হজ নিবন্ধনে বেশি খরচে ৫১ হাজার কোটা পূরণ হয়নি
আগামী বছরের হজ নিবন্ধনের সময়সীমা গত রোববার শেষ হলেও প্রায় ৫১ হাজার হজ কোটা পূরণ হয়নি।
আশকোনা হজ ক্যাম্পের হজ অফিস সূত্র গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার অধীনে মাত্র ৪ হাজার ৮০০ জন তাদের ব্যাংক পেমেন্ট সম্পন্ন করেছেন এবং বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনায় ৭১ হাজার ৮০০ জন নিবন্ধন করেছেন।
বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ১ লাখ ২৭ হাজার বাংলাদেশি হজ করতে পারবেন। যাদের মধ্যে ১০ হাজার সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকিরা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে পারবেন।
সাড়া না পাওয়ায় সরকার নভেম্বর থেকে নিবন্ধনের সময়সীমা তিন বার বাড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রায় ১৫০০ বেসরকারি হজ এজেন্সির প্ল্যাটফর্ম হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বিপুল সংখ্যক কোটা পূরণ না হওয়ায় তাদের ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে।
বিভিন্ন হজ এজেন্সির কর্মকর্তারা জানান, হজ প্যাকেজের উচ্চমূল্যসহ নানা কারণে মানুষ হজ নিবন্ধন করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একজন বাংলাদেশি হজযাত্রীকে সাধারণ প্যাকেজের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজের জন্য ৭ লাখ টাকা দিতে হয়। সরকারের প্যাকেজ শুরু ৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা থেকে, আরেকটি প্যাকেজে খরচ ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
গত বছরের তুলনায় এসব প্যাকেজের খরচ কমেছে যথাক্রমে ১ লাখ টাকা ও ১১ হাজার ৭১০ টাকা।
তবে হাব নেতারা বলছেন, সরকারি হজ প্যাকেজে ৪০ হাজার টাকার খাবার খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
হাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, 'অধিকাংশ হজযাত্রী প্রবীণ। এ বছর হারাম শরীফ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আবাসন ব্যবস্থা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং।'
তিনি বলেন, সরকার এর মাধ্যমে হজ প্যাকেজের দাম কমানোর চেষ্টা করেছে। সাধারণত, সরকারি হজযাত্রীদের মক্কা ও মদিনায় হারাম শরীফের দেড় কিলোমিটারের মধ্যে রাখা হতো।
বিভিন্ন হজ এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তারাও একই কথা জানিয়েছেন।
হাব জানায়ম আগে একজন হজযাত্রীকে রেজিস্ট্রেশনের সময় ১ থেকে ২ লাখ টাকা দিতে হতো। কিন্তু এ বছর নিবন্ধন সম্পন্ন করতে তিন লাখ টাকা দিতে হচ্ছে, যা মানুষের আগ্রহ না থাকার অন্যতম কারণ।
ফরিদ আহমেদ বলেন, গ্রামে বসবাসকারী লোকেরা গরু বা জমি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করে। অনেকের পক্ষেই একবারে তিন লাখ টাকা ম্যানেজ করা কঠিন।
আল মক্কা ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী খোরশেদুল আলম বলেন, 'আগে মানুষ রেজিস্ট্রেশন করার জন্য হজ এজেন্সি খুঁজত। কিন্তু এ বছর আমরা একাজের জন্য যারা হজ করতে যাবেন তাদের পেছনে ছুটছি। কিন্তু আমরা যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি না।'
তিনি জানান, গত বছর তিনি প্রায় ৩০০ হজযাত্রীকে হজে পাঠালেও এ বছর পেয়েছেন মাত্র ৫৬ জন।
সময়সীমা আরও বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাব বলেছে, অন্যথায় অনেক হজ এজেন্সি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
যোগাযোগ করা হলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ব্যবস্থাপনা জন্য সৌদি সরকার মোট বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা জানানোর জন্য বারবার অনুরোধ করায় সময়সীমা আর বাড়ানো যাচ্ছে না।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
Comments