সিলেটের শেষের লড়াই ছাপিয়ে ঢাকার দ্বিতীয় জয়
লম্বা সময় দেখশুনে খেলতে থাকা লিটন দাস শেষদিকে তুললেন ঝড়। স্ট্রাইক রেটে তাকে ছাপিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল অধিনায়ক থিসারা পেরেরার ব্যাটও। এতে হঠাৎ রানের চাকা সচল করে প্রায় দুইশর কাছাকাছি রানের পুঁজি পেল ঢাকা ক্যাপিটালস। জবাব দিতে নেমে রনি তালুকদার, জাকের আলী ও অধিনায়ক আরিফুল হক তাড়না দেখালেন। তারপরও লক্ষ্য স্পর্শ করতে পারল না সিলেট স্ট্রাইকার্স।
সোমবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৬ রানে জিতেছে ঢাকা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৯৬ রান তোলে তারা। এরপর শেষদিকে আশা জাগালেও সিলেট পৌঁছাতে পারে ৭ উইকেটে ১৯০ রান পর্যন্ত।
এবারের আসরে ঢাকার এটি নয় ম্যাচে দ্বিতীয় জয়। ৪ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটের হিসাবে ছয়ে উঠে এসেছে দলটি। আট ম্যাচ খেলে সমান পয়েন্ট পাওয়া সিলেট নেমে গেছে সাত দলের প্রতিযোগিতার তলানিতে।
এক পর্যায়ে ছন্দে থাকা লিটনের রান ছিল ৩৭ বলে ৪৫। এরপর রানের গতিতে দম দেন তিনি। ছক্কা মেরে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করা ওপেনার ১৯তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন ৭০ রানে। সবশেষ চার ম্যাচে এটি তার তৃতীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। ৪৮ বল মোকাবিলায় সমান চারটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনি। ছয়ে নামা শ্রীলঙ্কান থিসারা ১৭ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৭ রান করেন। পঞ্চম উইকেটে লিটনের সঙ্গে মাত্র ২৮ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন তিনি। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও নজর কাড়েন থিসারা। ৪ ওভারে ৩১ রানে নেন ২ উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরার পুরস্কার গেছে তার ঝুলিতে।
লিটন ও থিসারার কল্যাণে শেষ ৬ ওভারে ৯৫ রান তোলে ঢাকা। এর আগ পর্যন্ত তাদের ওভারপ্রতি রান তোলার গড় ছিল সাতের একটু ওপরে। শেষভাগে এলোমেলো হয়ে যায় সিলেটের বোলিং। বাকি অংশে নয়টি ওয়াইড ও একটি নো বল করে তারা। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত হিসেবে দেয় ২৫ রান। ঢাকার পক্ষে বলার মতো ইনিংস খেলেন আর তানজিদ হাসান তামিম (১৬ বলে ২২ রান) ও সাব্বির রহমান (২১ বলে ২৪ রান)।
সিলেটের হয়ে অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার টিপু সুলতান ৪ ওভারে ২৬ রানে নেন ২ উইকেট। আফগান সামিউল্লাহ শিনওয়ারি সমানসংখ্যক উইকেট পান ২৭ রানে। একাদশে ফিরলেও বিস্ময়করভাবে বোলিং পাননি অভিজ্ঞ পেসার আল-আমিন হোসেন।
রান তাড়ায় ৩২ রানে ২ উইকেট খোয়ানোর চাপ সামলে নেন রনি ও অ্যারন জোন্স। তাদের ৫৬ বলে ৮০ রানের জুটিতে লড়াইয়ে থাকে সিলেট। আমেরিকান জোন্স তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩২ বলে ৩৬ রান করেন। রনি ৩৩ বলে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়ে থামেন ৬৮ রানে। তিনি ৪৪ বল খেলে মারেন নয়টি চার। দুজনকেই বিদায় করেন থিসারা।
সিলেটের সামনে ছিল শেষ ৬ ওভারে ৮৩ রানের সমীকরণ মেটানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। এরপর জাকের ও আরিফুল মিলে জমিয়ে তোলেন ম্যাচ। তাদের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আসে ১৯ বলে ৪২ রান। ১৯তম ওভারে জাকের আউট হন ১৩ বলে ২৮ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে পাঁচটি চার।
শেষ ৬ বলে সিলেটের চাহিদা দাঁড়ায় ২৩ রানের। নতুন ব্যাটার শিনওয়ারি প্রথম বলে হাঁকান ছক্কা। এরপর হয় ওয়াইড। পরের বলে আসে চার। কিন্তু ঢাকার বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান চাপের মুহূর্তে জ্বলে ওঠেন দারুণভাবে। চতুর্থ বলে তিনি বিদায় করেন আরিফুলকে। ১৩ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কায় আরিফুল করেন ২৯ রান। পরের বলে রানআউট হয়ে যান নন-স্ট্রাইকে থাকা শিনওয়ারি। শেষ বলে সুমন খান চার মারলেও তা আর কাজে আসেনি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচা মোস্তাফিজ ৪৬ রানে শিকার করেন ২ উইকেট।
Comments