ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক: খুবই ধীরগতিতে চলছে যানবাহন

ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল শুরু হয়েছে। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

যানজটে টানা তিন দিন পুরোপুরি স্থবির থাকার পর অবশেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

মহাসড়কে মহিপাল, রামপুরসহ একাধিক অংশে গিয়ে আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে দেখা যায়, উভয়মুখী লেনে গাড়িগুলো ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

সকাল থেকেই বন্যার পানির স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের একাধিক অংশে সেনাবাহিনীর ২৬ ইসিবির সহযোগিতায় সড়ক সংস্কারের কাজ করছে সড়ক ও সেতু বিভাগ।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক। ফলে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে মহাসড়কের লালপোল ও লেমুয়া অংশে ফাটলে সৃষ্টি হয় একাধিক বিশাল গর্তের। একইসঙ্গে ভেঙে পড়েছিল মহাসড়কের সড়ক বাঁধ।

আজ সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এই অংশগুলো ঠিক করছেন সেনাসদস্যরা।

গত বুধবার বগুড়া থেকে রওনা দেওয়া গ্যাসবাহী ট্যাংকারের হেলপার আব্দুল মালেক জানান, এখন পর্যন্ত তিনি মহাসড়কের ফেনীর রামপুর অংশ পর্যন্ত আসতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, 'চট্টগ্রাম থেকে গ্যাস নিয়ে বগুড়া গিয়ে বুধবার চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা দেই। বৃহস্পতিবার ভোরে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত আসি। এরপর থেকে গত চার দিন ধরে যানজটে বসে আছি।'

গত তিন দিনের যানজটে গাড়ি নিয়ে কোনোভাবেই এগোতে পারেননি তারা।

আব্দুল মালেক বলেন, 'এক হাত যে আগাবো, সেই সুযোগও নেই। রাতে দুদিন ডাকাতির খবর পেয়ে ঘুমাতেই পারিনি। দিনে গাড়িতে ঘুমাইছি, বন্যার পানিতেই গোসল করেছি। খাবার কিনতে হইছে ডাবল টাকা দিয়ে।'

মহাসড়কের মাইজবাড়িয়া এলাকায় কথা হয় লরিচালক সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'এখন তো তাও আগাইতাছে। গত ছয় ঘণ্টায় দুই কিলোমিটারের মতো আগাইছি। অথচ ফেনীর রেলগেট ফ্লাইওভারে এক জায়গাতেই তিনদিন খাড়াইয়া ছিলাম। কী যে কষ্ট, কাউরে বুঝাইবার পারমু না।'

উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির স্রোত ও টানা কয়েকদিনের বর্ষণে গত বুধবার থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একাধিক অংশে তীব্র স্রোতে সড়কবাঁধ ভেঙে পড়ে। রামপুর থেকে লেমুয়া পর্যন্ত মহাসড়কের কোথাও কোথাও পানির উচ্চতা ছিল হাঁটু ও বুক সমান।

বন্যার পানির কারণে সৃষ্ট এই তীব্র যানজটে বিপদে পড়েন লাখো মানুষ। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছিলেন বৃদ্ধ নারী ও শিশুরা।

শুক্রবার মহাসড়কের একাধিক স্থানে দেখা গিয়েছিল, বন্যার পানির কারণে অনেকে নৌকা, ভেলায় বা টায়ার টিউবে করে শিশুদের ভাসিয়ে পানির মধ্যে যাতায়াত করছিলেন।

মহাসড়ক স্থবির হয়ে পড়ায় অনেকেই চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত হাঁটু ও বুক সমান পানি ডিঙ্গিয়ে হেঁটে এসেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

JnU protests called off

Students and teachers of Jagannath University called off their protest last night after receiving assurances from the government that their demands would be met.

3h ago