কখনোই ভাবিনি পাঁচটি ছক্কা হাঁকাতে পারব: রিংকু
শেষ ৫ বলে ২৮ রানের ভীষণ কঠিন সমীকরণ মেলাতে প্রতিটি বলই মারার পরিকল্পনা ছিল রিংকু সিংয়ের। তবে টানা পাঁচটি ছক্কা হাঁকানোর কথা কখনোই ভাবনায় আসনি এই বাঁহাতি ব্যাটারের। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে স্মরণীয় জয় পাইয়ে দিয়ে অধিনায়ক নিতিশ রানার উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও পেলেন তিনি।
আইপিএলে গতকাল রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৩ উইকেটে জেতে কলকাতা। আসরের শিরোপাধারী গুজরাট টাইটান্সের ছুঁড়ে দেওয়া ২০৫ রানের বড় লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় ম্যাচের শেষ বলে। তাদের রোমাঞ্চকর জয় ছিনিয়ে আনার নায়ক ২৫ বছর বয়সী রিংকু। তিনি ২১ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন।
গুজরাটের অধিনায়ক রশিদ খানের হ্যাটট্রিকে ১৭তম ওভারে ১৫৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে কলকাতা। এরপর শেষ ৮ বলে তাদের ৩৯ রান দরকার ছিল। ফলে ম্যাচের পাল্লা হেলে ছিল গুজরাটের দিকে। কিন্তু তাদেরকে বিস্ময়ের সাগরে ডুবিয়ে কলকাতা তোলে ৪১ রান! সেখানে রিংকুই আনেন ৭ বলে ৪০ রান! তার তাণ্ডবের শুরুটা হয় ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে জশ লিটলকে যথাক্রমে ছক্কা ও চার মেরে। এরপর ইয়াশ দয়ালকে চরম আক্ষেপে পুড়তে বাধ্য করেন তিনি।
২০তম ওভারে উমেশ যাদব প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন রিংকুকে। বাঁহাতি পেসার দয়ালের টানা তিনটি ফুল টস ডেলিভারি ছক্কায় ওড়ান তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরের পরের দুটি বল তিনি সীমানাছাড়া করেন লং অন দিয়ে। অবধারিতভাবেই মাঠের মধ্যে তাকে ঘিরে উল্লাসে মেতে ওঠেন কলকাতার খেলোয়াড়রা।
বেশি কিছু না ভেবে প্রতিটি বলই মারার পরিকল্পনা ছিল রিংকুর। ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'সত্যি বলতে, আমি বেশি কিছু ভাবছিলাম না। কেবল প্রতিটি বলেই সাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমি কখনোই ভাবিনি যে আমি পাঁচটি ছক্কা হাঁকাতে পারব। আমি স্রেফ মেরে গিয়েছি। আমার (নিজের ওপর) বিশ্বাস ছিল। আর আমরা ম্যাচটা জিতেছি।'
নিজের ওপর আস্থা রেখেছিলেন ম্যাচসেরা হওয়া উত্তর প্রদেশের এই ব্যাটার, 'আমার মনের ভেতরে বিশ্বাস ছিল যে আমি এটা করতে পারব কারণ, আমি গত বছর লখনউয়ের (সুপার জায়ান্টস) বিপক্ষে (একই রকমের) একটি ইনিংস খেলেছিলাম। আর আজ (রোববার) সেই বিশ্বাস থেকে আমি করে দেখিয়েছি। রানা ভাই আমাকে বলেছিলেন, "বিশ্বাস রাখো, শেষ পর্যন্ত খেলে যাও।"'
ক্রিজের অপর প্রান্তে থাকা উমেশও সাহস যুগিয়ে যাচ্ছিলেন বলে উল্লেখ করেন রিংকু, '(উমেশ) ভাইয়াও আমাকে বলেছিলেন, "মার রিংকু, চিন্তা করিস না।"'
কলকাতার এই জয়ের পেছনে পুরো কৃতিত্ব রিংকুকে দেন অধিনায়ক রানা, 'যখন আমরা বোলিংয়ে ছিলাম, আমরা ভালো করছিলাম। কেবল শেষ দুই ওভারে (৪৫ রান দিয়ে ফেলি)। ১৮টি ভালো ওভার করার পর দুটি বাজে ওভার আমরা করেছি। একই জিনিস আমাদের ব্যাটিংয়ের সময় ঘটেছে রশিদ খানের ওভারে। এটা আমাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। তবে রিংকু সিংকে কৃতিত্ব দিতে হয়। আজ (রোববার) আমরা যে দুই পয়েন্ট পেয়েছি, সেটা স্রেফ রিংকু সিংয়ের কারণে।'
Comments