রোমে যেভাবে হলো যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের পরমাণু আলোচনা

ছবি: রয়টার্স

একটি বাসভবনের আলাদা দুই কক্ষে দুই দেশের প্রতিনিধি দল বসা—এক কক্ষে ইরানি দল, আরেকটিতে মার্কিন। দুই কক্ষ থেকে দুই দল নিজেদের দাবি-দাওয়া, জিজ্ঞাসা, মন্তব্য জানাচ্ছেন। এক কক্ষের বার্তা আরেক কক্ষে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে আছেন মধ্যস্থতাকারী ওমানের কূটনীতিকরা।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ শনিবার ইতালির রাজধানী রোমের ওমান দূতাবাসে এভাবেই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পরমাণু বৈঠক।

ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এটি দুই পক্ষের মধ্যকার দ্বিতীয় বৈঠক। এর এক সপ্তাহ আগে প্রথম বৈঠকটি হয় ওমানের রাজধানী মাস্কাটে।

সেই 'পরোক্ষ বৈঠকে' গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছিল উভয় পক্ষ। শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, প্রথম আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে 'এক ধরনের আন্তরিকতা' লক্ষ্য করেছেন। তবে ওয়াশিংটনের 'উদ্দেশ্য ও অভিপ্রায়' নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

শনিবারের আলোচনাতেও অংশ নেন আরাগচি। অপরদিকে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দিয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে—যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০১৫ সালের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তিও করেছিল বারাক ওবামা প্রশাসন।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে সরিয়ে আনেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ইরানের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, চলমান আলোচনা কেবল তাদের পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। 

আরাগচি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র যদি অযৌক্তিক ও অবাস্তব দাবি না তোলে, তাহলে একটি চুক্তি সম্ভব।'

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতি তাদের সমর্থন প্রসঙ্গেও আলোচনা করতে চায় ওয়াশিংটন। তবে তেহরান তা চাইছে না।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের আগে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে আক্রমণের পরিকল্পনা করছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে পরমাণু স্থাপনায় যৌথ আক্রমণের প্রস্তাব রেখেছিলেন নেতানিয়াহু। কিন্তু তার সেই প্রস্তাব নাকচ করে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত দেন ট্রাম্প।

এদিকে বুধবার ফরাসি সংবাদপত্র লা মনে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানান, পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি চলে এসেছে তেহরান।

Comments

The Daily Star  | English

The end of exemption?

TRIPS waiver end poses dual challenge: legal and technological

19h ago