ডেভিল হান্টের পর চিরুনি অভিযান: জনমনে স্বস্তি ফিরবে?

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: স্টার

অপারেশন ডেভিল হান্টের পর এবার চিরুনি অভিযান। ১৩ জুলাই সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে সারাদেশে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যেকোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা 'চিরুনি' অভিযান পরিচালনা করতে পারে।

'চিরুনি অভিযান' বলতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন একটি পরিকল্পিত তল্লাশি বা অভিযানকে বোঝানো হয়, যেখানে নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে খুব সূক্ষ্মভাবে, ধাপে ধাপে ও ঘন ঘন অভিযান চালানো হয়। লক্ষ্য থাকে, এলাকা বিশেষে সন্ত্রাসী, জঙ্গি, অপরাধী, অস্ত্র, মাদক, অবৈধ বস্তু কিংবা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা।

চিরুনি দিয়ে মাথার চুল আঁচড়ে যেমন সব উকুন বের করে আনার চেষ্টা হয়, তেমনি এই অভিযানটিও এমনভাবে পরিচালনা করা যায়, যাতে কোনো অপরাধী বাইরে থাকতে না পারে। মূলত 'চিরুনি অভিযান' নামটি এসেছে 'চিরুনি'র মতো করে এলাকা চিরে চিরে খোঁজার কৌশল থেকে।

এই ধরনের অভিযান অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল বা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাই মূলত টার্গেটে থাকে। ফলে অনেক সময় এসব অভিযানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা বিরোধী মত নির্মূলের চেষ্টা করা হয়। অভিযানে অনেক সময় সাধারণ মানুষও হয়রানির শিকার হয়। সবার মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক তৈরি হয়। অর্থাৎ, সরকার এবং তার বাহিনীগুলো যদি পেশাদারির সঙ্গে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় বিবেচনায় অভিযান পরিচালনা না করে, তাতে সাময়িক সময়ের জন্য অপরাধীদের মনে ভয় তৈরি হলেও আখেরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নতি করা যায় না।

স্মরণ করা যেতে পারে, গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল অপারেশন 'ডেভিল হান্ট'। বাংলা করলে হয় 'শয়তান বধ অভিযান'। গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে টানা ২৪ দিন। এই অভিযান শুরুর দিনেই রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছিলেন, 'ডেভিল ধরার নামে টোকাই ধরলে জনগণ মানবে না। সরকারের ভেতরেও শয়তান আছে। তাদেরকে ধরুন।'

এর আগে, ২০০২ সালে বিএনপি সরকারের আমলে পরিচালিত 'অপারেশন ক্লিন হার্ট'-কে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ বলেছিল, এটি 'আওয়ামী লীগ নির্মূল অভিযান'। অর্থাৎ, অপরাধ দমনে সরকার যখনই কোনো বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে, তাতে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে থাকে সরকারের বিরোধী পক্ষ।

প্রশ্ন হলো, এবারের চিরুনি অভিযানে কারা বেশি আতঙ্কিত? তারচেয়ে বড় প্রশ্ন, ডেভিল হান্ট কি ব্যর্থ হয়েছে? যদি না হয় তাহলে এখন চিরুনি অভিযানের কথা বলা হচ্ছে কেন? ডেভিল হান্টে যদি সত্যিই ডেভিলদের ধরা হতো, তাহলে কি এখন উকুন বাছার প্রয়োজন হতো?

২.

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গত ১১ মাস ধরেই কথা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন, আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় বা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে আছি। অথচ সরকারে কর্তা ব্যক্তিদের অনেকে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যুদ্ধাবস্থায় থাকলে পরিস্থিতির উন্নতি হয় কী করে?

জামায়াতের এক সিনিয়র নেতা সম্প্রতি বললেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূল নয়। একই কথা এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও বলেছেন। যদি আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তাহলে তার সাত-আট মাস আগে কী করে তারা এটা বলেন যে, পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূল নয়? তারা কি জানেন বা মনে করেন যে, আগামী সাত মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে?

