‘নতুন প্রজন্ম বইয়ের পাতা উল্টে রবীন্দ্রনাথ পড়ে না’
আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের মতো করে হয়তো নাও পড়তে পারেন রবীন্দ্রনাথ। আমার সময়ে আমরা যে বিষয়েই পড়াশোনা করি না কেন- রবীন্দ্রনাথের বই পড়া, গান শোনা, কবিতা আবৃতি, নাটক দেখা- এটা প্রায় বাধ্যতামূলক ছিল।
তবে কোনও জোর ছিল না, এমন ভালো লাগাটা আমাদের প্রত্যেকের ভেতরে এমনিতেই তৈরি হয়েছিল। সেই ধারাটা যদিও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমরা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু, মনে হয় বর্তমান ধারাটা হয়তো একটু ভিন্নখাতেই বইছে, দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় আবৃতিকার ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি কলকাতার রবীন্দ্রসদনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাড়ে তিন হাজার কবিতা ও গান নিয়ে ‘মুঠোয় ভরা রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক ডিজিটাল আর্কাইভের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উদ্বোধকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট এই আবৃতিকারও। সেখানেই কথা হয় ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
আক্ষেপের সুরে নতুন প্রজন্মের রবীন্দ্রনাথের প্রতি অনীহার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তার ভরাট কণ্ঠেও কেমন যেন একটা আড়ষ্টভাব প্রকাশ পাচ্ছিল। কষ্ট হচ্ছিল কোথাও।
তবে কী আপনি বলতে চাইছেন নতুন প্রজন্ম এখন ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই বেশি মগ্ন থাকছে?
ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে বললেন, “এই প্রজন্মতো বইয়ের পাতা উল্টে রবীন্দ্রনাথ পড়ে না। তার জন্যই তো আজকের এমন ডিজিটাল রবীন্দ্রভাণ্ডার প্রকাশ পেলো। একটি পেনড্রাইভের মধ্যেই এতো কবিতা-গান থাকছে। ওরা পকেটে নিয়ে ঘুরতে পারবে।”
ব্রততী হলেন এমন একজন বাচিকশিল্পী যার এক কণ্ঠেই বাঙালি শুনতে পান রবীন্দ্র-নজরুল থেকে সুকুমার কিংবা শঙ্খ ঘোষের কবিতা।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরের এই শিল্পী বলছিলেন তিনি বাংলাদেশের আতিথেয়তায় বরাবরই মুগ্ধ। বললেন, “আমি বার বার যাই বাংলায়। কারণ ওখানের আমার অনেক বন্ধু আছেন, খুব পরিচিত অনেক মানুষের শহর ঢাকা। মানুষগুলোর মধ্যে আমি এতো আন্তরিকতা খুঁজে পাই যে আমাকে মুগ্ধ হতে হয়।”
বাংলাদেশ রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে কতটা এগিয়ে তা দেশটির জাতীয়সংগীত শুনলেই প্রমাণ পাওয়া যায়। অতিরিক্ত কিছু বলতে হয় না, মন্তব্য ব্রততীর।
“শিল্পীদের সম্মানের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের মানুষের কোনও তুলনা হয় না। শ্রোতাদের সেই ভালোবাসার টানে যখনই ডাক আসে, ছুটে যাই পদ্মা-পারের বাংলায়। প্রাণও জুড়ায়”, যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
Comments