নির্বাচন দ্রুত না হলে অন্যান্য শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে: মির্জা ফখরুল

নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, সময়ক্ষেপণ করা হয় তাহলে অন্যান্য শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে শহীদ আসাদের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে  আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, নূন্যতম যে সংস্কার আছে সেই সংস্কারগুলো করে দ্রুত নির্বাচনের পথে যাওয়া উচিত।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তারা বদলানোর চেষ্টা করি কিন্তু দেখা যায় সবসময় আমরা পেরে উঠি না। কারণ প্রতিক্রিয়াশীল যে চক্র আছে সেই চক্র এতবেশি দৃঢ় হয়ে যায় যে বিপ্লবের বা সংগ্রামের সেই ধারাটাকে তারা বদলে দিতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে অনেক কথা উঠছে বিভিন্ন মহলে এবং সেই কথাগুলো এমনভাবে বলা হচ্ছে যে আরও নতুন নতুন তর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা সোজা কথায় যেটা বুঝি সাধারণ মানুষ এটা বোঝেন পরিবর্তনের পরে তারা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চান।

এসময় দ্রুত নির্বাচন দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি বলি, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার। কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে নির্বাচন থেকে আমরা প্রায় ১৫ বছর বঞ্চিত। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন।  এখন জোর করে যদি সেই বিষয়টিকে বিতর্কিত করে ফেলা হয় তাহলে জনগণ আবার তাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।'

'আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি এই ধরনের নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, সময় ক্ষেপণ করা হয় তাহলে অন্যান্য শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।'

তিনি বলেন, 'আমরা বলতে চাই যে নির্বাচনে কে আসবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু জনগণের অধিকারকে তো গুরুত্ব দিতে হবে। সেটার জন্য আমরা লড়াই করেছি।'  

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। স্বাভাবিকভাবে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের পরে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য সমাজের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে সেই অবস্থায় আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না যে আমাদের সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ হবে।

প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন রকম প্রোগ্রাম আছে, কর্মসূচি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'তবে একটা বিষয়ে কিন্তু সবাই একমত যে একটা নির্বাচন হওয়া দরকার। নির্বাচন তো শুধু একটা দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, নির্বাচন একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য একটা পথ সৃষ্টি করা।'

তিনি বলেন, 'প্রশ্ন হচ্ছে সব সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে। তাহলে কি আমরা চার পাঁচ বছর ধরে অপেক্ষা করব বা যতদিন সংস্কার হবে ততদিন ধরে অপেক্ষা করবে জনগণ, যে তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।'

আমলাতন্ত্র নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখনও দেখছি আমলাতন্ত্র আগে যে ব্যবস্থায় ছিল এখনও সেই ব্যবস্থায় সচিবালয় থেকে শুরু করে সমস্ত প্রশাসনে তাদের ভূমিকা পালন করছে। কোনোরকম নড়চড় হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল কলেজে আর সেইধরনের লেখাপড়া আর হচ্ছে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। অতীত থেকেই হয়ে এসেছে এত অল্প সময়ে সেটির পরিবর্তন সম্ভবও নয়। কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তনগুলো চাই। সেই কারণেই আমরা বলেছি নির্বাচন দ্রুত হওয়া দরকার। নির্বাচন দ্রুত হলে যে দল ক্ষমতায় আসবে তার রাজনৈতিক কমিটমেনট থাকবে, তারা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে।

এসময় তিনি গতকাল একটি গণমাধ্যমে আসা তার বক্তব্য নিয়ে বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে তবে একটা নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে নির্বাচনের সময়। কথাটা বলার কারণ আছে। আমরা দেখছি বেশ কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না। আমি তাই অনুরোধ করব, প্রত্যাশা করব আমরা আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সেই নিরপেক্ষতা পালন করবেন এবং দেশে যে সংকট আছে সেই সংকট থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তারা কাজ করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘Count on us for whatever support you want’

Managing Director of Operations at the World Bank Anna Bjerde yesterday reiterated the global lender's support to the interim government for rebuilding Bangladesh

22m ago