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নানা কারণেই খারাপ হতে পারে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তিতে রাখা। গত ১১ মাস ধরে দেশের মানুষ কি স্বস্তিতে আছে? মব বন্ধ হয়েছে? উপরন্তু সরকাররে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে মবকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা হয়েছে।

মবের মতো একটি বড় অপরাধকে যদি জাস্টিফাই করেন, অতীতের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে যদি বলেন যে, আগে এর চেয়ে বড় মব হয়েছে—তাহলে সেই দেশে আপনি আইনশৃঙ্খলা ঠিক করবেন কী করে? এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর দায় কী? আগে হয়েছে, অতএব এখনো হবে—এই ন্যারেটিভ দিলে অপরাধীদের পোয়াবারো; তারা উৎসাহ পায়। তারা মনে করে, যেটা করছে সেটাই সঠিক। তিক্ত হলেও সত্যি, সরকারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে মনে হয়, তারাও মবকে ভয় পায়।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে কথিত তৌহিদী জনতার নামে যেসব মব হয়েছে, তার একটার বিরুদ্ধেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে? জয়পুরহাট ও রংপুরে নারীদের খেলা বন্ধ করা হলো; গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করা হলো; নাটকের মঞ্চায়ন বন্ধ করা হলো। এসব যারা করেছে তাদের কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? যারা নারীদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে চায়, যারা সৃষ্টিশীল কার্যক্রম বন্ধ করতে চায়, তারা কারা? সরকার তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানে না? এরা ডেভিল নয়? নাকি সরকারে চোখে শুধু ক্ষমতাচ্যুত দলের নেতাকর্মীরাই ডেভিল—এই প্রশ্নও জনমনে আছে।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে দুয়েকটি দলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুনোখুনির অসংখ্য অভিযোগ এসেছে। আবার অভিযোগ পাওয়ার পর বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের চার হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গত ১১ মাসে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির জন্মের পর থেকে গত ৪৫ বছরেও সম্ভবত এত নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়নি। তার মানে পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ সেটা বিএনপি নিজেই বুঝতে পারছে। আবার তারা এটাও উপলব্ধি করতে পারছে, যদি এগুলো প্রশ্রয় দেওয়া হয় তাহলে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মানুষ ক্ষুব্ধ হবে। ভোট পাবে না। ফলে বিএনপিকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।

কেন এটা হচ্ছে? হচ্ছে এই কারণে যে, বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ১৫ বছর দৌড়ের ওপর ছিলেন। তাদের একেকজনের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা। বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। পালিয়ে বেড়িয়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য শেষ হয়ে গেছে। অনেকের সংসারও ভেঙে গেছে বলে শোনা যায়। ফলে তাদের একটি অংশ ৫ আগস্টের পর যখন মনে করলেন যে, তারা ক্ষমতায় চলে এসেছেন অথবা পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে এসেছে, তখন থেকে যেভাবে পারছেন অন্তত ১৫ বছরের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

টেকনিক্যাল সমস্যা হলো, যারা বছরের পর বছর দলের জন্য কাজ করলেন, মিছিল করলেন, পুলিশের মার খেলেন, জেল খাটলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য হারালেন—দল তাদেরকে অফিসিয়ালি কী দেয়? কোনো বেতন দেয়? দেয় না। সুতরাং তারা যখন মনে করলেন, ১৫ বছর পর একটা সুযোগ পাওয়া গেছে, অতএব যেভাবে পারা যায় টাকা রোজগার করতে হবে, ফলে অনেকেই বেপরোয়া হয়েছেন। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এ কারণেই আমরা দেখি, যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের নেতাকর্মীরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে যার যতটুকু ক্ষমতা সেটা দিয়ে টাকা উপার্জনের চেষ্টা করেন। সেটা হোক বৈধ বা অবৈধ।

আবার সব চাঁদাবাজি যে এখন বিএনপি করছে, তা নয়। এখন ক্ষমতার অংশীদার আরও অনেক দল। বিএনপির বিরুদ্ধে যেমন সরাসরি চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে, তেমনি জামায়াতের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ আছে। এনসিপিও অভিযোগমুক্ত নয়। তাদের অনেক নেতাকর্মীর দামি গাড়ি ও লাইফস্টাইল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি নতুন দল হওয়া সত্ত্বেও তাদের দলীয় কার্যক্রমের তহবিল কোথা থেকে আসছে, সে প্রশ্ন উঠছে। তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। যদিও তারা দাবি করেছে, এগুলো চাঁদা নয়, ডোনেশন বা অনুদান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে নানারকম রসিকতাও আছে।

অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তারা আগে চাঁদা দিতেন এক জায়গায়, এখন দেন তিন জায়গায়। অথচ ৫ আগস্টের পর দেশ থেকে চাঁদাবাজি উধাও হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। একজন ব্যবসায়ীকে যদি আগের চেয়ে বেশি চাঁদা দিতে হয় তাহলে তার কাছে এই অভ্যুত্থানের অর্থ কী? সাধারণ মানুষ যদি মনে করে, সে আগের চেয়ে বেশি অনিরাপদ; দেশের ব্যবসায়ীরা যদি মনে করে, আগের চেয়ে ব্যবসার পরিবেশ খারাপ, তাহলে তাদের কাছে এই গণঅভ্যুত্থান অর্থহীন।

