জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত পূরণ করা হবে: নাহিদ ইসলাম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করা হবে তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন।
আজ সোমবার বিকেলে সচিবালয়ের গেটে বিক্ষোভরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণসহ তিন দাবিতে আজ সকালে শিক্ষাভবন ঘেরাও করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন অন্তত দুই হাজার শিক্ষার্থী।
একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এটা আমাদের ব্যর্থতা যে এখনো কেন শিক্ষার্থীদের রাজপথ থেকে দাবি আদায় করতে হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি হল নির্মাণ এবং নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ। এই ক্যাম্পাসের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে। একনেক ও ক্যাবিনেট সভায় কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। আমরা বলেছিলাম ক্যাম্পাসের জন্য যে জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছিল সেখান থেকে যেন এক ইঞ্চি জমিও কমানো না হয়।'
'ঢাকার মধ্যে একটা বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু তাদের কোনো হল নেই। তাদের শিক্ষাজীবন অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে পার করতে হয়েছে। আমি প্রতিটি ঘটনা জানি কারণ আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জগন্নাথের শিক্ষার্থী আছে। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি যে আপনাদের এখানে আসতে হয়েছে এবং আপনাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়নি,' বলেন নাহিদ।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বারবার বলেছি যে এই আমলাতন্ত্র-সচিবালয় যেন ভুলে না যায় যে কাদের রক্তে, কাদের আত্মত্যাগে তারা আজ ওখানে বসেছে। তাই শিক্ষার্থীদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে এবং যৌক্তিক দাবির প্রতি সম্মান অবশ্যই করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারীদের সেই সম্মান রাখতে হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনো অযৌক্তিক দাবি নিয়ে আসে না। বরং তাদের যে আসতে হচ্ছে, তারা আসার আগে দাবি পূরণ হচ্ছে না, সেটাই আমাদের ব্যর্থতা।'
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, 'যদিও এটা আমার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় না, কিন্তু যখন শুনেছি আপনারা এসেছেন আমি সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়েছি। আমি এসেছি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যিনি নতুন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন তাকে নিয়ে এসেছি। তার আজ প্রথম দায়িত্বের দিন, প্রথম কাজ হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া।'
'আপনাদের যে দাবি, ইউজিসির পাইলট প্রকল্পে যুক্ত করা এবং কাজের ঠিকাদারির বিষয়টা বলেছেন সেনাবাহিনীকে দেওয়া, আমরা অবশ্যই এসব দাবি পূরণ করব। হল তিনদিনে তৈরি করে দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু তিনদিনে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারব। আপনাদের সঙ্গে বসতে হবে কথা শুনতে হবে। ঠিকাদারের সঙ্গে আমরা এখনই কথা বলব এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনাদের দাবি পূরণ করা হবে,' যোগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি হলো- স্বৈরাচার সরকারের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ প্রকল্প পরিচালককে আইনের আওতায় আনা এবং সাত দিনের মধ্যে প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসেবে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসার নিয়োগ, সেনাবাহিনীর হাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তর এবং হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে সুস্পষ্ট রূপরেখা (অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হল) এবং অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার আমলে করা সকল অনৈতিক চুক্তি বাতিল করা।
Comments