কার হাতে উঠবে শিরোপা : রিয়াল না লিভারপুল
ফুটবল বিশ্ব এখন মেতে আছে বিশ্বকাপ জোয়ারে। তবে এর আগে বাড়তি উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের মঞ্চ। পুরো বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে ইউক্রেনের কিয়েভে। কে জিতবে এ মহাযজ্ঞ? রিয়াল মাদ্রিদে ঘরে উঠবে তাদের ১৩তম শিরোপা না লিভারপুলের ষষ্ঠ। উত্তর পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে না ফুটবল ভক্তদের। শনিবার রাত পৌনে ১টায় মোকাবেলা করবে দল দু’টি।
৩৭ বছর পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ-লিভারপুল। শেষবার ১৯৮১ সালের ফাইনালে খেলেছিলো তারা। তাতে রিয়ালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল লিভারপুল। এবার কি তারই পুনরাবৃত্তি হবে? নাকি প্রতিশোধের মিশন। এ প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ফুটবল পাড়ায়। রিয়াল জিতলে তাহলে ইতিহাসের দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতার রেকর্ড স্পর্শ করবে। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ সালে পর্যন্ত টানা তিনটি শিরোপা জিতেছিলো জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ।
ইতিহাস অবশ্য রিয়ালের হয়েই কথা বলছে। এর আগে মোট ১৫ বার ফাইনাল খেলে ১২ বারই শিরোপা ঘরে তুলে নিয়েছে দলটি। অপরদিকে লিভারপুল ৭ বার ফাইনাল খেলে জিতেছে ৫টি শিরোপা। সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইয়েও এগিয়ে আছে রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এর আগে শেষবার ২০১৪ সালে একই গ্রুপে পড়েছিলো দল দু’টি। দুইবারই জয় পেয়েছিলো রিয়াল।
তবে ইতিহাস যাই বলুক, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ দারুণ ফুটবল খেলছে লিভারপুল। জার্মান কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ অলরেডসদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে শুরু করেছে দলটি। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১২ ম্যাচে গোল দিয়েছে ৪০টি। অপরদিকে রিয়াল দিয়েছে ৩০টি গোল। তাই এই লিভারপুলকে সমীহ করতেই হচ্ছে জিনেদিন জিদানের দলকে।
আর সমীহটা করছেও রিয়াল। গত ৯ বছরে ৫টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ী দলটি নিজেদের ফেভারিট মানতেই নারাজ। অথচ লা লিগায় সংগ্রাম করলেও এ আসরে ভিন্ন দলে পরিণত হয় রিয়াল। জিদানের ভাষায়, ‘এখানে না আমরা ফেভারিট, না তারা। অন্যান্য ফাইনালের মতো দুই দলেরও ফিফটি ফিফটি সুযোগ রয়েছে। তবে আর একটি ফাইনাল খেলতে পেরে আমরা দারুণ খুশি।’
জিদান দুই দলেরই সমান সুযোগ দেখলেও ক্লপ বলছেন ভিন্ন কথা। অভিজ্ঞতার কারণেই রিয়ালকে এগিয়ে রেখেছেন তিনি। তবে নিজেদের হারানোর কিছু দেখছেন না এ কোচ, ‘আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি হয়েছে যদি কোন ম্যাচ হেরে যাই তাহলে এর দায় আমার। আর যদি কোন ম্যাচ জিতি তাহলে এর কৃতিত্ব সম্পূর্ণ খেলোয়াড়দের। তাই তাদের হারানোর কিছু নেই। অভিজ্ঞতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিশ্চিত মাঠে মাদ্রিদ আমাদের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকবে। তবে এটা কোন ব্যাপার না কারণ খেলা এখানেই শেষ নয়, সবে তো শুরু।’
লড়াইটা আরও এক জায়গায়। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রাজত্বে পা দিয়েছেন হালের নতুন তারকা মোহাম্মদ সালাহ। আদর করে অনেকে তাকে ‘মিশরের মেসি’ বলে ডাকেন। চলতি বছরে দুর্দান্ত ফর্মে আছে সালাহ। এ মৌসুমে তার গোল সংখ্যা ৪৩। প্রিমিয়ার লিগে গড়েছেন সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। কিয়েভের ফাইনালে কিছু করতে পারলে তার হাত ধরেই হয়তো ভাঙতে পারে গত এক দশকে গড়া মেসি-রোনালদোর সাম্রাজ্য।
Comments