‘বাংলাদেশকে হারাতে পারা হবে বড় কিছু’

Curtis Campher
ছবি: স্টার

জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়, বেড়েও উঠেছেন সেখানে। দক্ষিণ আফ্রিকায় হয়ে খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও। তবে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে পারিবারিক যোগ থাকায় কার্টিস ক্যাম্ফারের আইরিশ পাসপোর্টও ছিল। সেই সূত্রেই তিনি এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। অস্ট্রেলিয়ায় গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চার বলে চার উইকেট নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। ব্যাট হাতেও ঝড় তুলে দলকে জেতানোয় রাখেন অবদান। এই অলরাউন্ডার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে বিপিএল খেলার ফাঁকে আড্ডা দিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে। কথা বলছেন আসছে মাসে আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর নিয়েও।

প্রথমবার বিপিএল খেলার অভিজ্ঞতা কেমন

কার্টিস ক্যাম্ফার: আমি সত্যিই খুব উপভোগ করেছি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স আমাকে বেশ ভালো দেখভাল করেছে। সময়টা উপভোগ করেছি বলতে হবে। যদিও দলের ফলটা ভালো হয়নি।

দল তো ভাল করল না

ক্যাম্ফার: ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আসলে অনেক কিছুই উঠা-নামার মধ্য দিয়ে যায়। মোমেন্টামটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। ছোট ছোট মুহূর্ত পরিস্থিতি বদলে দেয়। আমরা দেখেন খুব কাছে গিয়ে কিছু ম্যাচ হেরেছি। দুই-তিন ওভার ভালো হলে পুরো চিত্র ভিন্ন হতো।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম আপনার, ক্রিকেটের শুরুটা কীভাবে?

ক্যাম্ফার:  আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় বেড়ে উঠেছি। আমার স্কুলিং সিস্টেমটা ক্রিকেটার হতে ভূমিকা রেখেছে। সেখানকার আবহ থেকে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছে। বেড়ে উঠার সময়ে জ্যাক ক্যালিসের মতন তারকাকে খেলতে দেখতাম দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে। তিনি যে পরিমাণ রান করতেন, উইকেট নিতেন…তিনি ছিলেন গ্রেটদের একজন। তাকে অনুসরণ করতাম। তিনি আমার আদর্শ। তার মতন অলরাউন্ডার হতে চাইতাম।

Curtis Campher
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছেন। সেখানেও তো সম্ভাবনা ছিল। আয়ারল্যান্ড বেছে নিলেন কেন? 

ক্যাম্ফার: আপনি যেখানে বেড়ে উঠবেন সেই দেশের হয়ে খেলতে চাইবেন। কিন্তু জীবন আপনাকে কখন কোথায় নিয়ে যায়, ভিন্ন কত চ্যালেঞ্জ দেখায় সেটা একটা বিষয়।

আর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে আমার পারিবারিক যোগ তো আছেই। আর আমি আইরিশ লাইভস্টাইল অনেক পছন্দ করি। ডাবলিন আমার প্রিয় শহর। আয়ারল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দ্রুত খেলার সুযোগটা বেশি ছিল। আমি সেটা নিয়েছি। 

চার বলে চার উইকেট নিয়েই তো আলোচনায় এসেছিলেন শুরুতে, অথচ মূলত আপনি ব্যাটিং অলরাউন্ডার

ক্যাম্ফার: দারুণ স্মরণীয় ছিল। বিশ্বকাপের মতন মঞ্চে দলের হয়ে এমন কিছু করতে পারা স্বপ্নের মতন, তাই না? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অলরাউন্ডার হিসেবে দলে প্রভাব রাখতে পারা। আমি বোলিং না হলে ব্যাটিং, কোন একটা দিয়ে দলের হয়ে ভূমিকা রাখতে পারছি। এটা বেশি স্বস্তির। মাঝে মাঝে আমি ভাল বল করি, মাঝে মাঝে ভাল ব্যাট করি। কাজেই কোন এক পরিচয়ে বেশি না ঝুঁকে নিজেকে স্রেফ অলরাউন্ডার  বলতে চাই।

আগামী মাসেই আয়ারল্যান্ডের সিরিজ আছে বাংলাদেশে। আপনার বিপিএলের অভিজ্ঞতা কতটা কাজে লাগবে?

