জাবিতে ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সভায় হট্টগোল, ভাঙচুর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের পরিচিতিমূলক সভায় হট্টগোল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র জানিয়েছে, নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মী ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।

পরবর্তীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর সভা স্থগিতের ঘোষণা দেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে পরিচিতিমূলক সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত কিছু নেতাকর্মী স্লোগান দিতে দিতে সভা ত্যাগ করেন। তারা কমিটিতে পদ দাবি করেন। পাশাপাশি অভিযোগ তোলেন, কমটিতে ছাত্রলীগ ও শিবির অনুসারী পদ পেয়েছেন।

তারা আরও জানান, এর কিছুক্ষণ পর তারা আবারও ফিরে এসে মিলনায়তনের সবগুলো লাইট বন্ধ করে দেন এবং বাইরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা মিলনায়তনের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনায়তনের লাইটগুলো চালু করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও পদবঞ্চিত নেতা আব্দুল কাদের মারজুক বলেন, 'ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার স্টিমরোলার সহ্য করে গত এক যুগ ধরে আমরা আন্দোলন করেছি। তাদেরকে বঞ্চিত করে যে পকেট কমিটি হয়েছে, সেই কমিটি আমরা মানি না।'

'আমাদের অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে, অথচ ৫ আগস্টের পরও অনেকে প্রোগ্রাম করেনি, তাদের নামও এসেছে এই কমিটিতে। এই কমিটি কীভাবে সভা-সমাবেশ করতে হয় তাও জানে না, আমরা এসেছিলাম এগুলো নিয়ে কথা বলতে। কমিটি এতোটাই অযোগ্য যে, তারা এই পরিবেশটাও তৈরি করে দিতে পারেনি,' অভিযোগ করেন তিনি।

জহির উদ্দিন বাবর বলেন, 'কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল যে, নতুন কমিটির সবাইকে নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক পরিচয় পর্বের আয়োজন করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা আজকের প্রোগ্রামটি আয়োজন করেছিলাম, এখানে মূলত যারা নতুন কমিটিতে আছে, আমরা তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।'

তিনি বলেন, 'এখানে এ রকম কয়েকজন উপস্থিত ছিল যাদের আমরা নাম পরিচয় জানি না, আমরা ধারণা করছি গুপ্ত সংগঠনের ইন্ধনে তারা আমাদের প্রোগ্রাম বানচালের চেষ্টা করেছে। এখানে একটা অংশ ছিল যারা বিরোধী রাজনীতি করেছে, যাদের মধ্যে একটা না পাওয়ার বেদনা ছিল, আমরা সেই বেদনাটা কমিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি, তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে আজকের ঘটনা ঘটেছে।'

'আমাদের বড় একটি কমিটি হয়েছে, এই কমিটির সবার বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছে এখনো নেই। আমাদের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যদি এই কমিটির কারও সঙ্গে ছাত্রলীগ বা ছাত্র শিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া হবে,' বলেন বাবর।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, 'যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আসলেই কাম্য নয়। আমরা চাই, সবাই সুন্দরভাবে সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। ছাত্রসংগঠনগুলো পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েই লাইটের (আলো) ব্যবস্থা করেছি। আশা করব কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার ব্যাপারে সচেতন থাকবে।'

উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদল। কমিটি গঠনের পর এটি ছিল বাদ পড়া সদস্যদের প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর এবং ক্যাম্পাসে ভীতি সৃষ্টির প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা এলাকা থেকে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

Comments

The Daily Star  | English
Reform commission reports' submission

We never got a chance to reform our state and politics like now. Let’s not waste it

Our initial study of the reports of the four commissions indicates that the recommendations are quite substantive.

12h ago