশিয়া কাপে তেমন ভালো ব্যাটিং করিনি। আজ যখন আমি আগেভাগে ক্রিজে গিয়েছিলাম, আমি ভেবেছি যে আমার হাতে অনেক সময় আছে ব্যাটিংয়ের জন্য। প্রথম বাউন্ডারিটি মারার সঙ্গে সঙ্গে আমি ভালো অনুভব করতে থাকি। তখন থেকে আমার মনে হয়, আমি ভালো ব্যাটিং করেছি। এটা একটা চ্যালেঞ্জিং উইকেট ছিল। বল পুরনো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিং করা অবশ্য সহজ হয়ে পড়ে। তবে স্পিনের বিপক্ষে খেলাটা কঠিন ছিল।'

ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পাশাপাশি ডেথ ওভারে হাত ঘোরানোর কঠিন কাজ করেন শেখ মেহেদী। তার বোলিং নিয়ে প্রশংসায় মাতেন বাংলাদেশের দলনেতা, 'যখন সে বল করছিল, তখন বল করার জন্য সময়টা ছিল কঠিন। সে আক্রমণে গিয়ে আমাদের ব্রেক-থ্রু দেয়। আমরা সাধারণত অফ স্পিনারের মাধ্যমে ডানহাতি ব্যাটারের উইকেট পাই না। কিন্তু সে আমাদের উইকেট এনে দেয় যা সত্যিই চিত্তাকর্ষক ছিল। শেষদিকে সে একটানা ৫ ওভার (মূলত ৪ ওভার) করে যা সহজ ছিল না।'

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার নেমেই ঝলক দেখান তানজিম। তিনিও পান 'বড়' সাকিবের সাধুবাদ, 'যেভাবে নতুন বলে বোলিং করেছে এবং দুটি উইকেট নিয়েছে, সেকারণে সাকিবকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। সে আমাদেরকে (জেতার) বিশ্বাস দিয়েছে যা আমাদের দরকার ছিল। ওই অবস্থান থেকে আমরা খুব ভালো ফিল্ডিংও করেছি। তো আজ অনেক ইতিবাচক দিক ছিল আমাদের।'

Comments

The Daily Star  | English

If consensus commission fails, it will be a collective failure: Ali Riaz

He made the remarks in his opening statement during the 14th day of the second phase of dialogues with political parties

34m ago