অগ্নিকাণ্ড-বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে হিথ্রো বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ

লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের নিকটবর্তী বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে বড় আকারে অগ্নিকাণ্ড দেখা দিয়েছে। এই ঘটনার জেরে বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। যার ফলে আজ শুক্রবার দিনভর ওই গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও বার্তা সংস্থা এএফপি।
হিথ্রো কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমানবন্দরে 'বড় আকারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট' দেখা দিয়েছে।
'যাত্রী ও আমাদের সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত হিথ্রো বন্ধ থাকবে', বিবৃতিতে আরও বলা হয়।
'যাত্রীদেরকে বিমানবন্দরে না যাওয়ার এবং আরও তথ্যের জন্য নিজ নিজ উড়োজাহাজ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী'।

হিথ্রোর মুখপাত্র বলেন, 'ফায়ার সার্ভিসের ক্রুরা এই দুর্ঘটনার মোকাবিলা করছে। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক ও নির্ভরযোগ্য অবস্থায় ফিরে আসবে, সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।'
তিনি আরও জানান, কর্মীরা 'যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'কোনো অবস্থাতেই' বিমানবন্দরের কার্যক্রম আবারও শুরু হওয়ার আগে যাত্রীদের সেখানে যাওয়া উচিত হবে না।
হিথ্রো যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। প্রতিদিন সেখানে গড়ে প্রায় এক হাজার ৩০০ উড়োজাহাজ ওঠা-নামা করে। গত বছর ওই বিমানবন্দরের টার্মিনালগুলো দিয়ে আট কোটি ৩৯ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছেন, যা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
হঠাৎ করে বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। অসংখ্য ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি অনেকগুলো ফ্লাইটের গতিপথেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইট্রাডার২৪ এই তথ্য জানিয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আগামী কয়েকদিন বিমানবন্দরের সেবা বিঘ্নিত হবে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওয়েস্ট লন্ডনের হায়েস নামের এলাকার ওই সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে শুধু বিমানবন্দরই নয়, আশেপাশের এলাকার হাজারো বাড়িও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আশেপাশের বাড়িঘর থেকে নিরাপত্তার কারণে ১৫০ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড (এলএফবি) জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০টি ফায়ার ইঞ্জিন ও ৭০জন দমকলকর্মী ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ২০০ মিটারের বেষ্টনী দিয়ে এলাকাটিকে ঘিরে রাখা হয়েছে। 'উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ধোঁয়া' থেকে বাঁচতে স্থানীয়দের দরজা-জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে ১৬ হাজার ৩০০ বাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্কটিশ অ্যান্ড সাউদার্ন ইলেকট্রিসিটি।

রাত ১১টা বেজে ২৩ মিনিটে আগুনের বিষয়ে তথ্য জানতে পারে জরুরি সেবাদাতারা। এখনো অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।
এলএফবির অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার প্যাট গৌলবোর্ন বলেন, 'এই ঘটনার জের অনেক সময় ধরে চলবে। কর্মীরা রাতভর ঘটনাস্থলে থাকবেন।'
'সকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করছি। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি ওই এলাকা এড়িয়ে যেতে', যোগ করেন তিনি।
Comments