নির্বিচার গ্রেপ্তার ও হত্যা মামলা: আরও সতর্ক হতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে

পূর্বের শাসনামলের সব প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। তারা যে ধরনের অপরাধ করেছেন, সেগুলোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনুন। কিন্তু যথাযথ তথ্যপ্রমাণ ছাড়া হত্যার অভিযোগ নয়। ছবি: এএফপি ফাইল ফটো

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে হাজারো ব্যাপারের মধ্যে অন্যতম ছিল আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ, বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের কারাবন্দি, হয়রানিসহ নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন করা। এক শ্রেণির রাজনৈতিক সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী মহলের কিছু কার্যক্রমের কারণে আবারও আমরা সেই একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছি বলে ধারণা করা যেতে পারে। ঢালাওভাবে 'ফ্যাসিবাদীদের দোসর' তকমা দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ব্যক্তিগত শত্রু ও গণমাধ্যমের একটি অংশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে একটি বিপদজনক, অগণতান্ত্রিক ও আইন অবমাননাকারী ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে।

একজন সাংবাদিক হওয়ায় আমি শুরুতেই গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলছি। সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও রাজশাহীতে অন্তত ১২৯ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৬০ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঢাকায় হত্যা, হত্যা-চেষ্টা, দাঙ্গা ও বেআইনি সমাবেশের অভিযোগে ১২টি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামে ৩৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা-চেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে দুইটি মামলা, বগুড়ায় ২২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে আটটি মামলা, রাজশাহীতে ১৪ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে।

উপরের তথ্যগুলো দেখলে মনে হতে পারে, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই গণমাধ্যমকর্মীর মুখোশ পরিহিত হত্যাকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কী অসাধারণ এক ভাবমূর্তি! আইনের কী যথাযথ ব্যবহার! গণমাধ্যমের প্রতি কতই না সম্মান দেখানো হচ্ছে! এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন চারজন সাংবাদিক। আর বাকিরা গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানির ভয়ে দিন পার করছেন। তারা অফিসেও যেতে পারছেন না, পেশাগত দায়িত্ব পালন তো দূরের কথা। তারা হয় লুকিয়ে আছেন কিংবা 'গৃহবন্দি' হয়ে আছেন। কিন্তু কেন? তাদের অপরাধটা কী?

মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে এসে দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের মার্চ থেকে আমি সাংবাদিকতা শুরু করি এবং ৫২ বছর ধরে এই পেশায় আছি। সাংবাদিকদের মধ্যে সবার আগে আমিই স্বীকার করে নিচ্ছি যে, বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই রাজনীতিকরণের কারণে এই পেশা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও বস্তুনিষ্ঠতার প্রেক্ষাপটে এই খাতের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শেখ হাসিনার আমলে। একদল সাংবাদিক পেশার আড়ালে রাজনৈতিক কর্মীতে পরিণত হয়েছেন, যা সাংবাদিকতার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাদের চাটুকারিতা ও সুস্পষ্ট পক্ষপাতের কারণে নৈতিক সাংবাদিকতার চর্চা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছিল। এমনকি যারা বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে, তারাও ওই গোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেউ কেউ নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের মদদে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, এই সময়ে একদল সাংবাদিক ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। শেখ হাসিনা নিজেই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তার সাবেক পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এবং তিনি হেলিকপ্টারে করে গ্রামের বাড়িতে যেতেন। কিন্তু দুর্নীতির কথা জেনেও তাকে কোনো শাস্তি দেননি সাবেক প্রধানমন্ত্রী, শুধু বরখাস্ত করেছেন। এ থেকে সহজেই অনুমান করা যায়, ওই সাংবাদিকরা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে কী কী করেছেন এবং কত সম্পদের মালিক হয়েছেন এবং বিপরীতে জনগণের কতখানি ঘৃণা কুড়িয়েছেন।

আমাদের অনুরোধ হলো—তারা যে ধরনের অপরাধ করেছেন, যেমন: দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রেস কার্যালয়কে ব্যবহার, আমলাতন্ত্রকে তাদের কার্যসিদ্ধির জন্য চাপ দেওয়া ইত্যাদি, সেগুলোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনুন। কিন্তু যথাযথ তথ্যপ্রমাণ ছাড়া হত্যার অভিযোগ নয়। আমাদের নিজেদের অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাহলে কেন এরকম হচ্ছে?

ডাক্তার, আইনজীবী বা অন্য যেকোনো পেশার মতো সাংবাদিকদের মধ্যেও আওয়ামীপন্থী ও বিএনপিপন্থী—উভয় মতের লোক রয়েছেন। উভয় পক্ষই তাদের দল যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন নির্লজ্জের মতো ক্ষমতায় থাকার সুফল ভোগ করেছে। শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামীপন্থী সাংবাদিকরা এক ধরনের দায়মুক্তির স্বাদ পেয়েছেন এবং ভেবেছেন এই ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা 'কখনোই শেষ হবে না'। যার ফলে তারা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

এখন সেই 'অপর পক্ষ', যারা এতদিন শোষণের শিকার হয়েছিলেন, তারা সামনে এসেছেন। এখন এমন একটি চিত্র দাঁড় করানো হচ্ছে যে, আওয়ামীপন্থী নন, এমন প্রত্যেকটি সাংবাদিককেই এখন ভালো সাংবাদিকের উদাহরণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে এবং আওয়ামীপন্থীদের মতো মন্দ সাংবাদিক যেন গোটা পৃথিবীতে আর নেই! কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার বিষয়টি নজিরবিহীন। এর আগে উভয় পক্ষের কেউই একে অপরের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনেনি।

আমরা আগে যা বলেছি, তা আবারও বলছি—তারা যে ধরনের অপরাধ করেছেন, সেগুলোর জন্যই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করুন। এলোমেলোভাবে তথ্যপ্রমাণ ছাড়া হত্যার অভিযোগ এনে আইনকে প্রহসনে পরিণত করবেন না। এসব কার্যক্রম স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক—উভয় প্রেক্ষাপটেই অন্তর্বর্তী সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। কারণ এগুলো মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সার্বিক প্রেক্ষাপট আরও করুণ। ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৯২ হাজার ৪৮৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা বা অন্যকোনো অপরাধের অভিযোগে অন্তত এক হাজার ৪৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩৯০ সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা, মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মোট এক হাজার ১৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৯ জন শীর্ষ রাজনীতিক কিংবা উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭৭৯ জন। অক্টোবরের প্রথম পাঁচ দিনে গ্রেপ্তারের সংখ্যা সর্বোচ্চ সাত হাজার ১৮-তে (জুলাই থেকে আগস্টের ঘটনাক্রম ও অন্যান্য মামলায়) পৌঁছায় এবং মোট সংখ্যা দাঁড়ায় সাড়ে সাত হাজারে। আগামীতে গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

কীভাবে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার ও রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে, তা কিছু সুনির্দিষ্ট মামলার চিত্র দেখলে ধারণা করা যায়। ৭ অক্টোবর ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাকিব হাসান (২২) ও জাহাঙ্গীর আলম (৫০) নামের দুই ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিহত হন। দুইটি মামলার এজাহারে অবিকল একই কথা লেখা হয়েছে, শুধু নিহতের নাম-ঠিকানা আলাদা। দুটি মামলার বাদী আবু বকর (৫৫) নিজেকে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন শ্রমিক দলের কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন। ২ সেপ্টেম্বর তিনিই এই দুই মামলা দায়ের করেন এবং উভয় মামলায় ৪৪২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের এই ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। সাকিব ও জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যদের এই মামলার বিষয় জানানো হলে তারা বিস্মিত হন।

নিহত জাহাঙ্গীরের মেয়ে বলেন, 'আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি, সবার আগে তো আমারই মামলা দায়ের করা উচিত। এ ছাড়া, এই ব্যক্তি আমাদের মহল্লার কয়েকশ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন, যার ফলে কোনো কারণ ছাড়াই তারা আমাদের প্রতি মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন।'

তিনি আরও জানান, মামলা দায়েরকারী আবু বকর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন। তার খেয়াল-খুশিমতো মানুষের ক্ষতি করতে তিনি এই কাজ করেছেন। 'আমি আমার বাবার মৃত্যুর বিচার চাই এবং একইসঙ্গে যে ব্যক্তি আমাদেরকে না জানিয়ে এই মামলা দায়ের করেছে, তার শাস্তি হোক, এটাও চাই।'

সাকিবের বাবা মোর্তোজা আলমও জানান, তিনি এই মামলার বিষয়ে জানতে পেরে বিস্মিত হয়েছেন। 'পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করেছে। কিন্তু এই মামলা হয়েছে রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে', বলেন তিনি।

ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, সুমন শিকদার (৩১), হাফিজুল শিকদার (২৮) ও সোহাগ মিয়াকে (৩০) হত্যার অভিযোগে ২০ ও ২১ আগস্ট বাড্ডা থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনটি মামলার ক্ষেত্রেই এজাহারের কথাবার্তা হুবহু এক এবং ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় হত্যার ঘটনা ঘটলেও ১৭৮ জন আসামিকে তিন মামলাতেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।

৫ আগস্ট ঢাকায় লাভলু মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এক মাস পর তার চাচাত ভাই দুখু মিয়া, যিনি পেশায় রিকশাচালক, উত্তরা (পূর্ব) থানায় ২২১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ২১০ জনের বাড়িই রংপুর। নিহত লাভলু ও বাদী দুখু মিয়ার গ্রামের বাড়িও রংপুর এবং অভিযুক্তদের বেশিরভাগই সেখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী।

ডেইলি স্টার আরও অন্তত পাঁচটি মামলার খোঁজ পেয়েছে, যেখানে হত্যাকাণ্ড ঢাকায় ঘটলেও শত শত অভিযুক্তদের প্রায় সবাই নিহতদের গ্রামের বাড়ির এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।

২০ জুলাই মোহাম্মাদ হাবিব (৪৫) পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের গুলিতে নিহত হন। তার স্ত্রী ও চার সন্তানের মা আয়েশা ২৮ আগস্ট ৫৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, যাদের ৫০ জনই কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাসিন্দা। আয়েশার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'আমি শুধু অভিযোগপত্রে সই করেছি। কাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। আমার স্বামীর জন্য ন্যায়বিচারই আমার একমাত্র চাওয়া।' জামালপুরের বকশিগঞ্জের আনোয়ার হোসেন আয়নালের ভাই ফজলুল করিম ৫ আগস্ট নিহত হন। তার দায়ের করা হত্যা মামলায় ৩৯ জনের নাম আছে, যাদের মধ্যে ২৪ জনই তার গ্রামের বাড়ির বাসিন্দা।

মামলার দুর্বল ভিত্তি, প্রতিটিতে গড়ে ২০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা এবং মামলাগুলোতে নিহতদের গ্রামের বাড়ির এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রবণতা থেকে এই ইঙ্গিতই পাওয়া যায় যে, মামলাগুলো রাজনৈতিকভাবে করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মত না নিয়েই এগুলো ঘটছে। অনেকক্ষেত্রে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে অথবা বলা হচ্ছে, যদি তাদের কথামতো কাজ করা হয়, তাহলে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।

গতকাল ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশ সুপার ও মেট্রোপলিটন কমিশনারদের আরও সতর্ক থাকতে ও জুলাই-আগস্টের সহিংসতায় জড়িতদের গ্রেপ্তার বাড়াতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খুলনা রেঞ্জ পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদেরকে ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে।' নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক কর্মকর্তা বলেন, 'নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ, দলটির অঙ্গ-সংগঠন, সমর্থক ও নেতাকর্মীদের প্রতিদিনই গ্রেপ্তার করার কথা বলা হয়েছে।'

উপরোল্লিখিত চিত্র থেকে আইনের অপব্যবহারের বিষয়টি বোঝা যায়। খুব শিগগির, যদি ইতোমধ্যে না হয়ে থাকে—চাঁদাবাজি, ঘুষ ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির উৎসে পরিণত হবে এটি। শেখ হাসিনার আমলেও পুলিশ একই কাজ করেছে।

আমরা আবারও গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাই, পূর্বের শাসনামলের সব প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু একজন নির্দোষ মানুষও যেন শাস্তি না পায়। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মূল ভিত্তি মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার। দয়া করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন না যেন এগুলোর লঙ্ঘন অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। 'গরিবের ব্যাংকার' হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে সুখ্যাতি আছে, একইভাবে মানবাধিকারের ধারক ও বাহক হিসেবেও তার সুনাম আছে। তার অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামান্যতম কোনো অভিযোগও না আসে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

মাহফুজ আনাম: সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Attack on Bangladesh mission in Agartala

India must protect Bangladesh's diplomatic missions

Hostile rhetoric, mobilisations by Hindutva groups fuelling unrest

18h ago