‘নো ড্রাইভিং লাইসেন্স নো বাইক’ নীতি চালু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কোনো ব্যক্তির কাছে মোটরসাইকেল এবং সিএনজি-চালিত অটোরিকশা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সরকারের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই এই নির্দেশনা রাজ্যের প্রত্যেক রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি অফিসগুলোকে (আরটিও) পাঠানো হয়েছে।
রাজ্যে লাগামহীন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাশ টানতেই সরকার এমন কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বলে সরকারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।
গত ৪ জুলাই কলকাতার পরিবহন দফতর থেকে রাজ্যের ২৩ জেলার আরটিও কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও পরিষ্কারভাবে সরকারের এই নির্দেশনার কথা জানিয়ে দেন তারা।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাজ্য সরকারের নেওয়া কর্মসূচি ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’-এর অংশ হিসেবেই শুধুই নয়, এই কর্মসূচির আরও একটি কারণ অপরাধ কমানো। কলকাতাসহ জেলা শহরগুলোতে অনেক ক্ষেত্রে বাইক ব্যবহার করেই দুষ্কৃতিকারীরা অপরাধমূলক কাজ করে। চুরি-ডাকাতি এবং খুনের ঘটনায় বাইক ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ তদন্তে নেমে বাইকের চালক ও মালিক ভিন্ন ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ পেয়েছেন।
পরিবহন দফতরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বাইক-বাহিনীর দাপট কামানোও এই কর্মসূচির অন্যতম কারণ। তবে মূল কারণ হচ্ছে, দুর্ঘটনা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণ।
সরকারের সিদ্ধান্তে বলা হয়, কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স না দেখাতে পারলে তার কাছে কোনো বিক্রেতা মোটরসাইকেল বিক্রি করতে পারবেন না। কোনো ক্রেতা মোটরসাইকেল নিতে গেলে তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে দোকানে যেতে হবে। টাকা অগ্রিম দেওয়ার পর সেই কাগজপত্র ভেরিফিকেশন করিয়ে সঠিক ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রমাণ হলেই আরটিও থেকে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হবে।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ নীতি চালু রয়েছে। এই নীতির ফলে মোটরবাইক চালকের মাথায় যদি হেলমেট না থাকে তাহলে রাজ্যের কোনো পেট্রোলপাম্প কর্তৃপক্ষ মোটরসাইকেল চালকের কাছে তেল বিক্রি করেন না। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই সিদ্ধান্তেও দুর্ঘটনার অনেকটা কমে গিয়েছে।
রাজ্য সরকার এবার ‘নো ড্রাইভিং লাইসেন্স নো মোটরসাইকেল’ নীতি চালু করলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধও অনেকটা কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Comments