ট্রাম্পের জ্বালানি রাজনীতি: বদলে যাবে বিশ্ব…

গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে শুল্ক নিয়ে মন্তব্য করছেন। ছবি: রয়টার্স

রাজনীতি এখন গোলকায়নের সূত্রে বাধা। এই গোলকায়নের প্রধানতম নিয়ন্ত্রক হচ্ছে ইনোভেশন বা উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক-সামরিক সক্ষমতা। যেসব দেশ উদ্ভাবনে এগিয়ে, প্রযুক্তিতে উন্নততর এবং অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিধর, তারাই এই গোলকায়নকে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং তাদের ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করছে।

আমেরিকা ও চীন দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকলেও, আমেরিকা সব রকম উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকায় গোলকায়নের আসল কর্তৃত্ব থাকছে তারই হাতে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কোনো আন্তর্জাতিক প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের তোয়াক্কা না করে এককভাবে যে শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন, সেটাই নির্দেশ করছে গোলকায়নের আসল চালক তারাই।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশ দিয়ে এরকম কাজ শুরু করেছেন, আপাতত তাকে 'নির্বাহী আদেশ' মনে হলেও এটা আসলে খুবই সুপরিকল্পিত আমেরিকান নয়াজামানার সূচনা।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার বহু আগে থেকেই আমেরিকার ১০০টি বুদ্ধিবৃত্তিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয়-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমন্বিতভাবে প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে আমেরিকার প্রভুত্ব ফেরাতে 'প্রজেক্ট-২০২৫' শিরোনামে তাত্ত্বিক ভিত্তি হিসেবে নীতিপত্র বানিয়ে বাস্তবায়নের জন্য কাজের বিস্তারিত পদ্ধতিও তৈরি করেছেন। ফলে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে হালকা চোখে 'উন্মাদনা' কিংবা 'খেয়াল' হিসেবে দেখলে ভুল করা হবে। বরং বলা যায়, এটা 'সুপরিকল্পিত' আমেরিকান উদ্যোগ। আমেরিকার ভেতরে এর বিরোধিতা থাকলেও, জনগণের একটা বিশাল অংশের শর্তহীন সমর্থন আছে এই কাজের পেছনে।

ট্রাম্পের এই কাজের বড় প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক জ্বালানি নীতিতে এবং সেটা বদলে দিতে পারে হালের বৈশ্বিক চলমান রাজনীতি ও অর্থনীতি।

ট্রাম্পজামানার নয়া উদ্যোগ

চলমান জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ক্রমশ ক্লিন এনার্জি বা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাত্রার পথেই ছিল আমেরিকা। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে ইউটার্ণ নিয়ে জ্বালানি নীতিতে মৌলিক পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদনের নীতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জ্বালানি ক্ষেত্রে তিনি যা ভাবছেন ও যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন—

১. ক্ষমতায় এসেই নির্বাহী আদেশে সই করে নিজেদের কয়লা উত্তোলনের মাধ্যমে আরও বেশি করে কয়লাভিত্তিক, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার দিকেই যাত্রা শুরু করেছেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ, একসময় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনই মার্কিন বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ছিল। অথচ নির্ভরযোগ্য বেসলোড বিদ্যুৎ সরবরাহে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা দুর্বল করা হয়েছে। বিশাল ভর্তুকি দিয়ে এবং রাষ্ট্রীয় আদেশের মাধ্যমে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে। যেটা বিদ্যুৎ গ্রিডকেও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

২. ট্রাম্পের অভিযোগ, আমেরিকার জীবাশ্ম জ্বালানিমুখি অতীতকে পরিবর্তন করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিমুখি করা হয়েছে, যেটা আমেরিকার স্বার্থকে বিঘ্নিত করেছে। বিশেষ করে ওবামা ও বাইডেন প্রশাসনের কঠোর নিয়ন্ত্রণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেছিল। ওবামা প্রশাসন ২০১৫ সালে 'ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান' চালু করে, যাতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে অপসারণের বা অবসায়নের ব্যবস্থা তরান্বিত হয়।

৩. ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, ২৫ বছর আগে আমেরিকার ৫০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ হতো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে, এখন যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ শতাংশে।