ক্যাম্ফার: ভীষণ কাজে লাগবে। আমি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে এলাম (২০২১ সালে প্রথমবার এসেছিলেন আয়ারল্যান্ড উলভস দলের হয়ে)। বিভিন্ন রকমের নোটস নিচ্ছি। এখানকার স্থানীয় খেলোয়াড়দের জানার চেষ্টা করছি, আলাপ হচ্ছে। খেলার ধরণ, কন্ডিশন, উইকেট এসব বোঝার চেষ্টা করছি। অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে।

এখানকার উইকেট কেমন দেখলেন সব মিলিয়ে

ক্যাম্ফার: বেশ ভিন্নরকম। সিলেটে রাতের বেলায় বল তেমন ঘুরছিল না, ভালোই ব্যাটে আসছিল। দিনের বেলায় আবার বোলারদের সুবিধা ছিল। সিম মুভমেন্ট দেখলাম। ঢাকায় কেমন হয় দেখতে হবে। ভিন্নরকম এক চ্যালেঞ্জ আসলে।

পুরো ওয়ানডে সিরিজটা যেহেতু সিলেটে হবে, সিরিজের আগেই সেখানকার কন্ডিশন জেনে নেওয়ায় আমার নিজের ও আমাদের দলের জন্য ভালো হবে। আশা করছি সেসব অভিজ্ঞতা থেকে কিছু পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারব। যতটা দেখলাম, বেশ ভালো উইকেট। ওয়ানডের জন্য আদর্শ হবে। ব্যাটারদের অনেক সাহায্য থাকবে। একইসঙ্গে আবার বোলারদের জন্যও অনেক রসদ থাকবে। আমাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জ হবে। সবাই জানে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ কতটা শক্তিশালী।

আপনারা তো দেশে অনেক ভিন্ন উইকেটে খেলেন, অনেক বড় রানের ম্যাচ হয়। পুরো দলের মানিয়ে নেওয়া কতটা চ্যালেঞ্জের হবে

ক্যাম্ফার: আর্লি কিছু সিম মুভমেন্ট থাকে আমাদের ওখানে। পরে ব্যাটাররা বড় শট খেলতে পারে। এখানে স্পিনে অনেক সাহায্য হয়, বল মাঝে মাঝে থেমে আসে। ভিন্নরকম এক চ্যালেঞ্জ হবে। আশা করছি সবাই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।

বাংলাদেশকে হারাতে পারবেন?

ক্যাম্ফার:  এটা করতে পারলে বড় কিছু হবে। তারা ঘরের মাঠে প্রায় অপ্রতিরোধ্য। আমরা যদি আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে পারি তাহলে তুমুল লড়াই হবে। আমরা চাইব সামর্থ্যের সেরাটা ঢেলে দিতে। তারপর দেখা যাক কি হয়।

সাদা বলে আপনি অনেক ঝলক দেখিয়েছেন, টেস্ট খেলার সম্ভাবনা আছে?

ক্যাম্ফার:  আশা করছি (এবার)। শিগগিরই দল নির্বাচন হবে, আশা করছি আমি স্কোয়াডে থাকব। লাল বলে খেলাটা দারুণ কিছু হবে। আমরা অনেকেই লম্বা সময় ধরে সেই অভিজ্ঞতা পাই না। আশা করছি স্কোয়াডে থাকব এবং খেলব।

বাংলাদেশে বন্ধু হয়েছে কেউ?

ক্যাম্ফার: হ্যাঁ আফিফের কথা বলব। দারুণ ছেলে। ওর সঙ্গে অনেক আড্ডা হয়েছে। আমি ইবাদত ও খালেদকেও আগে থেকে চিনি। তাদের সঙ্গে আগেও খেলেছি। এবারও দেখা হলো। আশা করছি আরও বন্ধু হয়ে যাবে। 

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

43m ago