গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

দেইর আল বালাহ অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি
দেইর আল বালাহ অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের জানাজায় অংশ নিচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি

১০ মাসের নিরবচ্ছিন্ন ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজার বেশিরভাগ অংশ। এরই মাঝে চলমান সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

গাজায় নিহতের সংখ্যা গণনা ও প্রকাশের দায়িত্বে আছে মূলত হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দৈনিক হতাহতের প্রকাশিত সংখ্যা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে বাইডেন প্রশাসনও এ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তবে জাতিসংঘ বলেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সংখ্যাটি নির্ভরযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোও এর সঙ্গে একমত।

এএফপির দুই সাংবাদিক মন্ত্রণালয়ের ডাটাবেসে নিহতের সংখ্যা যোগ করার প্রক্রিয়াটি সরেজমিনে দেখেছেন।

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলার পর আবাসিক ভবনে আগুন ধরে যায়। ছবি: রয়টার্স (১১ আগস্ট, ২০২৪)
গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলার পর আবাসিক ভবনে আগুন ধরে যায়। ছবি: রয়টার্স (১১ আগস্ট, ২০২৪)

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা প্রথমে আত্মীয় বা বন্ধুদের কাছে নিহতের ছবি বা ব্যবহার্য বস্তু পাঠিয়ে মরদেহের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

তারপর নিহতের নাম, লিঙ্গ, জন্মদিন ও আইডি নাম্বার ডাটাবেসে প্রবেশ করানো হয়।

যদি মরদেহ শনাক্ত করা না যায়, বা এর কোনো দাবীদার খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে যতটুকু তথ্য পাওয়া যায়, তা যোগ করে একটি 'সংখ্যা' হিসেবে তা ডাটাবেসে যুক্ত করা হয়।

পরবর্তীতে পরিচয় খুঁজে পেতে সহায়ক হতে পারে এমন সব চিহ্ন, জন্মদাগ বা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসগুলোর বিস্তারিত লিখে রাখা হয় এবং ছবি তুলে সংরক্ষণ করা হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতের সংখ্যা নিরূপণের প্রক্রিয়াটি এক বিবৃতিতে বিস্তৃত আকারে জানিয়েছে।

হামাস সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিহত ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত তথ্য ও আইডি সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে ডাটাবেসে যোগ করা হয়।

এরপর দিনের শেষে এই ডাটা মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রিতে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়া প্রতিদিনই চলমান থাকে।

বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ক্ষেত্রে একটি ফর্মে তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এই তথ্য কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রিতে যোগ করা হয়।

তারপর মন্ত্রণালয়ের তথ্যকেন্দ্র এই এন্ট্রিগুলো যাচাই-বাছাই করে, যাতে 'একই মানুষের নাম যেন দুইবার যোগ না হয় বা অন্য কোনো ভুল যাতে না থাকে।'

এরপর এই তথ্যগুলো ডাটাবেসে সেভ করা হয়।

গাজার বাসিন্দাদেরকেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানিয়েছে তাদের পরিবারের কেউ নিহত হলে একটি সুনির্দিষ্ট সরকারি ওয়েবসাইটে সেই তথ্য যোগ করার জন্য। এরপর সেই তথ্য মন্ত্রণালয় যাচাই করে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও গাজার হামাস সরকার, উভয়ের কাছেই জবাবদিহি করে থাকে।

ইসরায়েলি হামলায় নাবলুসে নিহত এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে যাচ্ছেন নিকটজনরা। ছবি: রয়টার্স (১৪ আগস্ট, ২০২৪)
ইসরায়েলি হামলায় নাবলুসে নিহত এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে যাচ্ছেন নিকটজনরা। ছবি: রয়টার্স (১৪ আগস্ট, ২০২৪)

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় এক হাজার ১৯৭ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।

হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন মানুষ, যাদের ১১১ জন এখনো গাজায় আটক আছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জিম্মিদের মধ্যে ৩৯ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন।

সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার ও প্রতিশোধমূলক গণহত্যা শুরু করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ৯২ হাজার ৪০০ মানুষ। হতাহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Comments

The Daily Star  | English

Thailand sees growing influx of patients from Bangladesh

Bangladeshi patients searching for better healthcare than that available at home are increasingly travelling to Thailand instead of India as the neighbouring country is limiting visa issuances for Bangladeshi nationals.

12h ago