মার্চে মূল্যস্ফীতি কতটা বাড়ল

দেশে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় গত মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে—গত মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল নয় দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর আগের মাসে তা ছিল নয় দশমিক ৩২ শতাংশ।
মার্চে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে নয় দশমিক ৭০ শতাংশ হয়। ফেব্রুয়ারিতে ছিল নয় দশমিক ৩৮ শতাংশ। এটি পোশাক, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পরিবহনের মতো পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে আট দশমিক ৯৩ শতাংশ। এটি আগের মাসে ছিল নয় দশমিক ২৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আশা প্রকাশ করে বলছেন, দেশে গড় মূল্যস্ফীতি আগের তুলনায় কমেছে।
২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে মূল্যস্ফীতির চলমান গড় হার আগের মাসের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে কমে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়েছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নমুখী। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম কমতে সময় লাগে।'
তিনি আরও বলেন, 'সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগের কিছু নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে, বিশেষ করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে।'
সংকোচননীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে সুদহারে ঋণ নেয়, তা কয়েক দফা বাড়িয়ে ১০ শতাংশে এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, 'সরবরাহ বাড়াতে সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি ফসলের মৌসুম হওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম এমনিতেই কমছে। তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম কমতে সময় লাগে।'
ভবিষ্যতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি আরও কমতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
'সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও খোলাবাজারে কম দামে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। আসন্ন বাজেটে সে অনুযায়ী বরাদ্দও দিতে হবে।'
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোজার ঈদের আগে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে হয়ত খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।'
'ঈদে মানুষ বেশি বেশি পণ্য কেনায় এমনটা হয়ে থাকতে পারে। ভোগ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। তাই হয়ত খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী।'
তবে মূল্যস্ফীতি এখনো নিম্নমুখী বলে মনে করে তিনি বলেন, 'গত ১২ বা ছয় মাসের গড় হার নিম্নমুখী। আমি মনে করি, এটি ভাল লক্ষণ। যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে তবে ভবিষ্যতে নীতিহারও কমতে পারে।'
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক কাজী ইকবাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মনে হচ্ছে এটা ঈদের প্রভাব। মার্চে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। এটি মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আংশিকভাবে কাপড় ও জুতা দিয়ে বিবেচনা করা হয়। ঈদে এগুলো সবাই কিনতে চান।'
Comments