দক্ষিণ কোরিয়া এখন ‘অতি-প্রবীণদের দেশ’: সমীক্ষা

পাঁচ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে এখন ৬৫ বা এর চেয়ে বেশি বয়সীদের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। ছবি: এএফপি

পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়া 'অতি-প্রবীণ' সমাজে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশটির প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বয়স ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি।

মঙ্গলবার প্রকাশিত কোরিয়ার সরকারি সমীক্ষার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষা অনুযায়ী, পাঁচ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে এখন ৬৫ বা এর চেয়ে বেশি বয়সীদের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশই প্রবীণ।

জাতিসংঘের মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে ৬৫ কিংবা এর চেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যা সাত শতাংশের বেশি হলে  সেই সমাজকে 'প্রবীণ হওয়ার পথে' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই সংখ্যা ১৪ শতাংশের বেশি হলে তা 'প্রবীণ সমাজ' ও ২০ শতাংশের বেশি হলে 'অতি-প্রবীণ সমাজ' হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে।

বর্তমানে বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারের দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২৩ সালে দেশটির জন্মহার ছিল শূন্য দশমিক সাত দুই। জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে একটি দেশের জন্মহার হতে হয় দুই দশমিক এক।

সমীক্ষা অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের মধ্যে ২২ শতাংশ ও পুরুষদের মধ্যে প্রায় ১৮ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার বেশি।

কেবল দক্ষিণ কোরিয়া না, পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশও একইরকম জনসংখ্যা সংকটের মধ্যে রয়েছে। দ্রুত শিল্পায়নের কয়েক দশকের মধ্যে এসব দেশে জন্মহার কমতে শুরু করেছে এবং প্রবীণ জনসংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

ইউরোপের অনেক দেশই এই সংকট মোকাবিলায় অভিবাসনের দিকে ঝুঁকেছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীন সে পথে হাঁটতে ইচ্ছুক না।

এই সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তাতে উল্লেখযোগ্য ফল আসেনি। গত মে মাসে একে 'জাতীয় জরুরি অবস্থা' হিসেবে আখ্যা দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট এ সংকট মোকাবিলায় নতুন একটি মন্ত্রণালয় খোলার প্রস্তাব রাখেন।

জন্মহার কমার পেছনে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কঠোর কর্মসংস্কৃতি, বেতনে স্থবিরতা, জীবনযাত্রার খরচ বাড়া, বিয়ের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ও তরুণ প্রজন্মের হতাশাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গবেষণায় অর্থনৈতিক অনেক কারণ উঠে আসায় দক্ষিণ কোরিয়া সরকার গত ১৬ বছরে এই সংকট মোকাবেলায় ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। সন্তান গ্রহণের জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা, পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোসহ অন্যান্য উদ্যোগে এই সময়ে অন্তত ২০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে তারা। কিন্তু এরপরও জন্মহার ক্রমাগত কমেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Patent waiver till Nov 2026: Local pharmas may miss window for 15 costly drugs

Bangladesh’s pharmaceutical companies risk losing the chance to produce at least 15 costly biologic drugs royalty-free

9h ago