ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধের নবায়ন: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের নবায়ন হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'এখানে ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে আলাদা করা যাবে না। বহু মত, বহু ধর্ম, বহু ভাষা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে হবে।'
উপদেষ্টা বলেন, 'স্বাধীনতার আসল চেতনা ছিল আমি আমার মতো করে দেশটাকে গড়ব। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, এটা ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বলে শব্দটিকে শেষ করে ফেলা হয়েছে। এ কারণে ২০২৪ সালে এ অভ্যুত্থান হয়েছে।'
এ সময় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম তুলে ধরেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন
গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে মন্ত্রণালয় 'রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন' শীর্ষক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের আট শীর্ষ নির্মাতা আট বিভাগে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আটটি "ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট মেকিং" কর্মশালা আয়োজন করবেন।'
তিনি জানান, এর বাইরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান নিয়ে তরুণদের জন্য জনপ্রিয় শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের একটি অ্যালবাম তৈরি করা হবে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান কর্মসূচি পালন করা হবে। একইসঙ্গে বাংলা একাডেমি লেখকদের জন্য সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালার আয়োজন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, 'গত ১৫ বছরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্গবন্ধু—এই দুজনকে দেবতার রূপ দেওয়া হয়েছিল। তাদের মানুষের পর্যায় থেকে দেবতার কাতারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের আবার মানুষের কাতারে নিয়ে আসা হবে।'
তিনি জানান, 'কবি নজরুলকে নিয়ে কুয়াকাটায় নজরুল মঞ্চ করা হবে। রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরের অন্য পাশে বিদ্রোহী চত্বর করা হবে।'
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, 'বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথকে "হিরো" বানাতে গিয়ে অন্যদের অস্বীকার করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে সব অনুষ্ঠান করা হয়েছে। অন্যদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এবার সবাইকে তাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়া হবে।'
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মন্ত্রণালয়ের নেওয়া উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে 'রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন', 'তারুণ্যের উৎসব', 'দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান', 'ডিজিটাল ওরাল হিস্ট্রি প্রকল্প', 'বাংলা একাডেমি সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালা ও গবেষণা প্রকল্প', 'জাতীয় জাদুঘরে আধুনিক ভিডিও প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা স্থাপন' এবং 'শো-ক্রিয়েটর ওয়ার্কশপ'।
Comments