হাতি-গাধা পায় না তল, মাস্ক বলে কত জল

মার্কিন রাজনীতিতে হাতি-গাধার আধিপত্য দূর করতে চান মাস্ক। প্রতীকী ছবি
মার্কিন রাজনীতিতে হাতি-গাধার আধিপত্য দূর করতে চান মাস্ক। প্রতীকী ছবি

মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। মূলত প্রযুক্তি খাতের এসব প্রতিষ্ঠান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাফল্যের মুখ দেখেছে। তবে তার সর্বশেষ উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যপূরণ অতটা সহজ হবে না বলেই মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি, মার্কিন জনগণের স্বার্থ রক্ষায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। হঠাৎ কী কারণে প্রযুক্তি খাতের দিকপাল থেকে রাজনীতিবিদ হতে চাচ্ছেন মাস্ক, তা নিয়ে এখন আলোচনা, বিশ্লেষণ চলছে।

সিএনএন, আল জাজিরাসহ একাধিক গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন এসেছে।

মাস্কের দল গঠনের মূল কারণ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেসলা সিইও ইলন মাস্ক। ছবি: এএফপি

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারি খরচ সংক্রান্ত 'বিগ, বিউটিফুল বিল'র কড়া সমালোচক মাস্ক।

ট্রাম্পের ভাষায়, এই বিশাল ও অসাধারণ বিলের প্রতিবাদ জানিয়েই সরকারি কর্মদক্ষতা দপ্তর প্রধানের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন মাস্ক। অথচ, এই মাস্ককে তিনিই ডেকে এনে এই পদে বসিয়েছিলেন।

মাস্ক বলেছিলেন, এই ব্যয়বহুল অভ্যন্তরীণ খরচ বিল কংগ্রেসে পাস হলে তার একদিন পরই তিনি 'আমেরিকা পার্টি' নামে নতুন দল গঠন করবেন।

এই 'ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল' ঘিরে তুমুল বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন এক সময়ের ভালো বন্ধু ট্রাম্প ও মাস্ক। এমনকি, মাস্ককে তার জন্মস্থান দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেরত পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার এই বিল চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসে তোলা হয়েছে। শুরুতে কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য এতে আপত্তি জানালেও পরে তারা তাদের মত বদলান। ফলে, খুব শিগগির এটি কংগ্রেসে অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।

ধরে নেওয়া যেতে পারে, প্রতিশ্রুতি অনুসারে মাস্কও তার দল গঠনের ঘোষণা দেবেন।

তৃতীয় পক্ষ হতে চান মাস্ক

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় ছিলেন মাস্ক। ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় ছিলেন মাস্ক। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে যুগ যুগ ধরে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টির শাসন চলছে। এক দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও অন্য দল কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। আবার কখনো কখনো এক দলের হাতেই থাকে হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেসের দখল।

কিন্তু ঘুরে-ফিরে সেই 'হাতি' আর 'গাধা' মার্কাতে ভোট দিয়ে যাচ্ছে মার্কিনিরা—এমন ইঙ্গিত দেন মাস্ক। এটি বাস্তবিক সত্যও বটে।

মাস্কের মতে, সরকারের বাজেট ঘাটতি নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ার পেছনে উভয় দলেরই অবদান আছে। তিনি এমন এক দল গঠন করতে চান, যারা খরচের ক্ষেত্রে 'রক্ষণশীল' থাকবে।

পাশাপাশি, তিনি তার দলের রূপরেখা নিয়ে কিছু আভাস দিয়েছেন। তবে বিস্তারিত জানাননি।

দল গঠনে ঠিক কতটুকু প্রস্তুতি নিয়েছেন মাস্ক ও তার সহযোগীরা, তা নিশ্চিত নয়। মাস্কের রাজনৈতিক উদ্যোগ কমিটি 'আমেরিকা পিএসি'র মুখপাত্রের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করে সিএনএন। তবে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যদিকে, আনুষ্ঠানিকভাবে দল গঠনের আগেই হুমকি দিতে শুরু করেছেন মাস্ক।

এক দীর্ঘ বার্তায় মাস্ক কংগ্রেসের আইনপ্রণেতাদের এক হাত নেন। তিনি বলেন, 'যারা আগে সরকারি খরচ বৃদ্ধির সমালোচনা করেছিলেন পরে তারা ট্রাম্পের 'বিগ বিউটিফুল বিলে' সম্মতি দিয়েছেন। তারা ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে হারবেন। পৃথিবীর বুকে যতদিন আছি, তার মধ্যে এটা যদি আমার শেষ কাজও হয়, তাহলে আমি তা করে যাব।'

