সালেহিনের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে জেএমবি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম

বেশ কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর নতুন নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার জানান, দুই মাস আগে সালাউদ্দিন আহমেদ ওরফে সালেহিনকে সংগঠনের আমির ঘোষণা করেছে জেএমবি। তারা এখন ডাকাতি করে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে হামলার প্রায় দুই মাস পর জঙ্গিদের নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টার কথা জানা গেল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো পুরনো জেএমবির শাখা ‘নব্য জেএমবি’কে এই দুই হামলার জন্য দায়ী করেছে।

 

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে সালেহিনসহ শীর্ষ দুই জঙ্গি রাকিব হাসান রাসেল ওরফে হাফিজ মাহমুদ ও জাহিদুল ইসলাম ওরফে ‘বোমা’ মিজানকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সহযোগীরা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ধারনা, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত ছিল সালেহিনের। গত ২৫ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁওয়ে একটি জঙ্গি আস্তানায় কলকাতা পুলিশের অভিযানের সময় সে অল্পের জন্য পালিয়ে গেলেও ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আনোয়ার হোসেন ফারুক তখন ধরা পড়ে। এর আগে জেএমবির সিলেট-ময়মনসিংহ অঞ্চলের দায়িত্বে ছিল সালেহিন। জামালপুরে খ্রিষ্টান যুবককে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

 

পুলিশের ধারনা, বোমা বিশেষজ্ঞ ‘বোমা’ মিজানও ভারতে লুকিয়ে আছে। আর খুলনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা জেএমবি কমান্ডার হাফিজ মাহমুদ পুলিশের অপারেশনে মারা গেছে।

 

সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মনিরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, অর্থ সংগ্রহ করতে সম্প্রতি বেশ কয়েক জায়গায় ডাকাতি করেছে জঙ্গিরা। এসময় তিনি নরসিংদীতে একটি ডাকাতির ঘটনা উল্লেখ করেন যার কিছুদিনের মধ্যেই ওই এলাকায় সন্দেহভাজন চার জেএমবি সদস্য ধরা পড়ে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, সাত থেকে আটটি বাড়িতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল দলটি। তারা টাকা ও সোনার গয়না লুট করত। একজন বিকাশ কর্মীর কাছ থেকেও টাকা ছিনতাই করেছিল তারা।

 

ডাকাতি করে সংগ্রহ করা অর্থের একটি বড় অংশই সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমির আল-তাসনিম নাহিদকে জামিনে মুক্ত করতে ব্যয় করেছিল তারা। ২০১৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ছয় জন সহযোগীসহ তাসনিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তাসনিমকে জামিনের মাধ্যমে ছাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এটা জানার পরই সতর্ক হই আমরা। জেএমবির বর্তমান শক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে এখনো বেশ কিছু সক্রিয় সদস্য রয়েছে জঙ্গি সংগঠনটির। ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাসে শায়খ আব্দুর রহমান জেএমবি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশে তালেবান কায়দায় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে গোপনে সশস্ত্র তৎপরতা শুরু করে তারা।

 

Click here to read the English version of this news

Comments