ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪৯

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল দেশব্যাপী গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন-বিরোধী বিক্ষোভের সময় সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, গাজীপুর ও বগুড়াসহ দেশের কয়েকটি শহরে বাটা শো-রুম ও কয়েকটি রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের জন্য জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ইতোমধ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাহারুল আলম জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশ বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করছে।

'সরকার কোনো ন্যায়সঙ্গত বিক্ষোভে বাধা দেয় না। তবে, প্রতিবাদ কর্মসূচির আড়ালে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না', বলেন তিনি।

খুলনায় গ্রেপ্তার ৩১

খুলনা নগরীতে বাটার শো-রুম ও একটি রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মো. আহসান হাবিব বলেন, ঘটনাস্থলের আশেপাশের ভিডিও ফুটেজ ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গাজীপুরে গ্রেপ্তার ৪

গাজীপুরে কয়েকটি রেস্তোরাঁ, বাটাসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের-লুটপাটের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ সকালে গাজীপুরের গাছা থানার ডিউটি অফিসার নাছরিন আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাদের থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে গাজীপুর মহানগর গাছাখানা বোর্ডবাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ইসরায়েলি আগ্রাসন-বিরোধী মিছিল বের হয়। ওই মিছিলের সুযোগ নিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে তৃপ্তি হোটেল, রাঁধুনি হোটেল এবং বাটা কোম্পানি ডিলারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নাশকতা, ভাঙচুর, লুটপাট ও ক্ষতিসাধন করে। সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঘটনাস্থল এলাকায় অবস্থানরত দুষ্কৃতিকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ পূর্বক দুষ্কৃতিকারী শনাক্ত করে গাছা থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত চারজন দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত ঘটনার উসকানিদাতা, পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাটার বিবৃতি

গতকাল রাতে দেওয়া বিবৃতিতে বাটা বলেছে, 'আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বাটাকে ঘিরে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি মালিকানাধীন বা ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষে রাজনৈতিকভাবে জড়িত। বাটা একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যার যাত্রা শুরু হয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে এবং কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। দুঃখজনকভাবে, এই ভ্রান্ত ধারণার ফলে বাংলাদেশে আমাদের কিছু আউটলেট সম্প্রতি ব্যাপক ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে সকল ধরনের সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই।'

'বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা নিয়ে, ১৯৬২ সাল থেকে বাটা দেশজুড়ে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে চলেছে, গুণগত মান নিশ্চিত করছে। বাটা বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের সম্মান রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবন্ধ', যোগ করা হয় বিবৃতিতে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago