শেষ বেলাতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে নিজেদের প্রথম ইনিংসে পৌনে ছয়শ রান করেই ইনিংস ছাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেই পিচে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করে এতো রান করেছে প্রোটিয়ারা, সেই পিচই যেন রীতিমতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জন্য। দিনের শেষ বেলায় নয় ওভার ব্যাটিং করতেই হারিয়ে ফেলেছেন চার ব্যাটারকে। আলোকস্বল্পতায় দিনটা আগেভাগে শেষ না হলে হয়তো আরও বড় বিপদে পড়তে পারতো টাইগাররা।

বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ৩৮ রান করেছে বাংলাদেশ। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৭৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ এখনও ৫৩৭ রান পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা। ইনিংস হার এড়াতেও প্রয়োজন ৩৩৮ রান।

প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়ে নিচে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিদায় নেন সাদমান ইসলাম। যদিও ইনিংস শুরুর আগেই ৫ রান নিয়ে শুরু করে টাইগাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে পিচের মাঝ দিয়ে দৌড়ানোয় বেশ কয়েকবারই সেনুরান মুথুসামিকে সতর্ক করেছিলেন আম্পায়াররা। এরপর ১৪৪তম ওভারে আরও এক দফা হলে ৫ রান পেনাল্টি দেন তারা।

আর ইনিংসের প্রথম ডেলিভারি নো-বল করে শুরু করেন কাগিসো রাবাদা। তাতে আবার পেয়ে যান বাই হিসেবে চার রান। তবে শুরুটা বাজে হলেও প্রথম ওভারেই সাফল্য পেয়ে যান রাবাদা। লেগ স্টাম্পের বাইরে রাখা পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাদমান। শুরুতে আউট দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ বলে কোনো রান করতে পারেননি এই ওপেনার।

ব্যর্থতার বৃত্ত আরও বড় করেছেন জাকির হাসান। রাবাদার বলে কট বিহাইন্ড হয়েছেন তিনি। অথচ বুঝতেই পারেননি বল ব্যাটে লেগেছে তার। উল্টো একটি রিভিউ নষ্ট করে ফিরে আসেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গেলে কানা ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক কাইল ভেরেইনার গ্লাভসে। ৮ বলে ২ রান করে করেছেন জাকির।

এরপর হতাশ করেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। ড্যান পিটারসেনের করা আগের বলেই দারুণ এক ড্রাইভ করে বাউন্ডারি আদায় করে নেন এই ওপেনার। পরের বলটিও ছিল প্রায় একই ধরণের। অফস্টাম্পের বাইরে ফুলার লেন্থ ডেলিভারিতে এবার ব্যাটে বলে ঠিকঠাক সংযোগ করতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো অধিনায়ক এইডেন মার্করামের হাতে। ২১ বলে ১০ রান করেন তিনি।

২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে হাসান মাহমুদকে নামায় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তিনি। কেশভ মহারাজের বলে লাইনেই যেতে পারেননি হাসান। ফলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৭ বলে ৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

হাসানের বিদায়ের পর মাঠে নামেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬টি বলে খেলে একটি বাউন্ডারি মেরে ৪ রানে অপরাজিত আছেন এই ব্যাটার। তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন মুমিনুল হক। ১০ বলে একটি বাউন্ডারিতে ৬ রান করেছেন তিনি। এ দুই ব্যাটারের দিকেই আগামীকাল তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে এদিন ভিয়ান মুল্ডারের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড়ই গড়ে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে সেনুরান মুথুসামির সঙ্গে গড়েন ১৫০ রানের জুটি। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে ১০৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মুল্ডার। ১৫০ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি।

আর ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে অপরাজিত ৬৮ রান করে মুথুসামি। ৭৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। তবে আগের দিনের মতো দিনটা হতাশায় শুরু করলেও প্রথম সেশনের শেষ দিকে তিনটি উইকেট তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর লাঞ্চের পরও দ্রুত পেয়েছিল আরও একটি উইকেট। কিন্তু টাইগারদের হতাশা বাড়ান ওই মুল্ডার ও মুথুসামি।

সকালে স্কোরবোর্ডে দ্রুত আরও ৮৬ রান যোগ করার পর আউট হন ডেভিড বেডিংহ্যাম। তাতে ভাঙে ১১৬ রানের জুটি। ৭৮ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৯ রান বেডিংহ্যাম। তাইজুলকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন টনি ডি জর্জি। ২৬৯ বলে ১২টি চার ও ৪টি ছক্কায় থামেন ১৭৭ করে।

এরপর কাইল ভেরেইনাকে আউট করে ফাইফার পূরণ করেন তাইজুল। লাঞ্চের পর রায়ান রিকেলটনকে (১২) উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান নাহিদ রানা। বাংলাদেশের পক্ষে ১৯৮ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নেন তাইজুল। অপর উইকেটটি নাহিদের।

Comments

The Daily Star  | English

Army chief meets Khaleda Zia

Chief of Army Staff General Waker-uz-Zaman met BNP Chairperson Khaleda Zia tonight

1h ago