আইপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়লেন জয়সওয়াল
শার্দুল ঠাকুরের লেংথ ডেলিভারি ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়েই আকাশে হাত ছুঁড়লেন যশস্বী জয়সওয়াল। তার এমন উল্লাসের কারণ হলো রেকর্ডের খাতায় নিজের নাম তোলা। ওই বলে সিঙ্গেল নেওয়ার মাধ্যমে নতুন কীর্তি গড়লেন রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি এখন তার।
বৃহস্পতিবার ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয়েছে রাজস্থান। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করছে তারা। দলকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে দেওয়া ২১ বছর বয়সী জয়সওয়াল উঠে গেছেন চূড়ায়। প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ১৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেছেন তিনি। রেকর্ড গড়ার পথে তিনি মেরেছেন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসর আইপিএলে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড এতদিন যৌথভাবে ছিল দুজনের দখলে। তারা হলেন লোকেশ রাহুল ও প্যাট কামিন্স। দুজনই ব্যক্তিগত মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন ১৪ বলে। এক বল কম খেলার ব্যবধানে তাদেরকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠেছেন ভারতের ব্যাটার জয়সওয়াল।
ভারতের রাহুল ২০১৮ সালে তৎকালীন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের (বর্তমানে পাঞ্জাব কিংস) হয়ে ১৪ বলে ফিফটি করেছিলেন। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল তৎকালীন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (বর্তমানে দিল্লি ক্যাপিটালস)। অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স আইপিএলের গত আসরে কলকাতার হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে তার পাশে বসেন।
সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন জয়সওয়াল। সমান ১২ বলে ফিফটি করে তার উপরে আছেন তিনজন। তারা হলেন জয়সওয়ালেরই স্বদেশি যুবরাজ সিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ও আফগানিস্তানের হজরতউল্লাহ জাজাই। সবার আগে এই নজির স্থাপন করেছিলেন যুবরাজ, ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১২ বলে হাফসেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটার তিনি। গেইল ও জাজাইয়ের ফিফটি এসেছে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগে। ১৩ বলে পঞ্চাশ করে করে জয়সওয়ালের পাশে আছেন ইংল্যান্ডের মার্কাস ট্রেসকোথিক, অস্ট্রিয়ার মির্জা আহসান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনিল নারাইন।
রাজস্থানের ইনিংসের মাত্র তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই রেকর্ড বইতে নিজের নাম ওঠান জয়সওয়াল। তখন দলের রান ১ উইকেটে ৫৪, যেখানে তার একারই অবদান ৫০! ইনিংসের একদম প্রথম বল থেকেই বিধ্বংসী ঢঙে খেলছেন তিনি।
কলকাতার অধিনায়ক নিতিশ রানা করতে গিয়েছিলেন প্রথম ওভার। এই স্পিনারকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে স্বাগত জানান জয়সওয়াল। পরের বলে ফের ছক্কা। এবার স্কয়ার দিয়ে সুইপ করে বল সীমানার বাইরে পাঠান তিনি। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আসে টানা দুটি চার। অর্থাৎ ইনিংসের প্রথম চার বলেই বাউন্ডারি মারেন জয়সওয়াল। পঞ্চম বলে ডাবল নেওয়ার পর শেষ বলে পয়েন্ট দিয়ে আবার চার মারেন তিনি। সব মিলিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ২৬ রান।
ডানহাতি পেসার হার্শিত রানার করা পরের ওভারের চতুর্থ বলে আরেক ওপেনার জস বাটলার কাটা পড়েন রানআউটে। আন্দ্রে রাসেল সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দিলে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এরপর স্ট্রাইক পান জয়সওয়াল। মাত্রই উইকেট হারালেও কোনো স্নায়ুচাপে ভুগতে দেখা যায়নি তাকে। পঞ্চম বলে ওভারথ্রোতে চার পাওয়ার পর ছক্কা মেরে ওভার শেষ করেন তিনি। এর আগে ওভারের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নেন তিনি। ফলে ৯ বলে তার সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭।
এরপর শার্দুল আক্রমণে এলে প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয়সওয়ালকে স্ট্রাইক দেন রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। প্রতিপক্ষের পেসারকে পরপর তিনটি চার মেরে ৪৯ রানে পৌঁছে যান তিনি। এরপর সিঙ্গেল নিয়ে গড়ে ফেলেন রেকর্ড। এই পথে একটি ডট বলও খেলেননি জয়সওয়াল।
Comments