মাশরাফিকে নিয়ে যত কাণ্ড!

মাশরাফি
মাশরাফিকে নিয়ে যত কাণ্ড!

আফগানিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটা যেন ছিল একটা অঘোষিত ফাইনাল। মিরপুর স্টেডিয়াম তখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। প্রায় ২০,০০০ সমর্থক গলা ফাঁটিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে স্বাগতিক দলকে। যদিও প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান যারা এখনও আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেনি, তবু সিরিজ জেতার জন্য এই ম্যাচটা জিততেই হত বাংলাদেশকে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তখন ১-১ এর সমতা।

মাঠে-গ্যালারিতে তখন এমন উত্তেজনা ছড়িয়েছে যে দেখে মনে হতে পারে বাংলাদেশ কোন বড় দলের সঙ্গে খেলছে- যেমনটা খেলেছিল গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা- ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে।

তবে খেলার ফলাফলকে ছাপিয়ে গেছে আসলে দুটো ঘটনা। অন্তত সমর্থকদের মনে এই দুই ঘটনা যেমন আগ্রহ-দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে, খেলার ফলাফল হয়তো তেমন একটা প্রভাব ফেলেনি দর্শকদের মনে। মাশরাফি তাঁর দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটি করার জন্য যখন দৌড় শুরু করলেন তখন ঘটলো প্রথম ঘটনাটি। ঠিক তার আগের বলে আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে দূর্দান্ত এক ইন সুইঙ্গারে বোল্ড করেছেন ম্যাশ। স্টেডিয়ামের সবাই তখন ‘মাশরাফি-মাশরাফি’ বলে চিৎকার করছে।

বল ছোঁড়ার ঠিক আগের মুহুর্তে পা ফস্কে মাশরাফি পড়ে গেলেন মাটিতে। হঠাৎ করেই যেন থেমে গেল এই চিৎকার। ডান পা পিছলে গোড়ালি প্রায় মচকে ফেলেছেন তিনি। মাটিতে শুয়ে আছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।

মাঠের সব খেলোয়াড় দ্রুত ছুঁটে গেলেন তাঁর দিকে। একজন প্রায় সঙ্গে সঙ্গে খুলে ফেললেন মাশরাফির মোজা। বাংলাদেশ দলের ফিজিও দৌড়ে মাঠে ঢুকলেন মাশরাফির অবস্থা দেখার জন্য। যদিও ম্যাশ ইশারা করে তাঁকে জানালেন আঘাত তেমন গুরুতর নয়।

ফিজিও দ্রুত দেখে নিলেন মাশরাফির অবস্থা- জানালেন তিনি খেলা চালিয়ে যেতে পারেন।

“এই ওভার শেষ করেই মাঠ থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিৎ ম্যাশের,” যেন বিলাপ করে বললেন একজন সাংবাদিক। “এই অবস্থায় তাঁর খেলা চালিয়ে যাবার প্রয়োজন কি? সামনে আমাদের একটা বড় সিরিজ আছে,” আরেকজন বললেন।

কিন্তু খেলা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে যখন মাশরাফিকে জিজ্ঞেস করা হল তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন কেমন?- ক্যারিয়ারে অনেকগুলো অস্ত্রপাচারের অভিজ্ঞতার অধিকারী ম্যাশ বাঁকা হাসি হাসলেন।

“পড়ে যাওয়ার পর আমি ছোট রান আপে বল করা শুরু করি। ঠিক এই মুহুর্তে আঘাতটা কি অবস্থায় রয়েছে জানিনা তবে জায়গাটা ফুলে আছে। আশা করছি ব্যাথাটা চলে যাবে, সব ঠিক হয়ে যাবে,” জবাব দেন মাশরাফি।

তারপর তিনি কথা বললেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের স্তব্ধ করে দেয়া দ্বিতীয় ঘটনাটি নিয়ে।

৩০ ওভারের দিকে ভিআইপি গ্যালারির দিক থেকে এক যুবক দৌড়ে মাঠে ঢুকে মাশরাফির দিকে ছুটে গেলেন। ম্যাশ তখন মিড-অনে ফিল্ডিং করছেন। ঐ যুবক মাঠে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই তার পেছনে দৌড়াতে শুরু করলেন ছয়-সাত জন নিরাপত্তা কর্মী।

ঘটনাটি প্রথম যখন মাশরাফির চোখে পড়লো, তিনি লাফিয়ে একটু পিছিয়ে গেলেন। কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই দেখা গেল তাকে জড়িয়ে ধরেছেন ম্যাশ, নিরাপত্তা কর্মীদের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে চাইছেন তিনি, তাঁদের বলছেন শান্ত হতে।

“আসলে এমন ঘটনা সারা পৃথিবিতেই ঘটে। বাংলাদেশে সম্ভবত এটাই প্রথম। সে আমাকে এসে বললো যে সে আমার ভক্ত। আমি এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই দেখছি। আশা করছি তার খারাপ কিছু হবেনা,” বলেন মাশরাফি।

আজ সকালে পুলিশ জানিয়েছে ঐ যুবককে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে। তার পরিচয় সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার জন্যই এই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে মিরপুর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ঐ যুবক অবশ্য দাবি করেছেন তিনি মাশরাফির একজন ভক্ত।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam threatens int'l legal action against govt over asset freezing: FT

Alam says his family's bank accounts were frozen, they were subjected to travel bans, and they lost control of their companies, all while facing investigations for alleged money laundering without formal notification.

1h ago