দেশে বছরে মোট মৃত্যুর ১২% ক্যানসারে: গবেষণা
বাংলাদেশে বছরে ১১.৯ শতাংশ মৃত্যুর কারণ ক্যানসার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরম্যাটিকস (ডিপিএইচআই) বিভাগের একটি নতুন জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার রেজিস্ট্রি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, দেশে ৩৮ ধরনের ক্যানসার থাকলেও ফুসফুসের ক্যানসার (১১.৪%), কণ্ঠনালীর ক্যানসার (৮.৫%) এবং পাকস্থলীর ক্যানসার (৫.৭%) মৃত্যুর প্রধান কারণ।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, প্রতি ১ লাখে ১০৬ জনের মধ্যে (পুরুষদের ক্ষেত্রে ১ লাখে ১১৮ জন এবং নারীদের ক্ষেত্রে ১ লাখে ৯৬ জন) ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব ছিল।
আজ শনিবার রাজধানীর বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
গবেষণার প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষক ও বিএসএমএমইউয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরম্যাটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণাটি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা এলাকায় পরিচালিত হয়, যেখানে ডেটা সংগ্রহ শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের জুলাইয়ে। গবেষকরা জাতীয় ক্যানসার রেজিস্ট্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি ফলো-আপ পরিচালিত হয়, যেখানে ৩ হাজার ৪১১টি পরিবারের ৫৮ হাজার ৫৩৯ জন অংশগ্রহণ করেন।
গবেষণায় ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের মোট ২ লাখ ১ হাজার ৬৬৮ জন অংশগ্রহণকারী ছিলেন, যার মধ্যে ৪৮.৪% পুরুষ এবং ৫১.৬% নারী।
গবেষকরা মোট ২১৪ জন ক্যানসার রোগীর খোঁজ পান। এর মধ্যে ৯২.৫% রোগী ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী, ২.৪% ১৮ বছরের নিচে এবং ৫.১% ৭৫ বছরের বেশি বয়সী। গবেষকরা ৩৮টি ভিন্ন ধরনের ক্যানসার শনাক্ত করেন।
গবেষণায় যে পাঁচটি ক্যানসার বেশি দেখা গেছে তার মধ্যে ছিল স্তন ক্যানসার (১৬.৮%), ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যানসার (৮.৪%), পাকস্থলীর ক্যানসার (৭%), কণ্ঠনালীর ক্যানসার (৭%) এবং সার্ভিক্স ক্যানসার (৫.১%)।
নারী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে ১৯ শতাংশের ক্যানসার ছিল প্রজনন সম্পর্কিত, যার মধ্যে ছিল সার্ভিক্যাল (১১%), ওভারিয়ান (৫%) এবং ইউটেরাইন (৩%) ক্যানসার।
গবেষকরা দেখেছেন যে, সব ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে ৪৬% তামাক ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত। ৭৫.৮% পুরুষ ক্যানসার রোগী ধূমপায়ী।
এক বছরে রেকর্ড করা নতুন ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ছিল প্রতি ১ লাখ জনে ৫২.৯ জন।
Comments