তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধে ঢাকাবাসীর তীব্র ভোগান্তি

রেললাইন অবরোধ করে রেখেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেললাইন অবরোধে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মহাখালী থেকে গুলশান-১ নম্বর সড়ক অবরোধ করে এখন তারা মহাখালী রেলক্রসিংয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আলী আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা বা শিক্ষা উপদেষ্টা এসে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না করা পর্যন্ত আমরা অবরোধ চালিয়ে যাব।'

'জনগণের দুর্ভোগের জন্য আমরা মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের এটা করতে বাধ্য করেছে,' বলেন তিনি।

কমলাপুর রেলস্টেশনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে প্রায় সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এখন অন্তত পর্যন্ত অন্তত ১৫টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। তেজগাঁও, ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর স্টেশনসহ বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাখালী রেলগেট পার হতে অধিকাংশ বাস মহাখালী ফ্লাইওভার ব্যবহার করলেও অনেকে ভারী ব্যাগ হাতে নিয়ে হেঁটেই গেট পার হচ্ছেন।

তেজকুনিপাড়ার বাসিন্দা আহসান উল্লাহকে ভারী দুটি ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। তার স্ত্রীর কোলে ছিল তাদের ছয় বছর বয়সী শিশু।

আহসান জানান, গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে যাওয়ার জন্য মহাখালী রেলগেট দিয়ে তাদের বাসে উঠতে হয়। আজ তাদের রিকশা রেলগেটের অপর পাশেই তাদের নামিয়ে দিয়েছে। ফলে শিশু ও ভারী ব্যাগ নিয়ে তাদের বেশ কিছুটা পথ হাঁটতে হচ্ছে।

'শিক্ষার্থীদের উচিত সরকারের কাছে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের দাবি উত্থাপন করা। তারা কেন আমাদের ভোগান্তিতে ফেলছে?', বলেন তিনি।

মহাখালী-গুলশান সড়কে কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। তিতুমীর কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ব্যারিকেডের আগে ও পরের দুপাশে কয়েকজন রোগীকে রিকশা বদল করতে দেখা গেছে।

তবে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীরা আন্দোলনকারীদের সহায়তায় রাস্তা পার হতে পেরেছেন।

ভাড়া নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে রিকশাচালক ও যাত্রীদের তর্কে জড়াতেও দেখা গেছে।

ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

একজন রিকশাচালক অবরোধরত শিক্ষার্থীদের বলছিলেন, কাছেই তার গ্যারেজে রিকশা জমা দেওয়ার সময় পার হয়ে যাচ্ছে, দ্রুত তার সেখানে যাওয়া দরকার। কিন্তু খালি রিকশাটি ছাড়তে রাজি হননি অবরোধরত শিক্ষার্থীরা।

গুলশান-১ এর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শাহজাহান উদ্দিন বলেন, 'এখান অবরোধ নিয়মিত কার্যক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন ইচ্ছে যেকোনো সময় শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে।'

'প্রশাসন কিছুই করছে না। সব মিলিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আর কষ্টের সময় রিকশাচালকরা বেশি ভাড়া আদায় নেয়। সরকার কি জনগণের কষ্ট দেখতে পায় না?', বলেন তিনি।

মধ্যবয়সী দম্পতি রজ্জব আলী ও রাশিদা বেগমকে পায়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। রাশিদার বাম হাতটি তার কনুইয়ের নিচে ব্যান্ডেজ করা ছিল।

ধামরাইয়ের অটোরিকশাচালক রজ্জব বলেন, হাসপাতালের সামনে বাস পাওয়া যায়নি। রিকশাচালকরা তিনগুণ বেশি ভাড়া চাইছে। এখন বাস খুঁজতে মহাসড়ক পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

6h ago