রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা আসবে তাদেরকেই চাপে রাখতে হবে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং ফ্যাসিবাদ রুখতে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে 'গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি'।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ক্যাফেটেরিয়ায় এক সভা থেকে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়।
কী কারণে, কোন পরিপ্রেক্ষিতে এই কমিটি গঠন করা হলো, তা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সময়ের গুরুত্বপূর্ণ এই চিন্তকের সঙ্গে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে আমরা একটা ভয়াবহতা থেকে বেরিয়ে এসেছি। একে মানুষের মুক্তি বলতে পারি। এই বিপ্লবের শক্তিকে সবাই মিলে ধরে রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে জারি রাখতে হবে জনমত।'
সময়ের প্রয়োজনে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, 'রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আসবে তাদেরকেই চাপে রাখতে হবে। অতীতে মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অর্জন ব্যর্থ হয়েছে। এবারের গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।'
প্রবীণ এই লেখকের ভাষ্য, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আওয়ামী সরকারের আমলে হওয়া সব গুম-খুনের বিচার করতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে আহতদের। জরুরিভাবে কাজ করতে হবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে। যথার্থ পরিবেশ তৈরি করে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। কারণ গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা চাইলে গণতান্ত্রিক সরকারই দরকার।'
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ওপর আবার যেন কোনো অশুভ শক্তি ভর না করে, তার জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি কাজ করবে বলেও মন্তব্য করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বলেন, 'এই কমিটি জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবে, কথা বলবে। জনমতের তোয়াক্কা যারা করবে না, তাদের অবস্থা স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের মতোই হবে।'
সমাজ রূপান্তরকামী এ শিক্ষাবিদের ভাষ্য, 'মনে রাখতে হবে—মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব যেমন আছে, তেমনি রয়েছে পশুত্ব। পশুত্বই বরং অধিক ক্ষমতাবান। তাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মনুষ্যত্বকে বিকশিত করতে চাইলে সমবেত, সংঘবদ্ধ উদ্যোগের প্রয়োজন। সংঘবদ্ধ উদ্যোগে, সচেতনতায় টিকে থাকবে গণতন্ত্র। রক্ষা হবে মানুষের অধিকার।'
Comments