কঠোর পরিবেশগত আইনি নিয়ন্ত্রণ, কম খরচে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ, বায়ু ও সৌরবিদ্যুতের জন্য ব্যাপক ফেডারেল ভর্তুকি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের জন্য প্রতিযোগিতা কঠিন করে তোলে।

ফলে, ২০১৫ সালে ব্যবহৃত বিদ্যমান মার্কিন কয়লা বহরের প্রায় ৪০ শতাংশ ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বন্ধ হয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে আমেরিকার কয়লাকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা যেখানে ছিল দুই লাখ ৮৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার মেগাওয়াটে। অন্যদিকে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ১২০টিরও বেশি কয়লাচালিত উৎপাদন ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৪. আমেরিকার বেশ কয়েকটি রাজ্যের আইন আছে যা জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য কঠোর এবং এর মধ্যে কয়লাও অন্তর্ভুক্ত। অনেক আইন অনুযায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের জন্য জরিমানা করা হয়। ট্রাম্প সেসব আইন অবসান করতে মরিয়া।

৫. ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আমেরিকার বৈদ্যুতিক গ্রিডের নির্ভরযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ। বিপুল পরিমাণ বায়ু ও সৌরশক্তি গ্রিড অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে  সতর্ক করা হয়েছে, কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাস কেন্দ্রগুলোর অবসর গ্রহণের ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিতে পারে—বিশেষ করে শীতকালে, যখন বায়ু ও সৌরশক্তি উৎপাদন কম থাকে। বলা বাহুল্য, বহু রাজ্যে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের জন্য ব্যাপক ভর্তুকি দেওয়ার কারণে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

৬. যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন মিশ্রণে কয়লা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ট্রাম্প একটি বিস্তৃত নির্বাহী আদেশে সই করেছেন।

এই আদেশে বিদ্যমান কয়লা কেন্দ্রগুলো সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফেডারেল রাজ্য কর্তৃক বাস্তবায়িত পরিবেশগত নিয়মাবলী বাতিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কয়লার জন্য ফেডারেল রাজ্যের জমি লিজ দেওয়া বন্ধ ছিল, সেটাও চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৭. বিশ্বের বৃহত্তম প্রমাণিত কয়লা মজুদ আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই কয়লাকে বেজ লোড হিসেবে ব্যবহার করতে চান। আমেরিকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্র (এআই ফিল্ড) বৃদ্ধি এবং তা উৎপাদনের জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবিলায় সাশ্রয়ী মূল্যের নির্ভরযোগ্য বিদ্যুতের জন্যও কয়লার ওপর নির্ভরতা বাড়াতে চান তিনি।

৮. গ্রিড রক্ষা করতে এবং এআই ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়তা করার জন্য ট্রাম্প বিদ্যমান কয়লা কেন্দ্রগুলোকে অনলাইনে রাখার জন্য জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করছেন।

৯. ট্রাম্প দেশের কয়লা শিল্পকে চাঙ্গা করতে নির্বাহী আদেশে সই করে বন্ধ হতে চলা কয়লা কেন্দ্রগুলো চালুর প্রচেষ্টার নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিবেশগত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও কার্বন নির্গমনকে কমিয়ে আনার জন্য প্রণীত রাজ্য আইনগুলো শনাক্ত করে তা বাতিলের ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন।

১০. যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গ্রিডে প্রায় ৪০ শতাংশ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কেননা, প্রথমে বায়ু ও সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে প্রাধিকার দেওয়া হয়।

পরিবেশগত ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি অনুকূল আইন নিয়ন্ত্রণমুক্তকরণ এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নিয়ে এই সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। কারণ, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো দ্বিগুণ সময় কাজ করতে সক্ষম। দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর খরচ কমবে। ট্রাম্প সরকার এই নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে।

ট্রাম্প আদেশে সই করার পর, মার্কিন জ্বালানি বিভাগ নতুন কয়লা প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ এই খাতের উন্নয়নের জন্য ২০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন যোগানের ঘোষণা দিয়েছে।

১১. এআই ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি বৃদ্ধির কারণে দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। জ্বালানি নির্ভর এআই প্রযুক্তিতে আমেরিকাকে বিশ্বনেতা করার প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতিও কয়লা প্ল্যান্টগুলোকে অনলাইনে রাখার একটি কারণ।

