‘ভারত-চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ’

মো. তৌহিদ হোসেন | ফাইল ছবি সংগৃহীত

ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় দেশগুলোর সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশকে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আজ শনিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'ভারত ও চীনের মধ্যে সংঘাত আছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে এক ধরনের সখ্যতা আছে। আবার এই তিনটি দেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রতিটি দেশে বাংলাদেশের স্বার্থ আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে—ভারত ও চীনের এত শত্রুতার মধ্যেও তাদের বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।'

তৌহিদ বলেন, 'আমাদের আরেকটি স্বার্থ আছে তা হলো—আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমরা যেহেতু প্রধান প্লেয়ার না, তাই আমাদেরকে এক ধরনের ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।'

মিয়ানমার ইস্যুতে তিনি বলেন, 'মিয়ানমারের চারপাশে স্থল সীমান্ত থাকা দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্যাংককে আমি গিয়েছিলাম। সেখানে মূল আলোচনায় তিনটি বিষয় ছিল। সেগুলো হলো—সীমান্ত, মাদক ও অন্যান্য অপরাধ এবং মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ। রোহিঙ্গাদের কথা বলা ছিল না।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তিনি আমন্ত্রণ পেয়ে বলেছিলেন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বার্থ ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না করে এই তিনটি জিনিসের সমাধান করতে পারবেন না।

এটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যান্য চারটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় তৌহিদ হোসেন বলেছেন, 'এখানে যদি তাদের সমস্যার সমাধান আপনারা না করেন, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের জনতাত্ত্বিক অবস্থান অনুযায়ী, অন্তত দুই লাখ তরুণ-তরুণী আছে। তারা আলো দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না। তারা হতাশায় নিমজ্জিত। ফলে তারা হতাশাজনক কাজ করছে—যাতে বাংলাদেশসহ প্রত্যেকটি দেশেরই ক্ষতি হবে। ইতোমধ্যে তার লক্ষণও দেখা গেছে। নৌকায় মানুষ সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, তিনটি বিষয় আমাদের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। তিনটি সমস্যার সমাধানের সঙ্গেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জরুরি। এটি আমাদের অবস্থান।

সীমান্তের শতভাগ নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের প্রতিনিধিকে জানানোর কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের স্বার্থ আমাদেরকে দেখতে হবে। আমাদের স্বার্থ হচ্ছে মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এখন তো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলতে পারছি না। কার সঙ্গে কথা বলব! এটা নিয়েও তো সমস্যা আছে।

'অতীতে যে অঞ্চলগুলো থেকে রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হয়েছেন, আরাকান আর্মির সময়েও তারা বিতাড়িত হচ্ছেন। সেখানে তো মিয়ানমার রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নেই। এই অবস্থায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাউকে ফেরত পাঠাতে পারব এমন আশাও করতে পারছি না। শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তাদেরকে অবশ্যই ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে কারও শান্তি থাকবে না—এটি তাদেরকে স্পষ্ট করে বলেছি,' যোগ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt issues gazette notification banning AL activities

A Public Security Division joint secretary confirmed the matter

1h ago