শামিম 'ঝড়' থামিয়ে জিতল খুলনা
এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। তবে সতীর্থদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পারায় বৃথা যায় তার ঝড়ো ইনিংস। উইলিয়াম বোসিস্টো ও মাহিদুল ইসলাম অংকনের ফিফটিতে পাওয়া বড় পুঁজির পর বোলারদের সৌজন্যে দারুণ জয় পেয়ে যায় খুলনা টাইগার্স।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে চিটাগং কিংসকে ৩৭ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৩ রান করে তারা। জবাবে ১৮.৫ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় চিটাগং কিংস।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলীয় ৭৫ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে চিটাগং। এরপর আশাটা টিকে ছিল কেবল শামিমের ব্যাটে। দানবীয় ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৮ বলে খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস। নিজের ইনিংসটি সাজাতে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ের পর খুব বেশিক্ষণ টিকেনি ম্যাচটি।
অথচ প্রথম বৈধ বলের পর চিটাগংয়ের রান ছিল ১৫। প্রথম বলে নাঈম ইসলামকে ফিরিয়েও ফেরানো হয়নি ওসান থমাসের। নো-বল করে শুরু। এরপর করেন আরও দুটি। করেন একাধিক ওয়াইডও। তবে সেই ওভারেই নাঈমকে ফেরান এই পেসার।
চিটাগং শিবিরে বড় ধাক্কাটা দেন আবু হায়দার রনি। একাই চারটি উইকেট তুলে নেন তিনি। পারভেজ হোসেন ইমন, অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও খালেদ আহমেদের উইকেটের সঙ্গে শামিমের উইকেটটিও পান তিনি। মাঝে মোহাম্মদ নাওয়াজ দেন জোড়া ধাক্কা।
হতে পারতো একটি টাইমড আউটও। হায়দার আলী আউট হওয়ার পর মাঠে ঢুকতে কিছুটা দেরি করেন টম ও কোনেল। এমনকি পার হয়ে যায় নির্ধারিত দেড় মিনিট। তখন আম্পায়ারের কাছে আবেদন করেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। আম্পায়ার আউটের সংকেতও দেন।
তবে কি ভেবে তখন মত বদলান মিরাজ। ও কোনেল যখন সাজঘরের দিকে হাঁটা দিয়েছেন তখন ফের ডেকে আনেন তাকে। যদিও জীবন কাজে লাগাতে পারেননি এই প্রোটিয়া ব্যাটার। মোহাম্মদ নাওয়াজের করা সে ওভারে নিজের প্রথম বলেই মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফের হাঁটা দেন তিনি।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে খুলনার সূচনা করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ১৭ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৬ রান করে আলিস আল ইসলামের শিকার হন এই ওপেনার। এরপর অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে সঙ্গে জুটি বাঁধেন প্রায় চার বছর পর স্বীকৃত ক্রিকেট খেলতে নামা বোসিস্টো। ৩৭ বলে স্কোরবোর্ডে ৫১ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার।
মিরাজকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। এরপর দ্রুত ইব্রাহিম জাদরান ও আফিফ হোসেনকে হারায় দলটি। পরে বোসিস্টের সঙ্গে ঝড় তোলেন মাহিদুল। ৩৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৬ রানের জুটি। তাতে চলতি মৌসুমে প্রথম দুইশ পার করা পুঁজি পায় দলটি।
এদিন মাত্র ১৮ বলে ফিফটি করা মাহিদুল চার মেরেছেন কেবল একটি, ছক্কা ছয়টি। ২২ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। যা বিপিএলে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম ফিফটি। এর আগে ২০২৩ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ১৯ বলে ফিফটি করেছিলেন রনি তালুকদার। তবে সবমিলিয়ে এই আসরে দ্রুততম ফিফটি করেছেন সুনিল নারিন (১৩ বলে)।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে বোসিস্টো অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে। ৫০ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। চিটাগংয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আলিস ও খালেদ।
Comments