শেষ বলের বাউন্ডারিতে চিটাগাং কিংসকে ফাইনালে নিলেন আলিস
এক্সট্রা কাভার দিয়ে বল যখন বাউন্ডারি লাইন স্পর্শ করল আলিস আল ইসলাম আর আরাফাত সানি হাতের ব্যাট ছুঁড়ে করলেন বুনো উল্লাস, বোলার মুশফিক হাসান যেন তখন মাটিতে মিশে যেতে পারলে বাঁচেন! কী হয়ে গেল বিশ্বাস করাও কঠিন দর্শকদের। শেষ ওভারে জেতার জন্য চিটাগাং কিংসের দরকার ছিলো ১৫ রান। কোন ব্যাটার ক্রিজে থাকলেও কথা, ক্রিজে ছিলেন কিংসের দুই টেল এন্ডার সানি আর আলিস । নাটকীয়তায় ভরা ওই ওভারে খুলনা টাইগার্সকে হতাশায় ডুবিয়া সমীকরণ মিলিয়ে দিলেন তারা।
বুধবার মিরপুরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ২ উইকেটে জিতেছে চিটাগাং কিংস। আগে ব্যাটিং পেয়ে হেটমায়ারের ৩৩ বলে ৬৩ রানে ভর করে ১৬৩ করে খুলনা। খাওয়াজা নাফের ফিফটির পর সানি-আলিসের ঝলকে ফাইনালে চলে গেল তারা। বিপিএলে এটা চিটাগাং কিংসের দ্বিতীয় ফাইনাল। এর আগে ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরে ফাইনাল খেলেছিলো তারা।
ঘটনায় ভরা শেষ ওভার করতে আসেন মুশফিক হাসান। তার প্রথম বলে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি মারেন সানি। পরের দুই বল থেকে নেন আরও তিন রান। রান নিতে গিয়ে আলিস পড়ে আহত হয়ে বেরিয়ে গেলে ক্রিজে আসেন শরিফুল ইসলাম। তিনি এসে ব্যাটের কানা দিয়ে এক চার পেয়ে যান, পঞ্চম বলে শরিফুল ক্যাচ তুলে আউট হলে শেষ বলে দরকার ছিলো চার। মুশফিকের শেষ বলটা এক্ট্রা কাভার দিয়ে দেখার মতোন শটে সীমানা ছাড়া করেন ক্রিজে ফেরা আলিস, অবিশ্বাস্য এক জয় পেয়ে যায় কিংস।
দলকে ফাইনালে তুলে ৭ বলে ১৭ করে অপরাজিত থাকেন আলিস। ১৩ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন তার সঙ্গে ব্যাট ছুঁটে বাধনহারা উল্লাস করেন সানি।
রান তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই পারভেজ হোসেন ইমনকে হারায় চিটাগাং কিংস। শুরুর এই ধাক্কা বুঝতে দেননি খাওয়াজা নাফে। তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্ক ফিরে গেলেও হোসেইন তালাতকে নিয়ে দারুণ জুটি পেয়ে যান নাফে। তৃতীয় উইকেটে দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৮ বলে ৭০ রান।
২৫ বলে ৪০ করা তালাতকে আউট করে জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। খানিক পর ছন্দে থাকা শামীম হোসেন পাটোয়ারিকেও তুলে নেন নাসুম। দ্রুতই পথ হারায় কিংস। মুশফিক হাসান এসে হানেন জোড়া আঘাত। ৪৬ বলে ৫৭ করা নাফের পর তুলে নেন খালেদ আহমেদকে।
মনে হচ্ছিল দিকহারা কিংস হারতে বসেছে, শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন যখন আউট হলেন কিংসের পক্ষে বাজি ধরার লোক পাওয়া দুষ্কর। দুই টেল এন্ডার এরপর করলেন বাজিমাত। দুই দফায় ১৬ বলে ৩০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন তারা।
সন্ধ্যায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে খুলনা। ৪২ রানে তারা হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। প্রথম চার ব্যাটারের মধ্যে কেবল নাঈম শেখ যান দুই অঙ্ক, তবে তিনিও ছিলেন মন্থর। ২২ বলে ১৯ রান করার পথে বিপিএলের চলতি আসরে পাঁচশো রান করেন নাঈম। দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে বিপিএলের এক আসরে পাঁচশো করেন তিনি।
তবে দল তখন বিপদে, ওই পর্যায়ে ১৩০ রানের আশেপাশে পুঁজির আভাস ছিলো। সেখান থেকে মোড় ঘুরানো জুটি গড়েন হেটমায়ার-মাহিদুল। ৫০ বলে তারা যোগ করেন ৭৩। অঙ্কনের থামার পর হেটমায়ার মূহুর্তেই রান নিয়ে যান চূড়ায়। জেসন হোল্ডারের সঙ্গে যোগ করেন ১১ বলে ৩৩, যাতে ১০ বলেই তার ২৯। শেষ দিকে হোল্ডারও ৫ বলে ১২ করলে শক্ত পুঁজি পেয়ে যায় খুলনা। তবে ওই পুঁজি পরে আর যথেষ্ট ছিলো না।
Comments