চট্টগ্রামে থানায় বৈষম্যবিরোধী ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর পাল্টাপাল্টি অবস্থান

উভয়পক্ষ থানায় অবস্থান নেয়। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানায় যাওয়ার পথে ছাত্রদলের একটি গ্রুপ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজনকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীরা আকবার শাহ থানা ঘিরে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাত ৯টায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ছাত্রদলের সদস্যরা থানার বাইরে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা থানার ভেতরে অবস্থান করছিলেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে ছিলেন। আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইফুদ্দিন মারুফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর কাট্টলী আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ এক নারী শিক্ষককে কলেজে আসতে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়। সেই সময় তারা কলেজে ছাত্রদলকর্মীদের প্রবেশ ঠেকাতে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজে গেলে তারাও হামলার শিকার হন।

কলেজ সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদ্য নির্বাচিত তিন সদস্য কলেজে আসেন। সদ্য নির্বাচিত এই তিন সদস্যের একজন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি একজন নারী শিক্ষককে কলেজে না আসার নির্দেশ দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে সিরাজ উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রদলকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।

অন্যদিকে ছাত্রদলের সদস্যরা দাবি করেন, তারা নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর ইট ও পানির বোতল ছুড়ে মারলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে।

আকবরশাহ থানায় অবস্থানরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. রিদওয়ান সিদ্দিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নারী শিক্ষককে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং ক্যাম্পাসে নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ছাত্রদলের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার সময় আমাদের নেতা মারুফকে মারধর করে আহত করেছে।'

ছাত্রদলের আকবর শাহ থানা শাখার সদস্য ফাহিম আহমেদ বলেন, 'নারী শিক্ষক কলেজ পরিচালনা পর্ষদের কিছু বিষয় নিয়ে কিছু সমন্বয়কারীদের এনেছিলেন। আমরা ফুল দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর পানি ছুড়ে মারে।'

এদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা দুই পক্ষকে নিয়ে নিয়ে বৈঠক করে।

আকবার শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও মহানগর ছাত্রদলের নেতারা থানায় বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। আগামী ১৯ এপ্রিল সমন্বিতভাবে সভা হবে বিষয়টি মীমাংসার জন্য৷ আজ রাত ১০টার দিকে দুই পক্ষই চলে গেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

3h ago