বাংলাদেশকে ১৬৪ রানে গুটিয়ে দিলেন সিলস-শামার

ছবি: এএফপি ফাইল

ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে মুক্তি মিলল না বাংলাদেশের। অ্যান্টিগায় আগের টেস্টের পর জ্যামাইকা টেস্টের প্রথম ইনিংসেও ব্যাটাররা খাবি খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের বিপরীতে। কোনোরকমে দেড়শ পেরিয়ে অলআউট হয়ে গেল সফরকারীরা। দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারলেন কেবল চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি হলো স্রেফ একটি।

রোববার স্যাবাইনা পার্কে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ১৬৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে তারা খেলতে পেরেছে ৭১.৫ ওভার। এদিন ৪১.৫ ওভারে ৯৫ রান যোগ করতে ৮ উইকেট হারিয়েছে তারা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে জ্বলে ওঠা সিলস ১৫.৫ ওভারে ১০টি মেডেনসহ স্রেফ ৫ রানে পান ৪ উইকেট। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে শামার ৩ উইকেট নেন ৪৯ রানে। তার করা ১৫ ওভারের তিনটি মেডেন। অভিজ্ঞ রোচ আগের দিন মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হককে বিদায় করেন। ১৫ ওভারে তার খরচা ৪৫ রান। আলজারি ১ উইকেট নিতে ১৪ ওভারে তিনটি মেডেনসহ ২৯ রান দেন।

আগের দিনের ২ উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। ধৈর্যের পরিচয় দিতে থাকা অব্যাহত রাখেন সাদমান ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন দিপু। উইকেটে সময় কাটিয়ে দেওয়াতেই মনোযোগ ছিল তাদের। দিনের নবম ওভারে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। তার সিদ্ধান্ত কাজে লেগে যায় দারুণভাবে। ভালো অবস্থান থেকে পা হড়কে এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

কেমার রোচের জায়গায় আক্রমণে গিয়েই সাফল্য পান শামার জোসেফ। তার লেংথ বলের লাইন মিস করে দৃষ্টিকটুভাবে বোল্ড হন অনেকটা সময় ক্রিজে থাকা শাহাদাত। ৮৯ বলে ২২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ভাঙে ১৯৩ বলে ৭৩ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল।

পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন সাম্প্রতিক সময়ে ছন্দের অভাবে ভোগা লিটন দাস। জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করার চেষ্টায় জেডেন সিলসের বলে প্রথম স্লিপে কাভেম হজের তালুবন্দি হন তিনি। ৬ বলে তার রান ১। অ্যান্টিগায় আগের টেস্টে দুই ইনিংসেই প্রতিরোধ গড়া জাকের আলি অনিক টিকতে পারেননি। শামারের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন। অনায়াস ক্যাচ লুফে নেন উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা। ১০ বল খেলা জাকেরের রান ১।

শামারের তৃতীয় শিকার হন প্রতিরোধের লড়াইয়ে থাকা সাদমান। আউটসুইংয়ে পরাস্ত হয়ে তিনিও ক্যাচ দেন জশুয়ার গ্লাভসে। আগের দিন দুবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া ওপেনার এদিন বিদায় নেওয়ার আগে আস্থার সঙ্গে খেলে থামেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রানে। ১৩৭ বল মোকাবিলায় পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি।

৩৯তম ওভারে ২ উইকেটে ৮৩ রানে থাকা বাংলাদেশ ৪৫তম ওভারে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলে ৯৮ রানে। মাত্র ১৫ রান যোগ করতে দ্রুত ৪ উইকেট পড়ার পর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে নতুন করে লড়াইয়ের চেষ্টা করেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের কল্যাণে ৬ উইকেটে ১২২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় টাইগাররা।

১১৬ বল স্থায়ী ৪১ রানের সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙে দ্বিতীয় সেশনে, আলজারি জোসেফের বাউন্সারে। দোটানায় থাকা তাইজুল তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন জাস্টিন গ্রিভসের হাতে। ৬৬ বলে একটি চারে ১৬ রান করেন তিনি। আর ২৫ রান যোগ করতে বাকি ৩ উইকেটের পতন ঘটে।

সিলসকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় হয় তাসকিন আহমেদের। জশুয়ার গ্লাভস ছোঁয়ার পর দ্বিতীয় স্লিপে ঝাঁপিয়ে তার ক্যাচ নেন আলিক আথানেজ। তিনি ১৬ বলে একটি চারে করেন ৮ রান। ওই ওভারেরই শেষ বলে থামতে হয় আগে একবার আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যাওয়া মিরাজকে। শর্ট ডেলিভারিতে পুল করার প্রয়াসে ফাইন লেগে শামারের তালুবন্দি হন তিনি। বেশ সময় উইকেটে থাকা মিরাজ ৭৫ বলে দুটি চারে করেন ৩৬ রান।

নাহিদ রানাকে বোল্ড করে চতুর্থ শিকার ধরেন নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরা সিলস। সঙ্গে সঙ্গে থামে বাংলাদেশের দুর্দশা। ৫ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি নাহিদ। হাসান মাহমুদ অন্যপ্রান্তে অপরাজিত থেকে যান ১০ বলে একটি চারের সাহায্যে ৫ রানে।

Comments

The Daily Star  | English

8.8-Magnitude earthquake in Russia's Far East triggers tsunami

Several people were injured, while much of Japan's eastern seaboard was ordered to evacuate.

14m ago