কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা: দুই বাংলার সেতুবন্ধন

কলকাতা বাইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন স্টলে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতা-দর্শকরা। ছবি: স্টার

পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের লেখক-সাহিত্যিকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা সেতুবন্ধনের কাজ করছে। ১১ দিনের মেলায় বাংলাদেশকে বিশেষভাবে কলকাতার পাঠক-ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরার ইতিবাচক প্রচেষ্টা প্রতি বছরই বাড়তে দেখা যাচ্ছে। ২১ বছরের সেই ধারাবাহিকতায় বই মেলায় দিনব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘বাংলাদেশ দিবস’।

ময়দান বা গড়েরমাঠ নামের পরিচিত কলকাতার উন্মুক্ত জায়গায় ১৯৭৬ সাল থেকে ‘কলকাতা পুস্তক মেলা’ নামে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক বই মেলা। তবে মেলার ২১ বছর পর ১৯৯৭ সাল থেকে যুক্ত হয় বাংলাদেশ। আর এরপর থেকেই তিল তিল করে নিজের জায়গা তৈরি করে চলেছে নানা ভাষাভাষীর শহর কলকাতায়।

কলকাতা বই মেলার আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্শ গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু দে দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশ এতো সুন্দর বিষয় ভিত্তিক থিম নিয়ে প্যাভিলিয়ন করে ৪৫ থেকে ৫০টি প্রকাশনী সংস্থার বই নিয়ে হাজির হয়। সেখানে এতো ধরণের বই পাওয়া যায়। সেটা কলকাতার বাঙালি পাঠকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে’।

কিছুটা যোগ করে বই মেলার সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ও জানালেন, ‘কলকাতা কিংবা পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের শেকড় ওপার বাংলায়। ফলত মানুষের আগ্রহের জায়গা অনেক মজবুত। যাদের ওপারে শেকড় নেই, কিন্তু বাঙালি; তাদের আগ্রহ তৈরি করতে মেলা কর্তৃপক্ষ প্রতি বছরই একদিন বাংলাদেশ দিবস উদযাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের লেখক-সাহিত্যিক ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা’।

প্রখ্যাত রম্য সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, ‘প্রকৃত বাংলার চর্চা, সাহিত্যের চর্চাটা বাংলাদেশে হচ্ছে। তাই যারা বোদ্ধা-বাঙালি; সাহিত্য বোঝেন তারা তো বাংলাদেশের বই খুঁজবেনই’।

পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টদের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিশিষ্টজনদের মতও প্রায় এক রকম।

দ্য ডেইলি স্টারকে এই বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সামসুজ্জামান খান বললেন, ‘পাঠকদের মন জয় করার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কলকাতা পাঠক কোন ধরণের বই চান; সেটা নিয়েও গবেষণা করার সময় এসে গিয়েছে’।

আর প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার মনে করেন, ‘বই মেলা শেষ হলে কলকাতায় বাংলাদেশের বই পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই কলকাতায় একাধিক বাংলাদেশি বইয়ের বিক্রিয় কেন্দ্র হওয়া প্রয়োজন’।

তবে আশার কথাও শোনালেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন, ‘কলকাতার বই পাড়া হিসেবে পরিচিত কলেজ স্ট্রিটে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বইয়ের একটা স্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্র চালু হয়েছে। তাছাড়া কলকাতার বহু বইয়ের দোকানে এখন বাংলাদেশের বই পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতা ছাড়াও জেলা শহরগুলোতে বাংলাদেশের বইয়ের চাহিদা বাড়ায় স্থানীয় বই বিক্রেতারাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন বাংলাদেশের বই নিয়ে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka slams desecration of nat’l flag in Kolkata

The government yesterday strongly condemned the desecration of Bangladesh’s national flag and the burning of Chief Adviser Prof Muhammad Yunus’s effigy in Kolkata as “deplorable acts”.

1h ago