'তাদের লজ্জায় দেয়ালে মাথা ঠোকা উচিত,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

'মধ্যবর্তী নির্বাচন' নামে পরিচিত কংগ্রেস নির্বাচনে মাস্ক তার এই হুমকি কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন, সে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউস-ঘনিষ্ঠ দুই রিপাবলিকান নেতা।

একজন বলেন, 'কোনো আইনপ্রণেতাই কংগ্রেসে তার আসন হারাতে চান না।'

'তবে মাস্ক কীভাবে কংগ্রেস নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। দেখেছি, কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি ক্ষমা চেয়ে ট্রাম্পকে ফোন করেছেন।'

বিশ্লেষকরা মনে করেন, রকেট বা বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন মাস্ক, তা রাজনৈতিক দল গঠনের ক্ষেত্রে এত সহজ হবে না।

তৃতীয় দল মার্কিন রাজনীতিতে সাফল্যের মুখ দেখেনি

সাবেক মার্কিন নেতা রস পেরোট। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক মার্কিন নেতা রস পেরোট। ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাস বলছে, তৃতীয় দল মার্কিন রাজনীতিতে এখনো সাফল্যের মুখ দেখেনি। বিশ্লেষকদের মতে, যৌক্তিক ও বাস্তব কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের দুই-দলীয় শাসন ব্যবস্থার প্রতি অন্য কোনো দল তেমন চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। তারা বলছেন—আর্থিক ও আইনগত দিক দিয়ে নতুন দল তৈরি বেশ কঠিন। প্রার্থী পেতেও নতুন দলকে হিমশিম খেতে হবে। ভোটার-সমর্থক পাওয়া তো পরের বিষয়।

সিএনএন'কে এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অ্যালান আবরামোউইৎজ বলেন, 'সাধারণত বড় ক্ষোভ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তৃতীয় দলগুলোর আবির্ভাব ঘটেছে। ব্যাপারটা এমন না যে ধনী মানুষ চাইলেন আর দল তৈরি হয়ে গেল।'

তৃতীয় দল বা প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে সফল ব্যক্তি হলেন মাস্কের মতোই অপর এক ধনকুবের হেনরি রস পেরোট। তিনি ১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে সাফল্য ছিল সীমিত। প্রথমবার তিনি ১৮ দশমিক নয় শতাংশ ও দ্বিতীয়বার আট দশমিক চার শতাংশ পপুলার ভোট পেলেও দুই দফায় একটিও ইলেকটোরাল ভোট পাননি।

দুই নির্বাচনেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বিল ক্লিনটন জয়ী হন।

উভয় নির্বাচনেই দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা। পেরোট তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিলেন।

তিনিও মাস্কের মতো ফেডারেল বাজেটে ভারসাম্য আনার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন।

১৯৬৮ সালের পর মার্কিন নির্বাচনে কোনো তৃতীয় দল, পক্ষ বা স্বতন্ত্র প্রার্থী ইলেকটোরাল ভোট জেতেননি। সে বছর আমেরিকান ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির ব্যানারে জর্জ ওয়ালেস ৪৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছিলেন।

আর্থিক সমস্যায় পড়তে পারে 'আমেরিকা পার্টি'

ফর্বসের তালিকায় সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি হিসেবে শীর্ষেই থাকেন ইলন মাস্ক। কালেভদ্রে অন্য কোনো ধনকুবের তাকে এক-দুই সপ্তাহের জন্য ওই অবস্থান থেকে সরালেও স্থায়ীভাবে সরাতে পারেনি। তা সত্ত্বেও, দল গঠন ও পরিচালনায় আর্থিক সংকটে পড়তে পারেন মাস্ক।

ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও সমর্থক জেমস ফিশব্যাক সিএনএন'কে জানান, কংগ্রেসের দৌড়ে মাস্ককে ঠেকাতে তিনি 'সুপার প্যাক' সাজাবেন।

মার্কিন রাজনীতিতে পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (পিএসি) বা প্যাক বলতে এমন একটি রাজনৈতিক কমিটিকে বোঝায়, যে কমিটির দায়িত্ব নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও তাদের প্রচারণা, আইন প্রণয়ন বা অন্যান্য কাজে সেই তহবিলের বণ্টন।

ফিশব্যাক নিজেও এক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে এই 'সুপার প্যাক'-এ ১০ লাখ ডলার দেবেন। এর নাম হবে 'ফুল সাপোর্ট ফর ডোনাল্ড' বা এফএসডি প্যাক।

তিনি আরও জানান, এই সুপার প্যাক ট্রাম্পের বিরুদ্ধাচারণ করে এমন সব ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে কাজ করবে।

