ঢাবিতে পিটিয়ে হত্যা

মা-বাবা-ভাইয়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত তোফাজ্জল

বরগুনার পাথরঘাটার চর দুয়ানী গ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে তোফাজ্জলকে দাফন করা হয়। 
বরগুনার পাথরঘাটার চর দুয়ানী গ্রামে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা মাঠে তোফাজ্জলের জানাজা হয়। ইনসেটে তোফাজ্জল। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল ওরফে তোফাজ্জলকে বরগুনায় তার মা, বাবা ও বড় ভাইয়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। 

আজ শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পাথরঘাটার চর দুয়ানী গ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। 

গত বুধবার রাতে শিক্ষার্থীরা চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে ফজলুল হক হলের ভেতর আটকে মারধর করে। 

হল কর্তৃপক্ষ তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করার পর তাকে পুলিশের পরামর্শে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে তার মরদেহ বরগুনায় নেওয়া হয়।

আজ সকালে তোফাজ্জলের জানাজায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। শোকার্ত এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

জানাজায় অংশ নেওয়া মাওলানা নুরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে ঘুমাতে পারিনি, শুধু চোখের সামনে ভাত খাবার দৃশ্য ভেসে উঠেছে। তোফাজ্জল আমার নিকট আত্মীয় না, তবুও ওর জন্য মায়া লাগে। এমন একটা কাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করতে পারল, বিশ্বাস করতে পারছি না।'

তোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক মিলন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্কুলজীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী এবং শান্ত স্বভাবের ছিল। সে সবসময় শিক্ষকদের ও বড়দের সম্মান করত। আমরা তার হত্যাকারীদের বিচার চাই।'

তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া বলেন, 'আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।'

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি প্রাথমিকভাবে এই অপরাধের সঙ্গে একাধিক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ পেয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই তদন্ত কমিটি ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।

ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছেন। তারা হলেন—মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।

Comments

The Daily Star  | English

Army chief mentions interim govt time frame for the first time

"If you ask me, then I will say 18 months should be the time frame by which we should enter into a democratic process," he said

2h ago