এক্সপ্লেইনার

রাশিয়ার ‘নিউক্লিয়ার ডেড হ্যান্ড’ আসলে কী

রয়টার্স ফাইল ছবি

সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের 'অত্যন্ত উসকানিমূলক' মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে রাশিয়ার কাছাকাছি 'উপযুক্ত জায়গায়' মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সংখ্যায় যা প্রায় ১০ হাজারের আশপাশে হতে পারে। দুই দেশেরই পারমাণবিক সাবমেরিনের বিশাল বহর রয়েছে।

তবে ট্রাম্প এটা স্পষ্ট করেননি যে সাবমেরিনগুলো পারমাণবিক শক্তিচালিত, নাকি পারমাণবিক অস্ত্রবাহী। মার্কিন সামরিক প্রটোকল অনুযায়ী, সাবমেরিন দুটি ঠিক কোথায় মোতায়েন করা হয়েছে, সে বিষয়েও কিছু বলেননি তিনি।

গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, 'হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যা আমরা সংগত মনে করিনি। তাই আমাকে খুব সতর্ক থাকতে হচ্ছে। আমাদের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে এটি করেছি। রাশিয়ার এক সাবেক প্রেসিডেন্ট এই হুমকি দিয়েছেন। আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব।'

ক্রেমলিন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর মস্কোর শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে।

কী বলেছিলেন মেদভেদেভ

২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকা দিমিত্রি মেদভেদেভ চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে 'রাশিয়ার সঙ্গে আলটিমেটাম খেলা' খেলার অভিযোগ আনেন।

সমাজমাধ্যম এক্স/টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, 'প্রতিটি নতুন আলটিমেটাম একটি হুমকি ও যুদ্ধের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।'

গত জুলাইয়ে তিনি ট্রাম্পের আলটিমেটামকে 'নাটকীয়' বলে আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, 'রাশিয়া এসবের পরোয়া করে না।'

গত বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যম টেলিগ্রাম পোস্টে মেদভেদেভ রাশিয়ার 'ডেড হ্যান্ড' হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেন। মেদভেদেভ ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, 'তার উচিত জম্বিদের নিয়ে তার প্রিয় সিনেমাগুলো আবার দেখা এবং "ডেড হ্যান্ড" কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা স্মরণ করা।'

'ডেড হ্যান্ড' ব্যবস্থা কী

'ডেড হ্যান্ড', যা 'পেরিমিটার' নামেও পরিচিত, হলো স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা। রাশিয়ায় এই ব্যবস্থাটি এখনো কার্যকর আছে বলে মনে করা হয়।

এর মূল উদ্দেশ্য—যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আঘাতেই যদি রাশিয়ার শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়, তবুও যেন প্রতিশোধমূলক পারমাণবিক হামলা নিশ্চিত করা যায়।

এই ব্যবস্থাটি ভূকম্পন, আলো, তেজস্ক্রিয়তা ও বাতাসের চাপ মাপার সেন্সরের মাধ্যমে পারমাণবিক হামলা শনাক্ত করতে পারে। সেন্সর যদি পারমাণবিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করে এবং শীর্ষ কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে এই 'ডেড হ্যান্ড সিস্টেম' স্বয়ংক্রিয়ভাবে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।

শান্তির সময় 'পেরিমিটার সিস্টেম' সাধারণত নিষ্ক্রিয় রাখা হয় এবং শুধুমাত্র চরম সংকটময় মুহূর্তে এটি সক্রিয় করার কথা। অয়্যার্ড ম্যাগাজিনের ২০০৯ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, এটি সম্পূর্ণ কার্যকর। প্রয়োজনে রাশিয়া এটি সক্রিয় করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago