কনকনে শীতের রাতে কলকাতায় উষ্ণতা ছড়ালেন বাংলাদেশের তারকা-শিল্পীরা
কনকনে শীতের রাতে কলকাতার দর্শক-শ্রোতাদের হৃদয়ে উত্তাপ ছড়ালেন বাংলাদেশি তারকা-শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু, আঁখি আলমগীর, নাশিদ কামাল, স্বপ্নীল সজীব কিংবা ভগিরথ মালো।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক আয়োজন ‘যোধপুর পার্ক উৎসব’-এ গতকাল (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে রাতের সংগীতানুষ্ঠানের এই তারকা-শিল্পীদের অংশগ্রহণ ছাড়াও দিনভর নানা আয়োজন ছিলো চোখে পড়ার মতো।
রাত নটায় ব্যান্ডশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু মঞ্চে উঠেন। ‘সেই তুমি’, ‘একটি কিশোর ছেলে’, ‘তারা ভরা রাতে’-সহ জনপ্রিয় নয়টি গান পরিবেশন করেন এবি। এছাড়াও, তাঁর গীটারের মূর্ছনা শীতের রাতে উত্তাপ ছড়ায় আগত শ্রোতাদের হৃদয়ে।
৯ ডিগ্রির কাছে নেমে যাওয়া পারদ উপেক্ষা করে মঞ্চের সামনে গান শুনতে আসা কলকাতার দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জানান আইয়ুব বাচ্চু।
এর আগে লালনশিল্পী ভগিরথ মালোর লালন গানের মধ্য দিয়ে সংগীতানুষ্ঠানের সূচনা হয়। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শ্রোতারা ভক্তিমুলক লালনসংগীত উপভোগ করেন। এরপরই আসেন আব্বাস উদ্দিন-এর পরিবারের সদস্য ড. নাশিদ কামাল। মন জয় করা কিছু গান শুনিয়ে শ্রোতাদের আবেগে ভাসিয়ে দেন তিনি। এরপর মঞ্চে ওঠেন আধুনিক গানের শিল্পী আঁখি আলমগীর। একের পর এক জনপ্রিয় গান শুনিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন তিনি।
সংগীতানুষ্ঠানের আগে সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা ও আলোচনা পর্বে দিবসের মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন আয়োজকরা। মঞ্চে বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব ও আবেগের কথা জানান কলকাতার বিশিষ্টজনরা।
সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বললেন, “আমি আজও বাংলাদেশকে আমার দেশ বলেই মনে করি।” পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, তিনি বাংলাদেশকে কোনও দিন আলাদা ভাবতে পারেন না, কারণ তাঁর মায়ের বাড়ি ফরিদপুরে।
কলকাতা বই মেলার পর এই প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে পশ্চিমবঙ্গের একটি সামাজিক উৎসবে পৃথকভাবে “বাংলাদেশ দিবস” উদযাপন করায় আয়োজকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান।
বাংলাদেশ দিবস আর সেখানে বাংলাদেশি পিঠা থাকবে না তা কি হয়? তাই উৎসবে বসেছে বাংলাদেশি শীতের পিঠার একাধিক স্টল। পুলি, ভাপা, পাটিসাপটা, ক্ষীরের পিঠা দেখে যে কারোই জিহ্বায় পানি আসবে।
আর বাংলাদেশ মানেই তো মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ মানেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের আলোকচিত্র নিয়ে উৎসবে বিশেষ একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও ছিল এদিনের অন্যতম আকর্ষণ। আর ওই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের নগর ও পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান ও কলকাতার মেয়র পারিষদ রতন দে।
গত ৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
Comments