ক্লাবগুলোর অর্থসংকটে ফুটবলারদের বাজার মন্দা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দলবদল উইন্ডো বন্ধ হতে আর এক মাসেরও কম সময় বাকি। তবে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর আর্থিক সংকটের কারণে ফুটবলাররা আসন্ন মৌসুমের জন্য উপযুক্ত চুক্তি পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। 

গত মৌসুমের রানার্সআপ আবাহনী লিমিটেড বৃহস্পতিবার থেকেই প্রাক-মৌসুম অনুশীলন শুরু করেছে। ১২ আগস্ট এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কিরগিজস্তানের এফসি মুরাস ইউনাইটেডের বিপক্ষে লড়বে তারা। তবে এএফসি ক্লাব খেলতে যাওয়া আরেক ক্লাব বসুন্ধরা কিংস এখনো খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনা পর্যায়ে, আলোচনার পর্যায়ে অন্য সব ক্লাবও। 

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই ফুটবলাররা ক্লাবগুলো থেকে ভালো পারিশ্রমিক পেতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক ক্লাবই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা রদবদলের কারণে পূর্বে সম্মত বেতন কমাতে বাধ্য হয়।

শেখ জামাল এবং শেখ রাসেলের মতন ক্লাব শীর্ষ স্তরের লিগ থেকে সরে যাওয়াতেও অনেক পরিচিত ফুটবলারকে নামমাত্র পারিশ্রমিকে খেলতে বাধ্য করেছে। মাসুক মিয়া জনি, মাতিন মিয়া এবং বিপলু আহমেদ-এর মতো জাতীয় দলের কিছু খেলোয়াড় কোনো ক্লাবের সাথে চুক্তি না করে পুরো মৌসুমই বসে ছিলেন।

গত মৌসুম ২৯ মে শেষ হয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্লাবই আসন্ন মৌসুমের জন্য দল গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহে এখনও হিমশিম খাচ্ছে। ফলস্বরূপ, ফুটবলাররা গত বছরের তুলনায় কম পারিশ্রমিক পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন।

একটা ভালো চুক্তির আশায় থাকা সাবেক জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'খেলোয়াড়দের জন্য পরিস্থিতি মোটেই ভালো না। বেশিরভাগই ক্লাবগুলো থেকে ভালো প্রস্তাব পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। আমার প্রাক্তন ক্লাব ব্রাদার্স ইউনিয়ন আমাকে ধরে রাখবে কিনা, সেটাও আমি নিশ্চিত নই। একজন পেশাদার ফুটবলারকে বুট, আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র এবং খাবারের জন্য প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়।'

জাতীয় দলের ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন এবং তপু বর্মণ জানান যে তাদের গত মৌসুমের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস আসন্ন মৌসুমের জন্য এখনও আলোচনা শুরু করেনি। তারা আশা করেন আগামী সপ্তাহে আলোচনা হতে পারে।

সাদ বলেন, 'যতদূর জানি, বেশিরভাগ ক্লাবই কম বাজেটের দল গঠনের পরিকল্পনা করছে। তার মানে খেলোয়াড়দের আবারও কম পারিশ্রমিক মেনে নিতে হবে, এবং আমাদের আসলে খুব বেশি বিকল্প নেই।'

তিনি জানান, 'অনেক খেলোয়াড় গত মৌসুমের পুরো পারিশ্রমিকও পাননি।'

তপু বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি খেলোয়াড়দের জন্য খুবই কঠিন। গত মৌসুমে আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমি মনে করি ফুটবলারদের আরও ভালো চুক্তি প্রাপ্য, বিশেষ করে দেশে ফুটবল ধীরে ধীরে যেভাবে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে তা বিবেচনা করে হলেও।'

বেশ কয়েকজন ক্লাব কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, বেশিরভাগ দলই আসন্ন মৌসুমের জন্য তাদের বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
রহমতগঞ্জ এমএফএস-এর কোচ কামাল বাবু দাবি করেন গত মৌসুমে একজন স্থানীয় খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ছিল ১২ লক্ষ টাকা, যেখানে এই মৌসুমে তা সর্বোচ্চ ৮ লক্ষ টাকা হতে পারে।

ফর্টিস এফসি-এর ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের বাজেট গত মৌসুমের চেয়ে ৫০-৬০ লক্ষ কম হবে। আমরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বিসিএল থেকে সাত-আটজন খেলোয়াড় নিয়েছি, যাতে আমরা কম বাজেটে খেলোয়াড়দের স্থান দিতে পারি।'

এছাড়াও, স্কোয়াডে বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচজন অনূর্ধ্ব-২০ খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তির বাধ্যবাধকতা এবং দক্ষিণ এশিয়ার খেলোয়াড়দের চুক্তিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ না থাকাও সিনিয়র খেলোয়াড়দের জন্য কম পারিশ্রমিকের প্রস্তাবের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

1h ago