গুলিবিদ্ধ ইমনের মৃত্যুতে শেষ হয়ে গেল আরও এক দরিদ্র পরিবারের স্বপ্ন
দুই বছর আগে রিকশাচালক বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল কলেজশিক্ষার্থী ইমনকে। টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট তিন ভাইবোনের পড়ার খরচ জোগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিল ছেলেটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন ইমন।
আজ রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সেইসঙ্গে মৃত্যু হলো দরিদ্র পরিবারটির সব স্বপ্ন।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নে বাড়ি ইমনের। পার্শ্ববর্তী ভূঞাপুর উপজেলার মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেছিল।
গত ৪ আগস্ট পেটে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ইমনকে প্রথমে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতাল এবং পরে উত্তরার লেকভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইমনের পরিবার জানায়, ওই হাসপাতালে দুই দিনে খরচ হয় লাখ টাকা। ধারদেনা করে অনেক কষ্টে ওই টাকা জোগাড় করে পরিবার। এরপর ৬ আগস্ট থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালটির আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল ইমন।
রোববার তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় ইমনের মা রিনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। অশ্রুভরা কণ্ঠে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংসারটার হাল ধরেছিল ইমন। পড়াশোনা আর সারাদিন টিউশনির পাশাপাশি ছোট ভাইবোনগুলোর পড়ার খরচও জোগাতো। এত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও আমাদের একটি স্বপ্ন ছিল। ইমন নেই, তাই আমাদের স্বপ্নও শেষ।'
আজ দুপুর ১২টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইমনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
Comments