নানা আয়োজনে পশ্চিমবঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে বর্ষবরণ

Nababarsha celebration in West Bengal
১৫ এপ্রিল ২০১৮, বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠান। ছবি: স্টার

বাঙালির শ্রেষ্ঠ সার্বজনীন উৎসব বাংলা বর্ষবরণ আজ (১৫ এপ্রিল) পালিত হচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির বাংলা ভাষাভাষী রাজ্যগুলোতে।

যদিও রাজধানী দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, উপ-দূতাবাসগুলোতে গতকাল (১৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সময় অনুযায়ীই ১৪২৫ বাংলা সনকে স্বাগত জানানো হয়।

আজ ভারতীয় পঞ্জিকানুসারে বর্ষবরণের আয়োজনে এগিয়ে রয়েছে দেশটির অন্যতম ব্যস্ততম শহর কলকাতা। শুধু রাজধানীতেই নয়, বরং রাজ্যটির জেলায় জেলায় বাঙালির চিরাচরিত ঐতিহ্য এই বাংলা বছরকে বরণ করতে নেওয়া নানা আয়োজন এই উৎসবের প্রতি বাঙালির ভালোবাসার গভীরতাকে জানান দিয়ে যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের ঘরে ঘরে আতিথেয়তায় আজ অন্যতম অনুষঙ্গ মিষ্টি, মুড়ি, দই, খই ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খাবার। সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত করতে হবে মাছের রাজা ইলিশ-এর নামও। ইলিশ মাছের গন্ধ না উড়লে আজ বাঙালির ঘরে বর্ষবরণের আয়োজনের কমতি থাকবে- এমনটিই বাঙালি গৃহকর্তারা মনে করেন। আর সেই জন্যই ঘুম থেকে উঠেই বাজারে ছুটেছেন তারা। বাজারে লম্বা লাইন দিয়ে অনেকেই কিনেছেন ইলিশ মাছ।

Nababarsha celebration in West Bengal
১৪২৫ বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে মঙ্গল শোভযাত্রার আয়োজন করা হয়। ছবি: স্টার

এদিন সকালে কলকাতার যাদবপুরের ঢাকুরিয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল বর্ষবরণের অন্যতম বড় আয়োজন। যাদবপুরের সুকান্ত সেতু থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় মুখোশ, রণ-পা, বর্ণমালাসহ বাঘ-ভাল্লুকের মুখ নিয়ে হাজার হাজার বাঙালি অংশ নিয়েছিলেন। বাউল-ভাটিয়ালির সুরের মূর্ছনায় পায়ে পায়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা এগিয়ে চলেছে তার গন্তব্যের দিকে। একইভাবে পার্ক স্ট্রিট ও কলকাতার একাডেমি অফ ফাইন আর্টে ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে পৃথক একটি বৈশাখ বরণ অনুষ্ঠান চলছে। একইভাবে তারা আয়োজন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। কলকাতায় অনেকেই পান্তা-লঙ্কা খেয়ে বাঙালির ঐতিহ্যকে স্মরণ করেন।

উত্তর কলকাতার শ্যামপার্কের প্রাণের বৈশাখ মেলা চলছে আজ। শনিবার থেকে শুরু হওয়া দুদিনের আয়োজনের আজই চূড়ান্ত পর্ব সেখানে। দুই বাংলার বহু শিল্পীর অংশ গ্রহণে আজ সেখানে দিনভর রয়েছে নানা অনুষ্ঠান।

কলকাতার বাইরে উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাতের মধ্যমগ্রামে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করেন স্থানীয় অধিবাসীরা। বীরভূমের বোলপুরের শান্তিনিকেতনে আজ দিনভর বর্ষবরণে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। সকালে কলা ভবনের সামনে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শান্তিনিকেতনে বর্ষবরণের আয়োজন শুরু হয়। সন্ধ্যায় পথনাটক ও আলোচনাসভার মাধ্যমে শেষ হবে দিনের আয়োজন।

এছাড়াও, রাজ্যের বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়েও সকাল থেকে দর্শনার্থীদের উপচে পড়ছে ভিড়। বিশেষ করে কলকাতার কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, তারকেশ্বর বেলুড় মঠে বাংলা বছরে সবার সুখ-সুস্থতার প্রার্থনায় সামিল হন আট থেকে আশি বছরের অনেকেই।

গতকাল (১৪ এপ্রিল) কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার। শহরের পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা শেষ হয় বঙ্গবন্ধু সরণির বাংলাদেশ উপহাইকমিশন দফতরে। শোভাযাত্রায় অংশ নেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, বিএম জামাল হোসেন, মোফাকখারুল ইকবাল, মনছুর আহমেদ বিপ্লব, শেখ শাফিন প্রমুখ উদূতাবাস কর্মকর্তাসহ সেখানে কর্মরত সাধারণ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। রাতে উপ-দূতাবাসে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ নেন কলকাতায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা। অনুষ্ঠানের কবিতা আবৃত্তি করেন প্রখ্যাত বাচিকশিল্পী শিমূল মোস্তফা।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka condemns desecration of national flag in Kolkata

Condemns violent protests outside its Deputy High Commission in Kolkata

3h ago