এই প্রশ্ন তোলাও অযৌক্তিক নয় যে, গত ১১ মাসে সরকার কোন খাতটি ঠিক করতে পেরেছে? গণহারে সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা আর শত শত প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের বাইরে আর কী কী সংস্কার করেছে—যেগুলো সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করেছে, স্বস্তিদায়ক করেছে? যদি আগের চেয়ে জীবন সহজ ও স্বস্তির না হয়, নিরাপদ না হয়, তাহলে কেন প্রশ্ন উঠবে না?

৩.

বলা হয়, পুলিশ কাজ করছে না। কারণ, তারা ট্রমায় আছে এবং আগের সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বলে তারা কাজ করছে না। এটিও কোনো যুক্তির কথা নয়। পুলিশ বা যেকোনো সরকারি কর্মচারী মূলত পাবলিক সার্ভেন্ট। জনকর্মচারী। সে কোন সরকারের আমলে নিয়োগ পেলো এই বিবেচনা করলে প্রত্যেক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের সরকারের নিয়োগ দেওয়া সবাইকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। এটি পৃথিবীর কোনো দেশে সম্ভব নয়।

পুলিশ বা সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বা রাজনৈতিক অভিলাষ কেন থাকবে? বরং তাদের দায়িত্ব হলো, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকবে তাদের আদেশ পালন করা।

আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বলে পুলিশ কাজ করছে না, এটি খুবই হাস্যকর কথা। এই রাজনৈতিক বিবেচনা কিছু সংখ্যক পুলিশের থাকতে পারে। অধিকাংশেরই এই বিবেচনা থাকার কোনো কারণ নেই। কিন্তু পুলিশকে ভুক্তভোগী করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভুক্তভোগী করে দেশ চালানো যাবে না, রাষ্ট্রযন্ত্র কাজ করবে না।

বাস্তবতা হলো, রাতারাতি সব পুলিশ বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। বাদ দিলে রাতারাতি লাখো পুলিশ কোথায় পাবেন? নিয়োগের একটা প্রক্রিয়া আছে। আজকে নিয়োগ দিয়ে কালকেই তাকে মাঠে নামিয়ে দিলে হিমশিম খাবে। একজন পুলিশ সুপার বা ওসি হতে অনেক বছর সময় লাগে। একজন ডিআইজি হতে তার পেছনে রাষ্ট্রের প্রচুর অর্থ খরচ হয়, অনেক প্রশিক্ষণ দিতে হয়। সুতরাং আগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বলে তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে দেওয়া কোনো বাস্তবসম্মত কথা নয়। কেননা বাদ দিয়ে সরাসরি কাউকে ডিআইজি, এসপি বা ওসি বানিয়ে বসিয়ে দেওয়া যাবে না।

সরাসরি সচিব তো দূরে থাক, উপসচিবও নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। তাহলে সমাধান কী? সমাধান হলো আস্থায় নেওয়া। অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই পুলিশ এবং সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের আস্থায় নিতে পারেনি। তারাও সরকারের ওপর আস্থাবান হয়নি। এরকম অনাস্থা দিয়ে দেশ চালানো কঠিন।

রাতারাতি যেমন সবাইকে বাদ দেওয়া যায় না, তেমনি পুলিশ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যদি মনে করেন, তারা আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বা সুবিধাপ্রাপ্ত, অতএব এখন কাজ করবেন না—দুটিই বিপজ্জনক।

বরং সরকারকে বুঝতে হবে, এদেরকে দিয়েই তার দেশ চালাতে হবে। আর সরকারি কর্মচারীদেরও বুঝতে হবে, এখন আওয়ামী লীগ নেই, গণঅভ্যুত্থানে তাদের পতন হয়েছে। অতএব আগের সেই আনুগত্য মনে রেখে সে এই সরকারের অধীনে কাজ করবে না—এমন মানসিকতা পোষণ করলে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত বাদ দিয়ে দেওয়াই যৌক্তিক। কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটি বাহিনী বা প্রতিষ্ঠানের সবাইকে 'ফ্যাস্টিস্টের দোসর' বলার যে প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, তাতে অনাস্থা ও অবিশ্বাস বরং বেড়েছে। এটিই এই মুহূর্তে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক

Comments