উৎসুক জনতার কারণে আগুন নেভাতে বেশি সময় লেগেছে: ফায়ার মহাপরিচালক

আগুন লাগা মার্কেটটিকে ফায়ার সার্ভিস ২০১৯ সালে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। গণমাধ্যমকে সেই ছবি দেখাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। ছবি: পলাশ দাস/স্টার

'২০১৯ সালের ২ এপ্রিল এই ভবনটিকে আমরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছি এবং ব্যানার টাঙিয়েছি। এরপরে ১০ বার নোটিশ দিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব ছিল, আমরা করেছি। তারপরও এখানে ব্যবসা চলছে।'

বঙ্গবাজারের মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

তিনি বলেন, 'আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে, আর ছড়াবে না। তবে, পুরোপুরি নেভাতে আরেকটু সময় লাগবে।'

এই মার্কেটটি সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে। তাদেরকে 'অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ' জানিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কি না এবং তাদের গাফিলতির কারণেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। যে সংস্থার নাম উচ্চারণ করেছেন, তাদের জিজ্ঞাসা করেন।'

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের এত কাছে আগুনের ঘটনা ঘটার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় কেন লাগলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এর প্রধান কারণ উৎসুক জনতা।'

এ সময় তিনি তার মোবাইলে ধারণকৃত একটি ভিডিও দেখান, যেখানে উৎসুক জনতার ভিড়ে রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে আছে।

এই অগ্নিকাণ্ড কীভাবে শুরু হলো সে বিষয়ে তিনি বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের কারণ আমরা জানি না। আগুন নিভে যাওয়ার পরে এ ঘটনায় আমরা ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করব। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার কারণ বলা যাবে।'

এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তদন্তের পর জানানো যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

হতাহতের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আজকের ঘটনায় সিভিলিয়ান কেউ হতাহতের খবর এখন পর্যন্ত পাইনি। তবে, ফায়ার সার্ভিসের ৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন গুরুতর অবস্থায় বার্ন ইউনিটে আছেন।'

তিনি বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ইনশাল্লাহ আমরা করব এবং আপনাদেরকে জানাবো।'

বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কয়েক গজ দূরে থাকা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরে দোকানদারদের হামলার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, 'ফায়ার সার্ভিসের সকল পদবির কর্মচারীরা আপনাদের জন্য জীবন দেন। গত ১ বছরে ১৩ জন ফায়ারফাইটার শহীদ হয়েছে, যারা "অগ্নি বীর" খেতাব পেয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৯ জন। এমনকি আজকে ৮ জন আহত হয়েছেন। তারপরও কেন বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপর আঘাত হানল? এটা আমার বোধগম্য নয়। আমরা তো আপনাদের জন্যই জীবন দিচ্ছি।'

উল্লেখ্য, আজ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মোট ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল যোগ দেয়। আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হয়েছে হেলিকপ্টারও।

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

16m ago