ইংল্যান্ডের মাঠে টানা দুই সেঞ্চুরিতে কিংবদন্তিদের কাতারে গিল

স্থায়ী অধিনায়কত্বের প্রথম টেস্টেই দারুণ সেঞ্চুরিতে রাঙান শুবমান গিল, যদিও পরে তার দল হেরে যায়। ভারতের তরুণ অধিনায়ক এজভাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টেও করলেন সেঞ্চুরি। এতে করে অন্যরকম এক রেকর্ডে মহারথিদের পাশে নাম উঠে গেল তার। ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজের প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় টেস্টে সেঞ্চুরি করা নবম বিদেশি অধিনায়ক হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি।
বুধবার এজবাস্টনে প্রথম দিনের খেলায় শেষে গিল অপরাজিত আছেন ১১৪ রান। ইনিংসটি হেডিংলিতে প্রথম টেস্টে তার ১৪৭ রানের ইনিংসের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এর মাধ্যমে তিনি ডন ব্র্যাডম্যান, স্যার গারফিল্ড সোবার্স এবং মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের মতো সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের পাশে স্থান করে নিয়েছেন।
গিলের ইনিংসটির সৌজন্যে প্রথম দিনের খেলায় ভারত ৫ উইকেটে ৩১০ রানের শক্ত ভিত গড়ে তোলে, যেখানে ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল সাবলীল খেলে ৮৭ রান করেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ভারত যখন ১৯৯-৩ থেকে ২১১ রানে ৫ উইকেট হারায়। তখন রবীন্দ্র জাদেজা (৪১*) গিলের সঙ্গে ৯৯ রানের একটি দৃঢ় জুটি গড়েন, যা তাদের অবস্থান শক্ত করেছে।
রোহিত শর্মার আকস্মিক অবসরের পর মাত্র ২৫ বছর বয়সে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া গিল কেবল পরিসংখ্যানগত দিক থেকেই নয়, নেতৃত্বের দৃঢ়তার দিক থেকেও এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
দিনের খেলা শেষে জয়সওয়াল বলেন, 'আমি মনে করি সে যেভাবে ব্যাট করছে তা অসাধারণ। তাকে ব্যাট করতে দেখা এবং অধিনায়ক হিসেবেও সে অসাধারণ। আমি মনে করি দলের সঙ্গে তাকে কী করতে হবে সে সম্পর্কে তার মাথায় সবকিছু খুব স্পষ্ট, এবং আমরা কী করতে যাচ্ছি সে বিষয়ে আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী।'
গিলের বীরত্বপূর্ণ ইনিংস সত্ত্বেও, তিনি মনে রেখেছেন যে ব্যক্তিগত মাইলফলক দলের সাফল্য ছাড়া সামান্যই অর্থ বহন করে। প্রথম টেস্টে ভারত বিশাল লক্ষ্য দিয়েও হেরেছিলো - প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ইতিহাসে পাঁচজন ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি থাকা সত্ত্বেও কোনো দল হারার ওটাই এটাই প্রথম ঘটনা - যেখানে ইংল্যান্ড ৩৭১ রান তাড়া করে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
তবুও, গিলের জোড়া সেঞ্চুরি একটি বিরল কীর্তি। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনো বিদেশি অধিনায়ক এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন ২০১৪ সালে, যখন শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস লর্ডস এবং হেডিংলিতে যথাক্রমে ১০২ এবং ১৬০ রান করেছিলেন। তার আগে, ২০০৩ সালে গ্রেম স্মিথের ২৭৭ এবং ২৫৯ রানের টানা দুই ডাবল সেঞ্চুরি ব্যাটিং আধিপত্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
১৯৩৮: ডন ব্র্যাডম্যান (অস্ট্রেলিয়া) ১৪৪*, ১০২*, ট্রেন্ট ব্রিজ এবং লর্ডস
১৯৪৭: অ্যালান মেলভিল (দক্ষিণ আফ্রিকা) ১৮৯, ১১৭, ট্রেন্ট ব্রিজ এবং লর্ডস
১৯৫৩: লিন্ডসে হ্যাসেট (অস্ট্রেলিয়া) ১১৫, ১০৪, ট্রেন্ট ব্রিজ এবং লর্ডস
১৯৬৬: গারফিল্ড সোবার্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ১৬১, ১৬৩*, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড এবং লর্ডস
১৯৭৩: বেভান কঙ্গডন (নিউজিল্যান্ড) ১৭৬, ১৭৫, ট্রেন্ট ব্রিজ এবং লর্ডস
১৯৯০: মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন (ভারত) ১২১, ১৭৯, লর্ডস এবং ওল্ড ট্র্যাফোর্ড
২০০৩: গ্রেম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা) ২৭৭, ২৫৯, এজবাস্টন এবং লর্ডস
২০১৪: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস (শ্রীলঙ্কা) ১০২, ১৬০, লর্ডস এবং হেডিংলি
২০২৫: শুভমান গিল (ভারত) ১৪৭, ১১৪*, হেডিংলি এবং এজবাস্টন
Comments