ট্রাম্পের লক্ষ্য পূরণে এই প্যাক মাস্কসহ যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করবে বলে মনে করেন তিনি।

আইনি বাধা

মার্কিন রাজনৈতিক দলগুলোকে ফেডারেল নির্বাচন কমিশনের আইন ও নীতিমালা মেনে চলতে হয়। পাশাপাশি, অঙ্গরাজ্যের নিজস্ব আইনও মানতে হয় দলগুলোকে।

আবরামোউইৎজ মনে করেন, 'যে প্রক্রিয়া চালু আছে, তাতে তৃতীয় দলের জন্য সাফল্য পাওয়া মুশকিল।'

ম্যাককেইন-ফেইনগোল্ড বাইপার্টিসান রিফর্ম অ্যাক্ট (২০২২) নামের আইনে রাজনৈতিক দলে আর্থিক অনুদানের সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক ব্যক্তি দলের কাজে সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ ডলার অনুদান দিতে পারেন। ফলে, দলকে সফল করতে হলে মাস্ক এককভাবে অর্থায়ন করে তেমন সুবিধা করতে পারবেন না—সঙ্গে আরও হাজারো সহযোগীর প্রয়োজন হবে।

অ্যাটর্নি ও এফইসি'র সাবেক চেয়ার লি গুডম্যান এই তথ্য জানান।

লি গুডম্যান সিএনএনকে বলেন, 'একজন ধনকুবের চাইলেও নতুন ব্যবসা চালুর মতো করে একটি জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দলের এককভাবে অর্থায়ন করতে পারবেন না। বর্তমান আইনি কাঠামো এ বিষয়টি সমর্থন করে না।'

ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও আছে আইনি বাধা। একেক অঙ্গরাজ্যে একেক নিয়ম, যেমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সংখ্যক সমর্থকের সই না পেলে কোনো দল ভোটে যেতে পারে না।

লি আরও বলেন, 'বর্তমান নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে দুই প্রধান রাজনীতিক দল বিশেষ সুবিধা পায়। এটি বদলাতে হলে আইনও বদলাতে হবে, যাতে বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে।'

রাজনৈতিক বাধা

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

আইনি ও লজিসটিক বাধার পাশাপাশি সবচেয়ে সহজবোধ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে আছে প্রার্থী খুঁজে বের করা ও তাদের পক্ষে ভোট দিতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।

দুই দলের জনপ্রিয়তার পারদ ওঠানামা করলেও এদের উল্লেখযোগ্য ও বড় সংখ্যক অনুগত সমর্থক আছে। তারা সহজে নিজ নিজ দলের প্রতি সমর্থন ছাড়বেন না।

আবরামোউইৎজ মন্তব্য করেন, 'বিশেষ করে, রিপাবলিকানদের অনুগত সদস্য অনেক বেশি। তাদেরকে কোনোভাবেই ট্রাম্পের পাশ থেকে সরানো যায় না।'

'সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে তৃতীয় কোনো দলকে ভোট দিতে মানুষকে রাজি করানো। কারণ, এ ক্ষেত্রে অকাট্য যুক্তি হলো—আপনি ভোট নষ্ট করছেন। এমন একজনকে ভোট দিচ্ছেন, যার নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনাই নেই।'

সম্ভাব্য প্রার্থীরাও থাকবেন সতর্ক থাকবেন বলেও মনে করেন তিনি।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কোনো সদস্য 'আমেরিকা পার্টি'র ব্যানারে ভোটে আসবে না। কারণ, 'ডেমোক্র্যাটরা মাস্ককে ঘৃণা করেন' বলে দাবি করেন আবরামোউইৎজ।

অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা 'স্পষ্ট করে দেখিয়েছেন, তারা মাস্কের তুলনায় ট্রাম্পকে বেশি গুরুত্ব দেন।'

রিপাবলিকান দলের সমর্থকদের মধ্যে ৯০ শতাংশই ট্রাম্পকে পছন্দ করেন। তার সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হন। সিএনএন'র বিশ্লেষক হ্যারি এনটেন ভোটের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ কথা জানিয়েছেন।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠন না করলেও 'সুপার প্যাক' গঠন করে মার্কিন রাজনীতিতে রদবদল আনতে পারেন ট্রাম্প। এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে তিনি পছন্দের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচুর তহবিল যোগাতে পারেন।

লি আরও বলেন, 'এককভাবে অথবা সুপার প্যাকের মাধ্যমে অর্থ জুগিয়ে জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারেন এক ধনাঢ্য ব্যক্তি। এটাই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ও আইনসঙ্গত উপায়।'

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

9h ago