পোড়াদহ মাছের মেলা: প্রাচুর্য আর ঐতিহ্যের মেলবন্ধন

পোড়াদহ মাছের মেলায় বিশালাকার একটি কাতলা মাছ দেখছেন ক্রেতা। ছবি: অনিক শাহরিয়ার

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ইছামতি নদীর তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মাছের মেলা। শতবর্ষী এই মেলা শুধু মাছের বেচাকেনার উৎসব নয়, পরিণত হয়েছে স্থানীয় ঐতিহ্যের অনুষঙ্গে।

প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার নদীর তীরে এই মেলা বসে। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা বিশালাকার মাছ নিয়ে আসেন। ৩০ কেজি পর্যন্ত ওজনের মাছও দেখা যায় এই মেলায়। এমনকি বিপন্ন বাঘাইড় মাছও বিক্রি হতে দেখা যায় এখানে।

স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী, এই মেলায় জামাইরা তাদের শ্বশুরবাড়ির জন্য বড় মাছ কিনে নিয়ে যান। কে সবচেয়ে বড় মাছটি কিনতে পারবে তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা হয়। শ্বশুর-শাশুড়িরাও তাদের জামাইদের জন্য মাছ কেনার টাকা পাঠান।

ছবি: অনিক শাহরিয়ার

বড় আকারের মাছের পাশাপাশি মেলায় মাছের আকৃতির মিষ্টিও পাওয়া যায়।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ জানান, ভোর থেকেই মানুষজন মেলায় আসতে শুরু করেন। বড় মাছগুলো প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

শুধু মাছ নয়, মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান, খেলনার দোকান, ফল, মসলা এবং অন্যান্য সামগ্রীর দোকানও বসে। এবার প্রায় ৩০০টি মাছের স্টল এবং ৮৫০টি অন্যান্য পণ্যের স্টল বসেছে।

স্থানীয়রা জানান, মেলায় প্রচুর ভিড় হয়। তাই অনেক নারী মেলার প্রথম দিনে আসেন না। তারা আসেন দ্বিতীয় দিনে। দ্বিতীয় দিনের মেলাটিকে 'বউ মেলা' বলা হয়।

ছবি: আনিক শাহরিয়ার

আয়োজকরা জানান, বগুড়ার পোড়াদহ মাছ মেলায় একদিনে প্রায় ৫ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। অন্যান্য জিনিসপত্রও বিক্রি হয় কয়েক কোটি টাকার।

গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলম হোসেন বলেন, 'মেলায় দুই দিনে পাঁচ-ছয় কোটি টাকার মাছ ও অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি হয়। প্রথম দিনে শুধু মাছ বিক্রি হয় তিন-চার কোটি টাকার। মিষ্টি বিক্রি হয় এক-দুই কোটি টাকার। কাঠের আসবাবসহ অন্যান্য জিনিসপত্রও বিক্রি হয়।'

তিনি আরও জানান, 'বউ মেলা'র চল খুব বেশি দিনের পুরোনো নয়। প্রথম দিনে মেলাতে ভিড় বাড়তে থাকায় ১৫-২০ বছর আগে থেকে নারীদের জন্য 'বউ মেলা' চালু করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Malaysia agrees to recruit 'large number' of Bangladeshi workers

Assurance will be given to ensure their wages, safety, and overall welfare, according to ministry officials

2h ago