টটেনহ্যামের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে যত তেতো অভিজ্ঞতা সিটি-গার্দিওলার
জয়ের চেনা পথ যেন একেবারেই ভুলে গেছে ম্যানচেস্টার সিটি! প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার বদল উল্টো এখন তারাই সহজ শিকার। শনিবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ধরাশায়ী হয়েছে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। টটেনহ্যাম হটস্পার ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সিটিজেনদের এটি টানা পঞ্চম হার।
প্রথমার্ধের শুরুর দিকে জেমস ম্যাডিসনের জোড়া গোলে চালকের আসনে বসে পড়ে টটেনহ্যাম। এরপর বিরতি থেকে ফিরে তারা ব্যবধান বাড়ায় পেদ্রো পোরোর লক্ষ্যভেদে। আর দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ব্রেনান জনসন। সাম্প্রতিক সময়ে ধুঁকতে থাকা ম্যান সিটি কয়েকটি ভালো আক্রমণ করলেও কখনোই সত্যিকার অর্থে আশা জাগাতে পারেনি।
অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলা সিটির আচমকা ছন্দপতন হয় গত ৩১ অক্টোবর। টটেনহ্যামের বিপক্ষেই হেরে লিগ কাপ থেকে বিদায় নেয় তারা। এরপর প্রিমিয়ার লিগে টানা দুই ম্যাচে বোর্নমাউথ ও ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নের কাছে পরাস্ত হয়। এর মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্পোর্তিং লিসবনের বিপক্ষে হেরে যায় দলটি।
বিবর্ণ পারফরম্যান্সে বাজে হারে বেশ কিছু তেতো অভিজ্ঞতা হয়েছে শক্তিশালী ম্যান সিটি ও তাদের তারকা স্প্যানিশ কোচ গার্দিওলার। সেগুলো তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য:
* ২০০৮ সালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোচিং করানো শুরুর পর ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম টানা পাঁচটি ম্যাচে হারলেন গার্দিওলা। আর ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো টানা এতগুলো ম্যাচ হারল ম্যান সিটি। সেই সময় তাদের কোচ ছিলেন স্টুয়ার্ট পিয়ার্স।
* অতীতে কখনোই ঘরের মাঠে চার গোলের ব্যবধানে হারেনি গার্দিওলার অধীনে থাকা কোনো ক্লাব। ম্যান সিটিতে বর্তমানে তার নবম মৌসুম চলছে। এর আগে চার মৌসুম স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা ও তিন মৌসুম জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
* ১৬ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কোচ হিসেবে গার্দিওলা এত বড় ব্যবধানে হেরেছেন আর মাত্র তিনবার। ২০১৭ সালে প্রিমিয়ার লিগে এভারটনের কাছে ও ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার কাছে ৪-০ গোলে হেরেছিল ম্যান সিটি। এর আগে ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই বায়ার্নকে একই ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
* ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এটি ম্যান সিটির সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। ২০০৩-০৪ মৌসুমের শুরু থেকে এই মাঠকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করছে তারা। নিজেদের ডেরায় এর চেয়ে বড় ব্যবধানে শেষবার তারা হেরেছিল ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তখন মেইন রোড ছিল তাদের ঘরের মাঠ। আর্সেনাল তাদেরকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ৫-১ গোলে।
* কোচিং ক্যারিয়ারে ৫৩ বছর বয়সী গার্দিওলা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হেরেছেন টটেনহ্যামের বিপক্ষেই। এই নিয়ে নয়বার হারের বিস্বাদ জুটল তার।
* প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ম্যান সিটিই ক্লাব প্রথম ক্লাব যারা সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ হারল। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের শিরোপাধারীদের মধ্যে এমন বেহাল দশা এর আগে হয়েছিল ১৯৫৬ সালে চেলসির। তখন প্রিমিয়ার লিগ পরিচিত ছিল ফার্স্ট ডিভিশন নামে।
Comments