'সামাজিক সংকটে ইবরাহীম খাঁ চর্চা জরুরি' 

ইবরাহীম খাঁর ১৩০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রোববার আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন মোসাদ্দেক হাবিব, ছবি আবিদ আজম

গণ অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ এখন নতুন স্বপ্ন পূরণের পথে হাঁটছে। সকলের মতো আমরাও আশাবাদী হতে চাই এইভেবে যে, এবার নিশ্চয় আশা পূরণ হবে। তার জন্য জরুরি ইবরাহীম খাঁদের মানুষদের নিয়ে বেশি বেশি চর্চা করা। সামাজিক সংকটে সোনার মানুষদের চিন্তা আমাদের প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে'

প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিধ প্রিন্সিপাল, একুশে পদকপ্রাপ্ত ইবরাহীম খাঁর ১৩০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল রোববার এক আলোচনা অনুষ্ঠান হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হোসেন মিলনায়তনে। বক্তারা উল্লেখিত কথাগুলো বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ ছিলেন একজন পরিপূর্ণ মানবদরদি মানুষ। মানবজাতির সবচেয়ে বড় মহিমা হলো সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠা। তিনি নিজে যেমন বড় মাপের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন, তেমনি সারা জীবন মানুষ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাঁর শিক্ষকতায়, তাঁর রচনায় সব সময় মানুষের মানবতার বিষয়টিই প্রধান হয়ে উঠেছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন ইবরাহীম খাঁ ফাউন্ডেশন। আলোচক হিসেবে ছিলেন ইবরাহীম খাঁ রচনাবলি সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ড. কাজল রশীদ শাহীন ও কবি ইমরান মাহফুজ।

মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, সমকালীন অসম সন্ধিপাতন ও নানারূপ প্রতিকূলতায় নিজেকে সদাজাগ্রত রেখে নিরলসভাবে মুসলিম সমাজকে জাগিয়ে তুলেছেন ইবরাহীম খাঁ। বাঙালী মুসলমান সমাজে ইবরাহীম খাঁর অবস্থান বিবেচনায় মনে রাখতে হবে তিনি কোন ব্যক্তি বিশেষ নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান।

মোহাম্মদ আজম বলেন, তিনি তার লেখায় সমাজ মানুষের সূক্ষ্ম অনুভুতি প্রকাশ করেছেন। তাঁর অনেক সিদ্ধান্তই আজ আর হয়তো কাজে আসবে না। কিন্তু জ্ঞানতত্ত্ব ও পদ্ধতির দিক থেকে পাঠ করলে আমাদের বর্তমান সমাজ-বীক্ষণ ও রাজনৈতিকতার জন্য-যে তা অন্তর্দৃষ্টির উৎস হয়ে উঠতে পারে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই।

কাজল রশীদ শাহীন বলেন, ইবরাহীম খাঁ বড়মিঞাকে নির্মাণ করতে গিয়ে বলেছেন স্বদেশী আন্দোলন করেছেন, খেলাফতে গিয়েছেন, পুলিশ মেরেছেন, পুলিশের মার খেয়েছেন, জেলে গিয়েছেন। প্রসঙ্গে গণ অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ এখন নতুন স্বপ্ন পূরণের পথে হাঁটছে। সকলের মতো আমরাও আশাবাদী হতে চাই এইভেবে যে, এবার নিশ্চয় আশা পূরণ হবে।

মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, মানবতার ফেরিওয়ালা মানুষটি অনেকক্ষেত্রেই এখন উপেক্ষিত। তাই তো মাঝে মধ্যে পত্রিকায় শিরোনাম হয়, তাকে নিয়ে আর আগের মত চর্চা হয় না। আমরা ভুলেতে বসেছি? সঙ্গত প্রশ্ন- হীরের টুকরোটিকে আমরা তাহলে কোথায় রাখলাম?

অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বুক ক্লাবের সভাপতি মাসউদ মান্নান। আলোচনা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও ইমরান মাহফুজ সম্পাদিত ইবরাহীম খাঁ কালজয়ী প্রিন্সিপাল এবং তাঁর কন্যা প্রিন্সিপাল খালেদা হাবিবের লেখা স্মৃতিতে শ্রুতিতে আমার বাবা প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ নামে প্রকাশিত দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। স্বাগত ভাষণ দেন মোসাদ্দেক হাবিব, সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক আবিদ আজম।  

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

3h ago