স্বৈরাচার পতনের ১০০ দিন উপলক্ষে বক্তারা

অভ্যুত্থানের অভিপ্রায় থেকে বিচ্যুত হলে বিপর্যয় অনিবার্য

অনুষ্ঠানে কথা বলছেন গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী

স্বৈরাচারী সরকারের পতনের ১০০ দিন উপলক্ষে ঢাকায় গান কবিতা ও আলাপের আসর বসেছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের কনফারেন্স রুমে গতকাল (১৫ নভেম্বর) শুক্রবার বিকেলে এ আসর বসে।

অনুষ্ঠানে গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, 'এই আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন চোখ হারিয়েছেন জীবন হারিয়েছেন তাদের ত্যাগের তুলনায় আমি খুবই নগন্য। কিন্তু তাদের জীবনের বিনিময়ে দেশ সুন্দর করতে হবে, রাষ্ট্র মানবিক করতে হবে। তার জন্য জরুরি গণতন্ত্র। একটা দেশ গণতন্ত্র ছাড়া বিকশিত হতে পারে না।'

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে কবিতা গান প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যদি সমাজের একটা অংশ এতে যুক্ত হয়নি কিন্তু যারা ছিলাম আমরা, সক্রিয়ভাবে ছিলাম। কালচারালি সমাজের ফ্যাসিবাদ দূর না হলে আমাদের আগামী অন্ধকার। তাই নিজেদের জন্য দেশীয় সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা জরুরি। তাহলে জুলাই শাহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। 

সাংবাদিক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন বলেন, 'এক অভ্যুত্থানে রিকশাচালকদের যে ভূমিকা,  এখন কি আমরা তাদের জন্য ভালো থাকার ব্যবস্থা করছি? তাদের কতটুকু মনে রাখছি? এইভাবে সব জায়গায় অভ্যুত্থানের শক্তি সঞ্চার ঘটেনি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং একইসঙ্গে বেদনার।'

অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, 'ইতিহাসকে নতুনভাবে জানার সুযোগ হয়েছে। নিষিদ্ধ বই উন্মুক্ত হয়েছে। প্রজন্মের কাছে সত্য লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, তার দায় রাজনীতির, তার দায় শিক্ষক এবং রাষ্ট্রের। স্বৈরাচার হাসিনার ফ্যাসিবাদ একদিনে দীর্ঘায়িত হয়নি। যেভাবে হয়েছে পুরো চিত্র তুলে আনতে হবে। প্রসঙ্গে আজকের এই অনুষ্ঠান সারাদেশে হওয়া জরুরি। এমন আয়োজন ছড়িয়ে পড়লে মানুষের জাগরণ ঘটবে।'

কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে কতটা পরিবর্তন হয়েছে প্রতিদিনের পত্রিকা দেখলে তা বোঝা যায়। স্বৈরাচার সরকার যেভাবে নিয়োগ দিত এই সরকার যদি সেভাবে চলে তাহলে আমাদের আন্দোলন লড়াই জারি রাখতে হবে। যথাযথ সংস্কার জরুরি, সামাজিক মূল্যবোধ মর্যাদা সম্প্রীতির জন্য গণতন্ত্র ছাড়া উপায় নেই। কবিতা গান শিরোনাম দিয়ে শিল্পকলা ও বাংলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে, গণমাধ্যমের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে।'

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে  কবি ও লেখক ড. সফিকুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাশরুর শাকিল, কবি মামুন সারওয়ার, সাংবাদিক ইয়াসির আরাফাত, সাংবাদিক জামাল রুহানী, অ্যাক্টিভিস্ট সিলমী সাদিয়া, সাংবাদিক জুবাইয়া ঝুমা, ছাত্রনেতা তৌফিক উজ্জামান পিরাচা প্রমুখ কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে গান করেন রিয়াজ শিমুল, কবিতা পড়েন আসিফ মাহামুদ, জিয়া হক, কাজী মারুফ, মিজান পঞ্চায়েত, শাহীন পারভেজ অজন্ত প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্য দেন সাংবাদিক ও লেখক আবিদ আজম। গান কবিতা আলাপের অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তরুণ লেখক জুবায়ের ইবনে কামাল।

Comments

The Daily Star  | English

US-China tariff war punishes Bangladesh

Bangladesh is one of those nations that face pressure from Washington to decouple their manufacturing industries from Chinese suppliers, according to officials familiar with trade negotiations.

11h ago