রংপুর বিভাগে প্রায় ২০ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু, ভালো দামের আশায় খামারিরা

লালমনিরহাটের দুড়াকুটি কোরবানির হাট। ছবি: এস দিলীপ রায়

আসন্ন ঈদুল আজহাতে রংপুর বিভাগের খামারি ও গৃহস্থরা এবার কোরবানির পশুর ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদী। অনেকে বলেছেন, গত বছর তারা আশানুরূপ দাম পাননি।

এখনো বিভাগের জেলাগুলোতে ঈদের পশুর হাট আনুষ্ঠানিকভাবে না বসলেও অনেক এলাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে। খামারি ও চাষিরা হাটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রায় ১৯ লাখ ৮০ হাজার গবাদি পশু প্রস্তুত আছে। তবে কোরবানির জন্য চাহিদা আছে প্রায় ১৪ লাখ ১২ হাজার পশু। পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এগুলো দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রংপুরে দুই লাখ ২৪ হাজার ৭৫২টি পশুর চাহিদা আছে। গাইবান্ধায় এক লাখ ২৬ হাজার ৩০৫, কুড়িগ্রামে দুই লাখ ২২ হাজার ৮৪০, নীলফামারীতে দুই লাখ ২৩ হাজার ১৬৬, লালমনিরহাটে এক লাখ ৭১ হাজার ৭৭৭, দিনাজপুরে দুই লাখ ৬৩ হাজার ৬৪৬, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৫ হাজার ৩৬১ ও পঞ্চগড়ে এক লাখ চার হাজার ৩০০ পশুর চাহিদার কথা জানিয়েছে অধিদপ্তর।

খামারি ও চাষিরা বলছেন, গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে গরু পালা এখন আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে ঘাসের ঘাটতি, অন্যদিকে দানাদার খাদ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে এবার পশুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

লালমনিরহাটের দুড়াকুটি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৫৫) বলেন, 'গত বছর তিনটি গরু বিক্রি করেছিলাম এক লাখ ৬৫ হাজার টাকায়, অথচ আশা ছিল এক লাখ ৮০-৯০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। ভারতীয় গরুর কারণে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। এবার চারটি গরু প্রস্তুত আছে। আশা করছি প্রতিটি গরু ৬৫-৭০ হাজার টাকা করে দাম পাব।'

কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর গ্রামের খামারি জুলহাস হোসেন (৫০) বলেন, 'গত বছর ভারতীয় গরু আসায় আমাদের লোকসান হয়েছিল। এ বছর আটটি গরু প্রস্তুত করেছি, আশা করছি ভালো দাম পাব। তবে খাদ্যের খরচ অনেক বেড়েছে।'

রংপুর ডেইরি ফার্মার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান বলেন, 'রংপুর বিভাগে এবার পর্যাপ্ত গরু ও ছাগল আছে। বাইরে থেকে পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। বরং এখান থেকে উদ্বৃত্ত পশু দেশের অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।'

রংপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. আব্দুল হাই সরকার বলেন, 'এবার পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ থেকে গবাদিপশু আসছে না। সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। ফলে স্থানীয় খামারি ও চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবে। রংপুর বিভাগের আট জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ২৯৫টি হাট বসবে।'

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

13h ago