আমেরিকার জ্বালানি বিভাগের লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির মতে, ডেটা সেন্টারগুলোর বিদ্যুতের চাহিদা ২০২৩ সালে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৮ সালের মধ্যে ৬ থেকে ১২ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

১২. নর্থ আমেরিকান ইলেকট্রিক রিলায়েবিলিটি করপোরেশনের এক প্রতিবেদনে প্রাক্কলন করা হয়েছে, ২০৩৪ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিকেন্দ্রিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষমতা এক লাখ ১৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত অবসরে যেতে পারে। যা দেশের বেশিরভাগ অংশে বিদ্যুৎ মজুদ নিরাপদ সীমার নিচে ঠেলে দেবে।

অন্যদিকে এই দশকেই শীতকালে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা এক লাখ ৪৯ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই চাহিদা মেটাতে ট্রাম্পের মূল মনোযোগ এখন কয়লা-গ্যাস-তেলচালিত জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিকাশের প্রতি।

কেন এই বদল

গত কয়েক দশকের চেষ্টায় গোটা পৃথিবীর সম্মতি ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ কার্বন নিঃসরণ কমানো। সেই সংকট উত্তরণে সমাধান হিসেবে স্থির করা হয়েছিল জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাত্রা।

এই চিন্তাকে কেন্দ্র করেই পৃথিবীর সব দেশ তার অর্থনীতি ও রাজনীতির লক্ষ্য স্থির করেছে। একাডেমিয়ার চিন্তা ও উদ্ভাবনের জগতেও তার প্রভাব পড়েছে। চেষ্টা হচ্ছিল কত দ্রুত সাশ্রয়ীমূল্যে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করে মানসম্পন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানি মানুষের কাছে হাজির করা যায়। জ্বালানি যেহেতু বাণিজ্য ও অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু, সেহেতু পৃথিবীর বৈশ্বিক রাজনীতির কাঠামোও সেই চিন্তা মাথায় রেখেই আবর্তিত হচ্ছিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানি রাজনীতির নতুন অভিমুখ যেভাবে আবর্তিত হয়েছে, সেটাকে মোকাবিলা করতে বিশেষত পশ্চিমা বিশ্ব নবায়নযোগ্য জ্বালানিকেই তাদের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

এখন ট্রাম্প তার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়েছেন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিকাশকে ঠেকিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানিকেই মুখ্য করে তোলার ট্রাম্পের নয়ানীতি তাই পুরো পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই, এশিয়া-আফ্রিকাকেও দারুণভাবে উদ্বিগ্ন করছে।

জ্বালানি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সামনে নেওয়ার যে বৈশ্বিক উদ্যোগ ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার যে সমন্বিত বৈশ্বিক আয়োজন ছিল, ট্রাম্প সেটাকে উল্টে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করায় বৈশ্বিক জ্বালানি রাজনীতিতে এক নতুন সংকট হাজির হয়েছে।

পুনশ্চ: ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের প্রধানতম উপলক্ষ হচ্ছে, আমেরিকার কয়লা-তেল-গ্যাস-এলএনজি অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির রপ্তানিবাজারকে পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত করা। আমেরিকার এই জ্বালানিবাণিজ্য কৌশল প্রচলিত জ্বালানিবাণিজ্যে ঘটাবে নয়া মেরুকরণ। বদলে যাবে আন্তসম্পর্কীয় নানা সমীকরণ। বহুরকম নয়া সংকট দেখা দেবে রাজনীতিতে। বহু জায়গায় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। সেটাও বাড়িয়ে তুলবে আমেরিকার সমরবাণিজ্য।

আমেরিকার এই বাণিজ্যের স্বার্থেই বহুদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নির্বাচনসহ ক্ষমতার পালাবদলে পড়বে প্রভাব। বাংলাদেশও তার বাইরে থাকবে বলে মনে হয় না।


শুভ কিবরিয়া: সিনিয়র সাংবাদিক, প্রকৌশলী, জ্বালানি বিষয়ক লেখক

Comments

The Daily Star  | English
road accidents death in Bangladesh April

Road accidents killed 583 in April: Jatri Kalyan Samity

Bangladesh Jatri Kalyan Samity (BJKS), a passenger welfare platform, said that a total of 583 people were killed and 1,202 injured in 567 road accidents across the country in the month of April, citing media reports

2h ago